ফাইল চিত্র।
হলদিয়ায় ইন্ডিয়ান অয়েল কর্পোরেশন (আইওসি) এবং বন্দরের সদর দফতরের মাথার উপর পর পর দু’দিন ড্রোন উড়তে দেখে রীতিমতো রহস্য তৈরি হয়েছে নিরাপত্তা এজেন্সিগুলির মধ্যে। সিআইএসএফ-এর পক্ষ থেকে ঘটনাটি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের নজরে আনা হয়েছে। বিস্তারিত রিপোর্টও জমা পড়েছে নর্থ ব্লকে। নিরাপত্তা এজেন্সিগুলি জানিয়েছে, জেলা পুলিশকে ঘটনাটি জানানো হয়েছে। পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পুলিশও ঘটনার খোঁজ খবর করছে। তবে কারা ড্রোন উড়িয়েছিল তা পুলিশ সিআইএসএফকে জানায়নি।
নবান্ন সূত্রের খবর, গত ১৩ অগস্ট রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ আইওসি-র তেল শোধনাগারের মাথায় দু’টি ড্রোন উড়তে দেখা যায়। ড্রোন দু’টি আইওসি এবং বন্দরের সদর দফতর জওহর টাওয়ারের উপর উড়ছিল। সিআইএসএফ দেখা মাত্র গুলি চালায়, সঙ্গে সঙ্গে ড্রোন দু’টি পাতিখালির দিকে উড়ে চলে যায়। ঘটনাটি নিয়ে উদ্বেগ বাড়ে শিল্প নিরাপত্তা বাহিনীর। কারণ, হলদিয়া শিল্পাঞ্চলে ‘অতীব স্পর্শকাতর’ প্রতিষ্ঠান হিসাবে আইওসি এবং বন্দর চিহ্নিত হয়ে রয়েছে। লাদাখে চিনের সঙ্গে ভারতের দ্বৈরথের মধ্যেই শোধনাগার বা বন্দরের মাথায় ড্রোন কেন তা নিয়েও ভাবনা শুরু হয় নিরাপত্তা বাহিনীর মধ্যে। এর মধ্যেই ১৪ অগস্ট সকাল সাড়ে আটটা নাগাদ ইনল্যান্ড ওয়াটারওয়েজ জেটির মাথার উপর ওই ড্রোন দু’টি আবার দেখা যায়। সিআইএসএফ ধাওয়া করায় সেটি অবশ্য বেশিক্ষণ ওড়েনি। ওই এলাকাতেই রয়েছে হলদিয়া ভবন। সেখানে রাজ্যের পরিবহণ ও সেচমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী মাঝে মাঝে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করে থাকেন।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকে জমা পড়া রিপোর্টে বলা হয়েছে, ড্রোন দু’টি ওড়ানোর কৌশল দেখে সিআইএসএফের ধারণা হয়, কোনও প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত অপারেটরই সেগুলি উড়িয়েছিলেন। মূলত সেনা ও আধা সেনা, পুলিশ, গোয়েন্দাবাহিনী যে ভাবে ড্রোন ওড়ায় শোধনাগারের উপর সে ভাবেই ড্রোন দু’টি ওড়ানো হয়েছিল। সিআইএসএফের বার্তা পেয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকও তদন্ত শুরু করেছে। কেন শোধনাগার বা বন্দরের উপর ড্রোন উড়ল, তা জানা দরকার বলে বিশেষ ভাবে খোঁজখবরও শুরু করেছে নর্থ ব্লক। কেন্দ্রীয় প্রতিষ্ঠান ছাড়া ওই এলাকায় রয়েছে রাজ্য সরকারি হলদিয়া ভবন। ওই ভবনের উপর নজরদারি চালাতে ড্রোন উড়েছিল কি না, তা-ও তদন্তের আওতায় রয়েছে বলে জানা গিয়েছে। মন্ত্রকের এক সূত্র জানাচ্ছে, হলদিয়ায় ওড়া ড্রোনের মালিক কে ছিল তা জানা না গেলেও, রাজ্য গোয়েন্দা বিভাগের ড্রোন অপারেটরদের কেউ কেউ ঘটনার সময় কলকাতায় ছিলেন না বলেও জানা গিয়েছে। যদিও জেলা পুলিশ কোনও ভাবেই ড্রোন ওড়ার সঙ্গে পুলিশ বা গোয়েন্দা বাহিনীর যোগসূত্র অস্বীকার করেছে।