প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
রাজ্যের শিক্ষানীতিতে কি প্রাথমিক শিক্ষা উপেক্ষিত থেকে গেল? সম্প্রতি মন্ত্রিসভায় রাজ্যের শিক্ষানীতি অনুমোদনের পরে শিক্ষামহলের একাংশের মতে, ৪+৪+২+২ যে মডেলে শিক্ষা ব্যবস্থার কথা বলে হয়েছে, তাতে উপেক্ষিত থেকে যাচ্ছে প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা।
শিক্ষানীতিতে প্রথম থেকে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত প্রাথমিক শিক্ষার কথা বলা হয়েছে। প্রাক-প্রাথমিককে যুক্ত করার কথা বলা হয়েছে অঙ্গনওয়াড়ির সঙ্গে। প্রশ্ন উঠেছে অঙ্গনওয়াড়ি ব্যবস্থায় কি প্রাক-প্রাথমিকে পড়ানোর মতো পরিকাঠামো রয়েছে? শহরাঞ্চলে অঙ্গনওয়াড়িই বা কোথায়? সরকারি স্কুলে প্রাক-প্রাথমিক না থাকলে সন্তানদের বেসরকারি স্কুলে পড়ানোর প্রবণতা বাড়বে বলেও মনে করছেন শিক্ষক ও অভিভাবকদের একাংশ।
শিক্ষকেরা জানাচ্ছেন, তিন থেকে ছ’বছর বয়স পর্যন্ত প্রাক-প্রাথমিকে পড়ে প্রথম শ্রেণিতে ভর্তি হয় এক জন। প্রশ্ন উঠেছে, প্রথম শ্রেণির আগে এই খুদে পড়ুয়ারা পড়বে কোথায়? ‘বঙ্গীয় প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি’র সাধারণ সম্পাদক আনন্দ হান্ডার কথায়, ‘‘প্রাক-প্রাথমিকে অভিভাবকেরা ছেলেমেয়েদের অঙ্গনওয়াড়িতে পাঠাবেন কিনা, যথেষ্ট সংশয় আছে। বেশির ভাগ অঙ্গনওয়াড়িতে পড়ানোর সঠিক পরিকাঠামো নেই। ভাড়া ঘরে চলে অঙ্গনওয়াড়ি। অনেক জায়গায় যিনি রাধুনি, তিনিই শিক্ষক।’’
পশ্চিমবঙ্গ সরকারি বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সৌগত বসুর মতে, জাতীয় শিক্ষানীতিতে প্রাক-প্রাথমিককে অনেক বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। সেখানে ৫+৩+৩+৪ মডেলে প্রথম ৫ ধরা হয়েছে প্রাক-প্রাথমিক থেকে দ্বিতীয় শ্রেণি পর্যন্ত। সিবিএসই এবং সিআইএসসিই বোর্ডের বেশির ভাগ স্কুলেই প্রাক-প্রাথমিক রয়েছে। সৌগত বলেন, ‘‘এখন প্রায় সব অভিভাবকই তিন বছর বয়স থেকে বাচ্চাদের স্কুলে পাঠান। সরকারি স্কুলে যদি প্রাক-প্রাথমিক না থাকে, তা হলে বেসরকারি স্কুলের দিকেই ঝুঁকবেন অভিভাবকেরা। সরকারি স্কুলের পড়ুয়ার সংখ্যা আরও কমবে।’’
রাজ্যের শিক্ষানীতির খসড়া যাঁরা তৈরি করেছেন, তাঁদের এক জনের দাবি, ‘‘প্রাক-প্রাথমিক উপেক্ষিত থাকবে না। অঙ্গনওয়াড়ির পরিকাঠামো উন্নত করা হবে।’’