প্রতীকী ছবি।
চলতি পৌষেই একটি পশ্চিমী ঝঞ্ঝার দাপটে দক্ষিণবঙ্গের আকাশ শুধু মেঘলাই হয়নি, বৃষ্টিও নেমেছিল। বরফে ঢেকে গিয়েছিল উত্তরের পাহাড়ি এলাকা। আলিপুর আবহাওয়া দফতর শুক্রবার জানিয়েছে, ফের রাজ্যে হানা দিতে উদ্যত হয়েছে নতুন একটি পশ্চিমী ঝঞ্ঝা। তার ধাক্কায় ১১ থেকে ১৪ জানুয়ারি উত্তর এবং দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি হতে পারে। তাতে শীতের দফারফা হওয়ারই আশঙ্কা। ভরা পৌষের সেই বৃষ্টিতে ক্ষতি হতে পারে মাঠের ফসলেরও।
আবহাওয়া দফতর সূত্রের খবর, ১১ জানুয়ারি, মঙ্গলবার গাঙ্গেয় বঙ্গের বিভিন্ন জেলায় হালকা বৃষ্টি হবে। বুধবার থেকে শুক্রবার পর্যন্ত হালকা বা মাঝারি বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতেও ওই দু’দিন হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে। বৃষ্টি থেকে বাঁচাতে পাকা ফসল মঙ্গলবারের মধ্যে তুলে ফেলতে বলা হয়েছে কৃষকদের। সেই সঙ্গে বলা হয়েছে, ওই সময়ে অযথা সার বা কীটনাশক প্রয়োগ না-করাই ভাল। কারণ, তা বৃষ্টিতে ধুয়ে যেতে পারে।
পশ্চিমী ঝঞ্ঝা হল ভূমধ্যসাগরীয় এলাকা থেকে বয়ে আসা ঠান্ডা এবং ভারী বায়ু। কাশ্মীর দিয়ে তা ভারতে ঢোকে এবং তার পরে মধ্য ভারত দিয়ে পূর্ব ভারতে বয়ে যায় কিংবা কখনও কখনও উত্তরাখণ্ড হয়ে নেপালের দিকে চলে যায়। এই ধরনের ঝঞ্ঝার প্রভাবে কাশ্মীরে, হিমাচল প্রদেশে তুষারপাত হয় এবং বৃষ্টি হয় উত্তর-পশ্চিম ভারতে। সেই সময় উত্তুরে হাওয়া বাধা পায়। ঝঞ্ঝা যদি মধ্য ভারত হয়ে পূর্ব ভারতে বয়ে আসে, তা হলে এই অঞ্চলেও বৃষ্টি নামে এবং শীত কার্যত মুখ থুবড়ে পড়ে। পৌষের শেষ পর্বেও ফের তেমনই পরিস্থিতি তৈরি হতে চলেছে বলে মনে করছেন আবহবিদেরা। দিল্লির মৌসম ভবনের খবর, চলতি সপ্তাহে পরপর দু’টি ঝঞ্ঝা এসেছে উত্তর-পশ্চিম ভারতে। তার মধ্যে দ্বিতীয় ঝঞ্ঝাটি শক্তিশালী। সেটি বৃহস্পতিবার ভারতে ঢুকেছে এবং শক্তিশালী ঝঞ্ঝাটিই পূর্ব ভারতে বয়ে আসতে চলেছে। বস্তুত, পশ্চিমী ঝঞ্ঝার প্রভাব ইতিমধ্যেই মালুম হয়েছে। শুক্রবার সকালে গাঙ্গেয় বঙ্গের বিভিন্ন এলাকায় কুয়াশা ছিল। বেড়ে গিয়েছে সর্বনিম্ন তাপমাত্রাও।
এ দিন কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৪.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা এই সময়ের স্বাভাবিক হলেও গত কয়েক দিনের তুলনায় বেশি। কাল, রবিবার থেকে রাতের পারদ আরও চড়তে পারে বলে আবহবিদদের ধারণা।