১ এপ্রিল থেকে বাড়ানো হল লক্ষীর ভান্ডারের প্রদেয় অর্থের পরিমাণ। —ফাইল চিত্র।
সোমবার, ১ এপ্রিল অর্থবর্ষের প্রথম দিন। তাই দেশের সব ব্যাঙ্ক বন্ধ। সেই কারণেই পূর্বঘোষিত হলেও এপ্রিল মাসের প্রথম দিনে বর্ধিত লক্ষীর ভান্ডারে টাকা দেওয়া যাচ্ছে না উপভোক্তাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে। মঙ্গলবার ব্যাঙ্ক খুললেই যাতে উপভোক্তাদের অ্যাকাউন্টে লক্ষ্মীর ভান্ডারের অর্থ পৌঁছে যায়, যৌথ ভাবে সেই বন্দোবস্ত করছে রাজ্য অর্থ ও সমাজকল্যাণ দফতর।
সোমবার ব্যাঙ্ক বন্ধ হলেও খোলা রয়েছে রাজ্য সরকারের সব দফতর। তাই মঙ্গলবার ব্যাঙ্ক খুললেই যাতে সব উপভোক্তার অ্যাকাউন্টে লক্ষ্মীর ভান্ডারের অর্থ পৌঁছে দেওয়া যায়, সে বিষয়ে যাবতীয় কাজ সম্পন্ন করা হচ্ছে বলে নবান্ন সূত্রে খবর। নতুন বছরের শুরুতেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছিলেন, ১ এপ্রিল থেকে বাড়ানো হবে লক্ষীর ভান্ডারের প্রদেয় অর্থের পরিমাণ। ওই প্রকল্পে সাধারণ সম্প্রদায়ের তালিকাভুক্ত মহিলারা ৫০০ টাকা করে পেতেন। এখন তাঁরা পাবেন দ্বিগুণ, ১০০০ টাকা করে। তফসিলি জাতি ও উপজাতি তালিকাভুক্ত মহিলারা এত দিন ১০০০ টাকা করে পেতেন। এ বার থেকে তাঁরা পাবেন ১২০০ টাকা করে।
মুখ্যমন্ত্রীর ওই ঘোষণা কার্যকর করতে বিধানসভার বাজেট অধিবেশনে লক্ষীর ভান্ডারের বরাদ্দ বৃদ্ধির কথা ঘোষণা করেন অর্থ দফতরের প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। লোকসভা ভোটের সময় ‘আদর্শ নির্বাচনী আচরণবিধি’ চালু হওয়ার কারণে প্রকল্পের অর্থ দিতে যাতে কোনও সমস্যা না হয়, সে বিষয়েও বন্দোবস্ত করা হয় রাজ্য সরকারের তরফে। নবান্ন সূত্রের খবর, মঙ্গলবার ২ কোটি ১৬ লক্ষ মহিলার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে লক্ষ্মীর ভান্ডারের বর্ধিত অর্থ পাঠানো হবে। এ জন্য শুধুমাত্র এপ্রিল মাসেই রাজ্য সরকারের খরচ হবে প্রায় ২,২৩০ কোটি টাকা। রাজ্য প্রশাসনের এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘রাজ্য সরকারের তরফে সব বন্দোবস্ত করে ফেলা হলেও সোমবার শুধু ব্যাঙ্ক বন্ধ থাকার কারণে ১ এপ্রিল অর্থ দেওয়া সম্ভব হল না উপভোক্তাদের। যার সঙ্গে রাজ্য সরকারের কোনও সম্পর্ক নেই। কিন্তু ২ এপ্রিল যাতে সব উপভোক্তার অ্যাকাউন্টে লক্ষ্মীর ভান্ডারের অর্থ দিয়ে দেওয়া যায়, তার নিশ্চিত বন্দোবস্ত রাজ্য সরকারের তরফে করা হচ্ছে।’’ মার্চ মাসে ওই প্রকল্পের জন্য রাজ্য সরকারের খরচের পরিমাণ ছিল প্রায় ১,১৮০ কোটি টাকা। অর্থাৎ, ওই প্রকল্পে খরচের পরিমাণ দ্বিগুণ হতে চলেছে বলে জানিয়েছে রাজ্য অর্থ দফতরের একটি সূত্র।
২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলের সর্ব্বোচ নেত্রী মমতার প্রতিশ্রুতির অন্যতম ছিল লক্ষ্মীর ভান্ডার। মে মাসে তৃতীয় বার সরকার গঠনের পর এ বিষয়ে উদ্যোগী হতে শুরু করেন তিনি। সেই বছরেই সেপ্টেম্বর মাস থেকে প্রকল্পে আবেদনকারী মহিলাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠানোর কাজ শুরু করা হয়। ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটের আগে সেই প্রকল্পে প্রদেয় অর্থের পরিমাণ বৃদ্ধি করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই লোকসভা ভোটের প্রচার শুরু করেছে রাজনৈতিক দলগুলি। তৃণমূলের প্রচারে বড় জায়গা জুড়ে রয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর এই প্রকল্পের কথা।