দৌসার একটি বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক ছিলেন অর্চনা। ফাইল চিত্র ।
স্বাস্থ্য পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত চিকিৎসকদের উপর হওয়া হিংসা, হয়রানি এবং গুন্ডামি প্রতিরোধের জন্য একটি কেন্দ্রীয় আইন আনার বিষয়ে আবেদন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি পাঠালেন তৃণমূল রাজ্যসভার সাংসদ তথা চিকিৎসক শান্তনু সেন। রাজস্থানে হেনস্থার শিকার হয়ে মানসিক চাপে আত্মঘাতী হওয়া চিকিৎসক অর্চনা শর্মার প্রসঙ্গ টেনে এনেই প্রধানমন্ত্রীকে এই চিঠি পাঠিয়েছেন শান্তনু।
এই চিঠিতে শান্তনু লেখেন, ‘এই দুঃখজনক ঘটনা আবারও মানুষের চোখ খুলে দেখিয়ে দিয়েছে যে মানবতার খাতিরে কাজ করা চিকিৎসকদের কী ভাবে প্রাণ দিতে হয়। কোভিড পরিস্থিতিতে অক্লান্ত পরিশ্রম করে দেশকে সুরক্ষিত রাখার পরেও এই সমাজে চিকিৎসকরা নিরাপদ নন। তাঁরা যে কোনও সামাজিক, রাজনৈতিক পরিস্থিতির বলি হতে পারেন।’
এই কারণেই প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি পাঠিয়ে এই নতুন আইন প্রনয়নের কথা জানান শান্তনু।
প্রসঙ্গত, রাজস্থানের দৌসা জেলার বিরাটনগরের বাসিন্দা মঙ্গলবার মানসিক চাপের শিকার হয়ে আত্মহত্যা করেন। দৌসার একটি বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক ছিলেন অর্চনা এবং তাঁর স্বামী সুনীত উপাধ্যায়। এই হাসপাতালে এক অন্তঃসত্ত্বা মহিলার মৃত্যুর ঘটনায় মৃতার পরিবারের সদস্যরা হাসপাতালের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তোলেন। অর্চনার বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়। সেই মানসিক নির্যাতন সহ্য না করতে পেরেই আত্মহত্যার পথ বেছে নেন তিনি।
একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দল এবং এক জন সাংবাদিকের প্ররোচনায় পা দিয়েই অন্তঃসত্ত্বা মহিলার পরিবার অর্চনার বিরুদ্ধে খুনের মামলা করেন বলেও চিঠিতে উল্লেখ করেন শান্তনু।
এই ঘটনায় রাজনৈতিক চাপের মুখে পুলিশ অর্চনার বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগে মামলা দায়ের করে বলে অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধেও। বুধবার দৌসার লালসোট থানার ভারপ্রাপ্ত অফিসার অঙ্কিত চৌধুরিকে সাসপেন্ডও করা হয়।
মৃত্যুর আগে একটি সুইসাইড নোটে অর্চনা লেখেন, ‘আমার স্বামী এবং সন্তানদের আমি খুব ভালোবাসি। আমার মৃত্যুর পর দয়া করে তাঁদের হয়রান করবেন না। আমি কোনও ভুল করিনি। কাউকে হত্যা করিনি। জটিলতা থেকে মহিলার মৃত্যু হয়। দয়া করে নির্দোষ ডাক্তারদের হয়রান করা বন্ধ করুন। আমার মৃত্যুই প্রমাণ করবে আমি নির্দোষ।’