নবান্ন। — ফাইল চিত্র।
মুখ্যমন্ত্রীর জেলা সফরের সময় বিভিন্ন বিভাগগুলিকে বিশেষ সতর্ক থাকার বার্তা গেল নবান্ন থেকে। নানা কিসিমের সেই সতর্কতার শীর্ষে রয়েছে— বন্যপ্রাণীর হানায় গ্রামাঞ্চলে যেন প্রাণহানির ঘটনা না ঘটে।
বছর কয়েক আগে দক্ষিণবঙ্গের দু’টি জেলায় গিয়ে প্রশাসনিক বৈঠকে হাতির উপদ্রব নিয়ে বনকর্তাদের বেজায় ধমক দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে না ঘটে তাই এই আগাম সতর্কীকরণ।
বন বিভাগের বিভিন্ন ডিভিশন জানাচ্ছে, মুখ্যমন্ত্রীর সফরের সময়ে বরাবরই বিশেষ নজরদারি থাকে। বিভিন্ন বনাঞ্চলের রেঞ্জ অফিসারদের সতর্ক করা হয়। হাতি বা অন্যান্য বন্য পশুর গতিবিধি নজরে রাখতে বনবস্তি বা অরণ্য সংলগ্ন গ্রামীণ বাসিন্দাদের নিয়ে তৈরি বন সংরক্ষণ কমিটিগুলিকেও (ফরেস্ট প্রোটেকশন কমিটি) সতর্ক থাকতে বলাই রীতি।
তবে তার ফস্কা-গেরোও রয়েছে! দক্ষিণবঙ্গের এক বনাধিকারিক বলেন, “নির্দেশ তো পেলাম। কিন্তু তা কার্যকর করতে গেলে তো বরাদ্দ লাগে। টাকা কোথায়? আগে, নন-বাজেটারি ফান্ড থেকে ওই টাকা প্রতিটি বিভাগে বরাদ্দ করা হত। সেই টাকায় হাতি তাড়ানোর হুলা পার্টি তৈরি রাখা, পটকা কেনা, গ্রামে প্রচার চালানো হত। এখন দফতরে গাড়ির তেল কেনার টাকাই মেলে না। জঙ্গলে দাবানল লাগলে আগুন নেভানোর টাকা জোগাড় করতেই ঘাম ছুটে যায়!” উত্তরবঙ্গের এক বনকর্তার অভিযোগ, “বন্যপ্রাণীর হানায় প্রাণহানি ঘটলে আগে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়েই ক্ষতিপূরণের টাকা দিয়ে গ্রামবাসীকে শান্ত করতাম। এখন তো সে টাকা পেতেও মাস ঘুরে যায়।”
বন দফতরের খবর, উত্তরবঙ্গে হাতির চলাচল সম্বৎসর থাকে। থাকে চিতাবাঘের লোকালয়ে নিত্য হানার ঘটনাও। দক্ষিণবঙ্গের পশ্চিম মেদিনীপুরে দু’টি ডিভিশনে এখন অন্তত ৪২টি হাতি রয়েছে। বাঁকুড়া এবং ঝাড়গ্রামও দপিয়ে বেড়াচ্ছে অন্তত ৮০টি হাতির একটি দল। দলমা পাহাড় থেকে নেমে আসা হস্তিযূথের আনাগোনা তো আছেই। তাদের অনেকেই এখন বর্ষা শেষে আর দলমা পাহাড়ে ফিরে না গিয়ে জেলাতেই স্থায়ী আস্তানা গাড়ে।