(বাঁ দিকে) সোমনাথ শ্যাম। অর্জুন সিংহ (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলে বেড়েই চলেছে বিধায়ক বনাম সাংসদের দ্বন্দ্ব। আর সেই দ্বন্দ্ব নিয়ে শীর্ষ নেতৃত্বের হস্তক্ষেপ চান ব্যারাকপুরের তৃণমূল নেতৃত্ব। ২০২২ সালের মে মাসে বিজেপি ছেড়ে অর্জুন সিংহ তৃণমূলে যোগদানের পর থেকেই জগদ্দলের তৃণমূল বিধায়ক সোমনাথ শ্যামের সঙ্গে তাঁর বিবাদ চলে আসছে। সম্প্রতি সেই বিবাদ চরমে ওঠে এক তৃণমূল কর্মী খুনের ঘটনায়। গত ২১ নভেম্বর ভিকি যাদব নামে এক তৃণমূল কর্মী খুন হন ভাটপাড়ায়। বিধায়ক সোমনাথ অভিযোগ করেন খুনের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন ব্যারাকপুরের সাংসদ অর্জুন। সেই সময় দু’পক্ষের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন দমদম ব্যারাকপুর সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের সভাপতি তথা বিধায়ক তাপস রায়।
কিন্তু সম্প্রতি আবারও বিধায়ক-সাংসদের মধ্যে বিবৃতি পাল্টা বিবৃতির লড়াই শুরু হয়েছে। গত শুক্রবার সোমনাথ বলেছেন, ‘‘ভিকি যাদবকে খুনের ঘটনায় দেখা গিয়েছে, মেঘনা জুটমিলের পুরাতন লাইন থেকে বেরিয়ে খুনিরা খুন করে আবার সেখানে ঢুকে যায়। এই কারণেই আমি বলেছি, কোথাও না কোথাও সাংসদ বা তাঁর পরিবারের কেউ জড়িত। পরিবারের সেই যুক্ত লোকের নাম পাপ্পু সিংহ।’’ একই সঙ্গে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, ‘‘কেউ প্রভাব খাটাচ্ছে। তাই হয়তো পুলিশ পিছিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু আমার মনে হয়, পুলিশ এ বার পিছোবে না, কারণ পুলিশের কাছে গ্রেফতার করার জন্য যথেষ্ট তথ্য আছে। যে খুন করেছে, তাঁকে জেল খাটতেই হবে।’’ রবিবার ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলে মিছিল করে সাংসদ অর্জুন নিশানা করেছেন বিধায়ক সোমনাথকে।
দমদম ব্যারাকপুর সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব মনে করছে, লোকসভা ভোটের আগে সাংসদ-বিধায়কের মধ্যে এই দ্বন্দ্ব ভোটার তথা নিচুতলার কর্মীদের মধ্যে বিরূপ প্রভাব তৈরি করতে পারে। তাই অবিলম্বে অর্জুন-সোমনাথকে সর্তক করা দরকার। তাই এ বিষয়ে তাঁরা শীর্ষ নেতৃত্বের হস্তক্ষেপ দাবি করছেন। আগামী বৃহস্পতিবার বারাসতে উত্তর ২৪ পরগনার চারটি সাংগঠনিক জেলার নেতা ও বিধায়কদের নিয়ে বৈঠকে বসছেন জেলা নেতৃত্ব। সেখানে এই সংক্রান্ত বিষয়ে কী কোনও আলোচনা হবে? এমন প্রশ্নের জবাবে এক প্রবীণ নেতা জানিয়েছেন, বিধায়ক সোমনাথ ওই বৈঠকে আমন্ত্রিত। তিনি যদি বিষয়টি উত্থাপন করেন, তবে অবশ্যই দল তা নিয়ে আলোচনা করবে। কিন্তু সাংসদ-বিধায়কের মধ্যে এই দ্বন্দ্ব মেটাতে শীর্ষ নেতৃত্বের হস্তক্ষেপই শ্রেয় বলে মনে করছে জেলার নেতারা।