বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
যোগেশ চন্দ্র চৌধুরী ল কলেজের অধ্যক্ষ সুনন্দা ভট্টাচার্য গোয়েন্কাকে অপসারণের নির্দেশ খারিজ করল ডিভিশন বেঞ্চ। সুনন্দা ভট্টাচার্য গোয়েন্কাকে অপসারণ এবং তাঁর অফিস তালাবন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। বুধবার সেই নির্দেশ খারিজ করে দিল বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী এবং বিচারপতি রাই চট্টোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ। যদিও মূল মামলা শুনানি চালিয়ে নিয়ে যেতে পারবেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। সেখানে নিজের যোগ্যতার স্বপক্ষে বক্তব্য জানিয়ে হলফনামা দিতে হবে প্রাক্তন প্রিন্সিপালকে। অর্থাৎ, আপাতত বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশ রদ হলেও ভবিষ্যতে সুনন্দা যোগ্যতা প্রমাণ করতে ব্যর্থ হলে আদালত নতুন নির্দেশ দিতে পারে।
বুধবার ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় আদালত নিযুক্ত স্পেশাল অফিসার অধ্যক্ষের অফিসের তালা খুলে দেবেন। বাধাহীন ভাবে কলেজে প্রবেশ করতে পারবেন তিনি। অক্টোবরের স্বাভাবিক বেতনও পাবেন। এই মামলায় ডিভিশন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, শুধুমাত্র মোবাইলে কথা বলে অধ্যক্ষকে অপসারণ করার সিদ্ধান্ত না করলেই পারত একক বেঞ্চ। তবে ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, এই মামলার পরবর্তী শুনানি করতে পারবেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।
বৃহস্পতিবার বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় যোগেশচন্দ্র চৌধুরী ল কলেজের অধ্যক্ষ সুনন্দা ভট্টাচার্য গোয়েন্কা এবং ওই কলেজেরই অধ্যাপক অচিনা কুন্ডুকে পদ থেকে অপসারিত করেন। আদালতের একক বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ ছিল, ইউজিসি (বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন) নির্ধারিত যোগ্যতা তাঁদের নেই। বিচারপতি জানিয়ে দেন যে, শুক্রবার থেকেই সুনন্দা এবং অচিনা কলেজে ঢুকতে পারবেন না। অবশ্য বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় এ-ও জানান যে, ওই দুই ব্যক্তি যদি তাঁদের যোগ্যতা সম্পর্কে আদালতকে সন্তুষ্ট করতে পারেন, তা হলে পুনর্বহাল করা হবে। এই মামলার শুনানিতে বিচারপতি মন্তব্য করেছিলেন যে, ‘‘এটা একটা বৃহত্তর ষড়যন্ত্র। তদন্ত করে দেখতে হবে। প্রয়োজনে সিবিআইকে তদন্তভার দিতে পারি।’’
অপসারিত অধ্যক্ষ এবং অধ্যাপকের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ করেছিল রাজ্যের শিক্ষা দফতর। ২০২১, ২০২২ এবং ২০২৩ সালে অধ্যক্ষ এবং ওই অধ্যাপকের বেতন বন্ধ এবং বিভাগীয় তদন্তের জন্য কলেজের গভর্নিং বডিকে সুপারিশ করেছিল শিক্ষা দফতর। তবে সেই সুপারিশ কার্যকর করেনি গভর্নিং বডি। আদালত নিযুক্ত স্পেশাল অফিসারের দাবি, গভর্নিং বডির সভাপতির উদ্দেশে সুপারিশপত্র পাঠানো হলেও তা পৌঁছত সচিবের হাতে। গভর্নিং বডির বর্তমান সচিব ছিলেন অধ্যক্ষ।