প্রতীকী ছবি।
অসংগঠিত শ্রমিকদের জন্য রাজ্য সরকার নানা সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্প কর্মসূচি চালু করেছে। কিন্তু পূর্ব মেদিনীপুরে মৎস্যজীবীদের একাংশের দাবি, সামাজিক স্বীকৃতি তো দূর অস্ত, তাঁদের পেশাগত পরিচয়পত্রই জোটেনি!
নদিয়া, মুর্শিদাবাদ, উত্তর ২৪ পরগনা, পশ্চিম মেদিনীপুর-সহ সবকটি জেলার অন্তর্দেশীয় মৎস্যজীবীদের পেশাগত সচিত্র পরিচয় পত্র বিলি করা সম্পূর্ণ হয়ে গিয়েছে। কিন্তু পূর্ব মেদিনীপরের ছবিটা অন্য। এই জেলায় মিষ্টি এবং নোনা জলে মাছ চাষ ও শিকারের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন আড়াই লক্ষেরও বেশি অন্তর্দেশীয় মৎস্যজীবী। কিন্তু ২০১৭ সাল থেকে জেলার ওই মৎস্যজীবীদের অধিকাংশই পেশাগত সচিত্র পরিচয়পত্র পাননি বলে দাবি মৎস্যজীবী সংগঠনগুলির।
এ প্রসঙ্গে দক্ষিণবঙ্গ মৎস্যজীবী ফোরামের নেতা দেবাশিস শ্যামল এবং তমালতরু দাস মহাপাত্র বলেন, ‘‘২০১৭ সাল থেকে অন্তর্দেশীয় মৎস্যজীবীদের সচিত্র পরিচয়পত্র বিলির জন্য সব পক্ষকে লিখিত আবেদন জানিয়ে আসছি। পরিচয় পত্র না পাওয়ায় যেমন সরকারি সুযোগ-সুবিধা ঠিকমতো পাওয়া যাচ্ছে না, তেমনই মৎস্যজীবী হিসেবে সামাজিক স্বীকৃতিও জুটছে না।’’
মৎস্য দফতর সূত্রের খবর, পূর্ব মেদিনীপুরে এক ধাপে প্রায় পাঁচ হাজার অন্তর্দেশীয় মৎস্যজীবীর পরিচয় পত্র বিতরণ করা হয়েছিল। কিন্তু পরবর্তীকালে পরিচয়পত্র বিলির পদ্ধতি নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়। রাজ্য মৎস্য দফতর অনলাইনে আবেদন জমা এবং পরিচয় পত্র বিলি করার পরিকল্পনা নেয়। কিন্তু সেই প্রক্রিয়া এখনও চালু হয়নি। এর আগে অফলাইনে পরিচয়পত্র বিতরণের আবেদনপত্র পাওয়ার জন্য রাজ্য সরকারের কাছে জেলা মৎস্য দফতর প্রস্তাব পাঠিয়েছিল। কিন্তু সেই আবেদনপত্র এসে পৌঁছয়নি বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গিয়েছে।
প্রশাসন এবং মৎস্য দফতর সূত্রের খবর, আন্তঃদেশীয় মৎস্যজীবীদের সচিত্র পরিচয় পত্র অত্যন্ত জরুরি। তাই তাঁদের নিয়মিত পরিচয় পত্র দেওয়া হয়। কিন্তু অন্তর্দেশীয় মৎস্যজীবীদের ক্ষেত্রে পরিচয় পত্র দেওয়া হয়, যাতে তাঁরা রাজ্য সরকারের সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পে সুবিধে পেতে পারেন। পরিচত্র না পাওয়ায় সরকারি প্রকল্পের সুবিধা থেকে তাঁরা বঞ্চিত হচ্ছেন বলে অভিযোগ মৎস্যজীবী সংগঠনগুলির।
মৎস্যজীবীদের অভিযোগ প্রসঙ্গে সহ-মৎস্য অধিকর্তা সৌরেন্দ্রনাথ জানা বলেন, ‘‘এখনও বিপুল সংখ্যক অন্তর্দেশীয় মৎস্যজীবী সচিত্র পরিচয়পত্র পাননি। এটা ঠিক। তবে রাজ্য সরকারের সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পে তাঁদের সব রকমের সুযোগ-সুবিধাই দেওয়া হচ্ছে। আমরা পরিচয়পত্র দেওয়ার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’’ মৎস্যজীবী সংগঠনগুলিকে আশ্বস্ত করে কাঁথির সাংসদ শিশির অধিকারী বলেন, ‘‘সমস্ত অন্তর্দেশীয় মৎস্যজীবী সচিত্র পরিচয় পত্র পাবেন। রাজ্য সরকার এর বন্দোবস্ত করবে। এটা নিয়ে দুশ্চিন্তার কোনও কারণ নেই।’’