ডিওয়াইএফআই-এর ১১তম সর্বভারতীয় সম্মেলনে শোভাযাত্রা। জোড়াসাঁকো থেকে রবীন্দ্র সদনের পথে। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক
দলের সব গণসংগঠনের শীর্ষ পদেই এখন রয়েছে বাঙালি মুখ। সম্ভবত সেই ধারাই অব্যাহত থাকতে চলেছে যুব সিপিএমের আসন্ন সর্বভারতীয় সম্মেলনে। দলীয় সূত্রের খবর, বড় কোনও অঘটন না ঘটলে ডিওয়াইএফআইয়ের পরবর্তী সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক পদে ফের আসতে চলেছেন বাংলারই এক যুব নেতা।
দীর্ঘ ২৭ বছর পরে বাংলায় এ বার ডিওয়াইএফআইয়ের সর্বভারতীয় সম্মেলন হতে চলেছে। বিধাননগরের পূর্বাঞ্চলীয় সংস্কৃতি কেন্দ্রে (ইজ়েডসিসি) আগামী ১২ থেকে ১৫ মে চলবে একাদশতম যুব সম্মেলন। সিপিএম সূত্রের ইঙ্গিত, যুব সংগঠনের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে এ বার বিদায় নিতে চলেছেন অভয় মুখোপাধ্যায়। বাঁকুড়ার অভয়ের জায়গায় নতুন সাধারণ সম্পাদক হিসেবে সকলের আগে রয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার হিমঘ্নরাজ ভট্টাচার্যের নাম। কেরলের এ এ রহিম কয়েক মাস আগে ডিওয়াইএফআইয়ের সর্বভারতীয় সভাপতি হয়েছেন। এখন তিনি রাজ্যসভার সাংসদও। যুব সভাপতি পদে এই মুহূর্তে আর রদবদলের সম্ভাবনা ক্ষীণ বলেই দলীয় সূত্রের খবর।
সদস্য-সংখ্যার নিরিখে এবং সাংগঠনিক শক্তিতে বাংলার সিপিএম আগের চেয়ে অনেক পিছিয়ে গেলেও দলের গণ-ফ্রন্টে তাদের প্রভাব এখনও অটুট। ছাত্র, যুব, শ্রমিক, কৃষক ও মহিলা সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক পদে এখন রয়েছেন বাঙালি নেতা-নেত্রীরাই। এসএফআইয়ে ময়ুখ বিশ্বাস, সিটুতে তপন সেন, কৃষক সভায় হান্নান মোল্লা এবং গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতিতে মালিনী ভট্টাচার্য ওই দায়িত্ব সামলাচ্ছেন। সেই তালিকাতেই ডিওয়াইএফআইয়ের সাধারণ সম্পাদক পদে বাংলার এক নেতার বদলে যোগ হতে পারে এই রাজ্যেরই আর এক তরুণ মুখ।
যাদবপুর এলাকায় এসএফআই এবং ডিওয়াইএফআইয়ের সংগঠনের কাজ করে হিমঘ্নরাজ দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার যুব সম্পাদক হয়েছিলেন। এখন তিনি ডিওয়াইএফআইয়ের কেন্দ্রীয় সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য। পড়াশোনা কম্পিউটার অ্যাপিক্লেশন নিয়ে। মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়দের আপাতত রাজ্যেই রেখে তাঁকে কেন্দ্রীয় দায়িত্বে পাঠাতে চায় সিপিএম।
যুব সম্মেলন উপলক্ষে কলকাতার রানি রাসমণি অ্যাভিনিউয়ে ১২ তারিখ সমাবেশে থাকার কথা সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরির। সম্মেলন উপলক্ষে নানা রকমের অভিনব উদ্যোগও অব্যাহত। ডিওয়াইএফআইয়ের প্রাক্তন ও বর্তমান নেতা-কর্মীদের নিয়ে যেমন রবিবার জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ি থেকে রবীন্দ্র সদন পর্যন্ত মিছিলের আয়োজন করা হয়েছিল। সংগঠনের পুরনো ও বর্তমান প্রজন্মের মধ্যে মেলবন্ধনের বার্তা দিতেই এই শোভাযাত্রার আয়োজন বলে ডিওয়াইএফআইয়ের রাজ্য সম্পাদক মীনাক্ষীর বক্তব্য। সম্মেলন উপলক্ষে রক্তদানের পাশাপাশি ফুটবল ম্যাচ, ম্যারাথন দৌড়-সহ নানা ধরনের খেলাধুলোর আসরের আয়োজনও চলছে। তারই সঙ্গে চলছে গণ-সংগ্রহ অভিযান। বহু দিন পরে সর্বভারতীয় সম্মেলন আয়োজনের ভার পেয়ে তা ‘সফল’ করতে রাস্তায় নেমে মানুষের কাছে চাঁদা তুলছেন ডিওয়াইএফআই কর্মীরা। সংগঠন সূত্রের খবর, বামেদের ভাঙা বাজারেও অর্থ সংগ্রহ হচ্ছে ভালই!