প্রতীকী ছবি
বিধানসভা ভোটের দিকে তাকিয়ে দলের নতুন রাজ্য কমিটি তৈরি করেছে বিজেপি। কিন্তু নতুন কমিটি ঘোষণার অল্প দিনের মধ্যেই তা নিয়ে দলের অন্দরে আদি-নব্য দ্বন্দ্বের প্রকাশ ঘটতে শুরু করল। রাজ্য বিজেপি-র নতুন কমিটিতে তৃণমূল ও সিপিএম থেকে এসে ভোটে জেতা অনেককেই গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। দলের একাংশ প্রশ্ন তুলছে, তা হলে দলের দুর্দিনে যাঁরা ঝুঁকি নিয়ে কাজ করে এসেছেন, তাঁরা গুরুত্ব পাবেন কবে? এ ছাড়া, দলের ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর ‘কাছের লোক’ হওয়ার সুবাদেও অনেকে গুরুত্বপূর্ণ পদে এসেছেন বলে অভিযোগ।
বিজেপির যুব, মহিলা, তফসিলি জাতি (এসসি), তফসিলি জনজাতি (এসটি)— এই চারটি মোর্চারই রাজ্য সভাপতি ‘বহিরাগত’। যুব মোর্চার সভাপতি সৌমিত্র খান লোকসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূল থেকে বিজেপিতে গিয়ে ওই ভোটে জেতেন। মহিলা মোর্চার নতুন সভাপতি ফ্যাশন ডিজাইনার অগ্নিমিত্রা পালও বিজেপিতে যোগ দেন লোকসভা ভোটের আগে। এসসি মোর্চার নতুন রাজ্য সভাপতি দুলাল বর বারে বারে ‘দলবদলু’ এবং খাতায়-কলমে এখনও কংগ্রেস বিধায়ক। এসটি মোর্চার রাজ্য সভাপতি খগেন মুর্মু আবার সিপিএম থেকে বিজেপিতে গিয়ে সাংসদ হয়েছেন। অগ্নিমিত্রা মহিলা মোর্চার দায়িত্ব পাওয়ায় ওই সংগঠনের কর্মীদের কারও কারও অসন্তোষের প্রকাশ ফেসবুকেও ঘটেছে।
পাশাপাশি, তৃণমূল থেকে বিজেপিতে এসেই সাংসদ হয়ে যাওয়া অর্জুন সিংহকে রাজ্যের সহ-সভাপতি করায় দলের পুরনোদের অনেকে ক্ষুব্ধ। আবার বিধাননগরের প্রাক্তন মেয়র এবং এখনও বিধায়ক সব্যসাচী দত্তকে সম্পাদক করা নিয়েও দলের একাংশে বিতর্ক আছে। আবার কয়েক বছর আগে রাজ্যে বিজেপির একমাত্র বিধায়ক ছিলেন যে শমীক ভট্টাচার্য, তাঁকে এ বারেও কমিটি থেকে বাদ রাখায় ক্ষোভ রয়েছে দলের একাংশে।
রাজ্য বিজেপির দুই সাধারণ সম্পাদক প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রাজু বন্দ্যোপাধ্যায়কে নতুন কমিটিতে করা হয়েছে সহ-সভাপতি। তা নিয়েও দলের অন্দরে কারও কারও ক্ষোভ আছে। আবার সাধারণ সম্পাদক হওয়ার ইচ্ছাপূরণ না হওয়ায় এক অভিনেত্রী-সম্পাদক ইদানীং দলীয় বৈঠক এড়াচ্ছেন বলেও বিজেপি সূত্রের খবর। দলীয় সূত্রের আরও খবর, সাম্প্রতিক একটি বৈঠকে উত্তরবঙ্গের দায়িত্বপ্রাপ্ত এক নেতা নাম না করে অন্য দুই নেতার কাজের বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ অবশ্য নতুন কমিটি নিয়ে দলের অন্দরের ক্ষোভকে গুরুত্ব দিচ্ছেন না। তাঁর বক্তব্য, ‘‘দলের শৃঙ্খলা না মেনে যাঁরা সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্ষোভ জানাচ্ছেন, তাঁরা আদৌ বিজেপি মনোভাবাপন্ন কিনা, আমার সন্দেহ আছে! আর পদের ব্যাপারে সকলের সব ইচ্ছা পূরণ করা যায় না। কিন্তু পদের হেরফের হলেও কাজের দায়িত্ব আমরা সকলকেই দিই। কমিটি গঠনের প্রথম দিকে এ রকম সমস্যা থাকলেও পরে সকলেই দলের নিয়ম মেনে কাজ করেন।’’