প্রতীকী ছবি।
দেশে গবেষণার উন্নয়নে গত বছরের বাজেটে ‘ন্যাশনাল রিসার্চ ফাউন্ডেশন’ গড়ার কথা জানিয়েছিল কেন্দ্র। গবেষণা খাতে বরাদ্দ বৃদ্ধির কথাও বলা হয়েছিল। এ বারের কেন্দ্রীয় বাজেট পেশ হচ্ছে আজ, শনিবার। তার আগে প্রশ্ন উঠছে, গত এক বছরে দেশের গবেষণা কি আদৌ এগিয়েছে?
ইতিহাস, অর্থনীতি, দর্শনের মতো সমাজবিজ্ঞানের সঙ্গে যুক্ত গবেষক-শিক্ষকেরা বলছেন, নরেন্দ্র মোদীর জমানায় সমাজবিজ্ঞান সংক্রান্ত গবেষণার পরিসর তো সঙ্কুচিত হয়েছেই, সেই সঙ্গে ওই খাতে অনুদানও কমেছে। তুলনায় বেশি নজর দেওয়া হচ্ছে বিজ্ঞান গবেষণায়।
তবে বিজ্ঞানের ক্ষেত্রেও গবেষণায় বরাদ্দ বৃদ্ধির সুফল কতটা মিলছে, সেই বিষয়েও প্রশ্ন এবং সংশয়-সন্দেহ রয়েছে। কলকাতার একটি কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্রের এক অধ্যাপকের প্রশ্ন, ‘‘প্রযুক্তি সংক্রান্ত গবেষণা, পেটেন্ট নেওয়া— এ-সবের উপরেই জোর দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু মৌলিক গবেষণায় বরাদ্দ কোথায়? মৌলিক গবেষণা যদি না-হয়, তা হলে প্রযুক্তির উন্নতি হবে কী ভাবে?’’
প্রযুক্তি সংক্রান্ত ক্ষেত্রে গবেষণায় বরাদ্দ বৃদ্ধিতে অনেকেই অবশ্য খুশি। তাঁরা বলছেন, বিভিন্ন গবেষণাগারে নতুন যন্ত্র বা প্রযুক্তি উদ্ভাবনে সাহায্য মিলছে। নতুন গবেষকেরা কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রকের অনুদান পাচ্ছেন। সেটা আগে ছিল না। সম্প্রতি কলকাতায় আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান-প্রযুক্তি উৎসবেও প্রযুক্তির ‘গৌরব’ই প্রদর্শিত হয়েছে। কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান-প্রযুক্তি দফতরের সচিব আশুতোষ শর্মা সেই অনুষ্ঠানে বলেছিলেন, বিজ্ঞানকে জনপ্রিয় করতেই তাঁরা হাতে-কলমে পরীক্ষা এবং প্রযুক্তির মতো বিষয়কে উৎসাহিত করছেন।
প্রশ্ন উঠছে, মৌলিক বিজ্ঞান ও সমাজবিজ্ঞান চর্চার উন্নতি না-হলে কি দেশের উচ্চশিক্ষা পরিস্থিতির উন্নয়ন সম্ভব? ‘‘দেশের এবং সমাজের উন্নতির ভিত্তি মৌলিক বিজ্ঞান। এর উপরে জোর না-দিলে সমাজ ও শিক্ষার অগ্রগতি হবে না। গুরুত্ব আছে সমাজবিজ্ঞানেরও,’’ বলছেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিদ্যার এমিরেটাস অধ্যাপক দীপক ঘোষ।
কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসের শিক্ষক সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায় জানান, নেটের জুনিয়র রিসার্চ ফেলোশিপ আগের থেকে নিয়মিত ভাবে মিলছে বটে। কিন্তু মৌলিক গবেষণার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সাহায্য বৃদ্ধির প্রয়োজন আছে।
এই অবস্থায় জল্পনা চলছে, এ বারের কেন্দ্রীয় বাজেটে মৌলিক বিজ্ঞান ও সমাজবিজ্ঞানের উপরে গুরুত্ব দেওয়া হবে তো! নাকি ফের প্রযুক্তির ‘ঢক্কানিনাদ’ই শোনা যাবে?