(বাঁ দিকে) রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্যে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের মানহানি হয়েছিল কি? কলকাতা হাই কোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চকেই তা বিবেচনা করে দেখতে বলল ডিভিশন বেঞ্চ। নতুন করে এ ব্যাপারে হলফনামা জমা নিতে হবে সিঙ্গল বেঞ্চকে। তার পর সিদ্ধান্ত নিতে হবে। একই সঙ্গে ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, রাজ্যপালের বিরুদ্ধে মন্তব্য করা যাবে। তবে তাতে যেন কোনও ভাবেই তাঁর সম্মানহানি না ঘটে, সে বিষয়টিও মাথায় রাখতে হবে মুখ্যমন্ত্রীকে।
মানহানি সংক্রান্ত মামলাটিতে সিঙ্গল বেঞ্চের অন্তর্বর্তিকালীন নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায় এবং বিচারপতি বিশ্বরূপ চৌধুরীর ডিভিশন বেঞ্চে মামলা করা হয় মুখ্যমন্ত্রীর তরফে। শুক্রবার তার শুনানি ছিল। ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে সিঙ্গল বেঞ্চকেই। সব পক্ষের কাছ থেকে নতুন করে হলফনামা জমা নেবে আদালত। তার পর সব দিক বিবেচনা করে রাজ্যপালের মানহানি হয়েছে কি না, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, মুখ্যমন্ত্রীর একটি মন্তব্যের বিরুদ্ধে হাই কোর্টে মানহানির মামলা করেছিলেন রাজ্যপাল। পরে তৃণমূলের দুই বিধায়ক সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, রেয়াত হোসেন সরকার এবং তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষকেও ওই মামলায় যুক্ত করা হয় রাজ্যপালের তরফে। গত ১৬ জুলাই বিচারপতি কৃষ্ণ রাওয়ের এজলাসে শুনানি হয় এই মামলার। সিঙ্গল বেঞ্চ পর্যবেক্ষণে জানিয়েছিল, মামলাকারীর দাবি অনুযায়ী, বেশ কিছু মন্তব্যে তাঁর মর্যাদা ক্ষুণ্ণ হয়েছে। ওই রকম মন্তব্য থেকে বিরত থাকা উচিত। আদালত জানায়, আগামী ১৪ অগস্ট পর্যন্ত রাজ্যপালের মানহানি হয়, এমন কোনও মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকতে হবে মুখ্যমন্ত্রীকে। সিঙ্গল বেঞ্চের সেই অন্তর্বর্তিকালীন নির্দেশকেই চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ডিভিশন বেঞ্চে মামলা হয়েছিল। মুখ্যমন্ত্রীর তরফে মামলাটি লড়ছেন আইনজীবী সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়।
মুখ্যমন্ত্রীর আইনজীবীর বক্তব্য ছিল, মুখ্যমন্ত্রী জনগণের স্বার্থে ওই মন্তব্য করেছিলেন। রাজ্যপালের করা মানহানি মামলায় অভিযোগের পক্ষে কোনও প্রমাণ ছাড়াই অন্তর্বর্তী নির্দেশ দিয়েছে সিঙ্গল বেঞ্চ। রাজ্যপালের উদ্দেশে করা মুখ্যমন্ত্রীর কোনও মন্তব্যই মানহানিকর নয় বলেও জানান তিনি। অনুরূপ দাবি করেন মামলায় অভিযুক্ত সায়ন্তিকা, রেয়াত, কুণালেরাও। আপাতত মামলাটি সিঙ্গল বেঞ্চে ফেরত পাঠাল ডিভিশন বেঞ্চ।