মিনাক্ষী মুখোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
রাজ্যের শাসকদল তৃণমূলের বিরুদ্ধে যখন উঠতে-বসতে দুর্নীতির অভিযোগ তুলছে বামেরা, তখন ‘আপনি আচরি ধর্ম’ পালন করার সিদ্ধান্ত নিল সিপিএমের যুব সংগঠন ডিওয়াইএফআই। দলের যুব সম্পাদক মিনাক্ষী মুখোপাধ্যায় মঙ্গলবার এই কথা ঘোষণা করলেন।
রাজ্য জুড়ে ইনসাফ যাত্রা ও ব্রিগেডের সভার জন্য এক লক্ষ পরিবারের কাছে তাঁরা কৌটো পৌঁছে দিয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন মিনাক্ষী। পাশাপাশি, ডিজিটাল অর্থসাহায্যের জন্য প্রকাশ করা হয়েছিল কিউআর কোডও। সেই সব হিসাব জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে বলে জানিয়েছেন সিপিএমের নতুন ‘মুখ’ মিনাক্ষী। তাঁর বক্তব্য, ‘‘রাজ্যে যখন নিয়োগ থেকে শুরু করে সর্বক্ষেত্রে দুর্নীতি হচ্ছে, তখন রাজনৈতিক স্বচ্ছতার দায়বদ্ধতা থেকে আমরা এই তালিকা প্রকাশ করব।’’ আগামী ৭ জানুয়ারি, রবিবার ব্রিগেডে সমাবেশের ডাক দিয়েছে সিপিএমের যুব সংগঠন। সেই মঞ্চ থেকেই এই তালিকা প্রকাশ করা হবে কি না, তা অবশ্য স্পষ্ট নয়।
ক্ষমতায় থাকার সময়েও সিপিএম দলীয় তহবিলের জন্য সাধারণ মানুষের কাছ থেকে অর্থসংগ্রহ করত। যদিও সেটাই তখন মূল ছিল এমন নয়। কারণ, ক্ষমতায় থাকলে যা যা সুবিধা পাওয়া যায়, সে সব সিপিএম পেত। এমনিতে দল বা গণসংগঠনের সম্মেলন হলে সিপিএমে অভ্যর্থনা কমিটি গঠন করে। সেই সম্মেলনের খরচ অভ্যর্থনা কমিটি পেশও করে। কিন্তু কোনও দীর্ঘ পদযাত্রা বা ব্রিগেডে সভা হলে হিসাব পেশ করার বিষয়টি সাম্প্রতিক সময়ে সিপিএম বা কোনও বাম গণসংগঠনের ক্ষেত্রেই দেখা যায়নি। সে দিক থেকে মিনাক্ষীদের এই ঘোষণা ‘তাৎপর্যপূর্ণ’।
প্রসঙ্গত, ব্রিগেডের অনুমতি পাওয়ার বিষয়টি কয়েক দিন আগে পর্যন্তও ঝুলে ছিল। তবে গত সপ্তাহে সিপিএম সূত্রে বলা হয়েছিল, ফোর্ট উইলিয়ামের তরফে ‘ইতিবাচক সাড়া’ মিলেছে। মঙ্গলবার মিনাক্ষী জানিয়ে দিলেন, প্রয়োজনীয় অনুমতি মিলেছে। রবিবার সভা হবে ব্রিগেডেই। যদিও অনুমতি না পেলে কী হবে, সেই বিকল্প পন্থাও তৈরি রেখেছিল সিপিএম। মঙ্গলবার মিনাক্ষী জানিয়েছেন, রবিবার, ৭ তারিখে সাতটি এলাকা থেকে মিছিল হবে। হাওড়া ও শিয়ালদহ স্টেশন থেকে দু’টি বড় মিছিল ঢুকবে ব্রিগেডে। তা ছাড়া খিদিরপুর মাজার, হাজরা মোড়, সুবোধ মল্লিক স্কোয়্যার, সেন্ট্রাল মেট্রো স্টেশন এবং পার্ক সার্কাস থেকে আরও পাঁচটি মিছিল যাবে ব্রিগেডের অভিমুখে।
ময়দানে সমাবেশ মানেই পরিবেশে দূষণের বিষয় থাকে। এ নিয়ে অতীতে মামলাও হয়েছে অনেক। সিপিএমের যুব সংগঠনের তরফে বলা হয়েছে, সভার পর ময়দানের পরিচ্ছন্নতার দিকটিও তারাই দেখবে। যুব সংগঠনের ডাকে ব্রিগেড হলেও গোটা সিপিএমই জমায়েত করবে— এর মধ্যে কোনও লুকোছাপা নেই। লোকসভার আগে ভোট বাড়াতে মরিয়া সিপিএম নতুন বছরের প্রথম রবিবারেই ভিড় দেখিয়ে শক্তি প্রদর্শন করতে চায়। কিন্তু ভোটবাক্সে তার কতটা প্রতিফলন ঘটবে, তার জন্য অপেক্ষা করতে হবে আরও কয়েক মাস।