প্রতীকী ছবি।
সম্প্রতি এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বাংলাদেশ ও পাকিস্তান সীমান্তবর্তী পশ্চিমবঙ্গ, অসম ও পঞ্জাবে বিএসএফের এলাকা বাড়িয়ে ৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত করে দেওয়া হয়েছে। বাংলায় আগে যা ছিল ১৫ কিলোমিটার। এ বার কেন্দ্রীয় সরকারের সেই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় প্রস্তাব আনতে চলেছে তৃণমূল পরিষদীয় দল। কেন্দ্রীয় সরকারের ওই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আগামী ১৬ নভেম্বর পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় প্রস্তাব আনা হবে। ওই দিন এক ঘণ্টার আলোচনায় অংশ নেবেন তৃণমূল বিধায়করা। সীমান্তবর্তী এলাকায় শাসকদলের বিধায়করা এই বিতর্কে অংশ নিতে চেয়ে তৃণমূলের মুখ্যসচেতক নির্মল ঘোষের কাছে আবেদন করেছেন। সূত্রের খবর, বিএসএফের সীমানা বৃদ্ধির সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রস্তাবের বিপক্ষে বলতে চেয়ে আবেদন করেছেন দিনহাটা থেকে সদ্য বিধানসভা উপনির্বাচনে জয়ী উদয়ন গুহ। বিতর্কে অংশ নিতে চেয়েছেন মুর্শিদাবাদ জেলার কান্দির বিধায়ক অপূর্ব সরকার।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় সরকারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে পঞ্জাব বিধানসভায় এই প্রস্তাব পাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী চরণজিৎ সিংহ চন্নী। তারপর সেই একই ইস্যুতে প্রস্তাব আসতে চলেছে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায়। অক্টোবর মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে বিএসএফের সীমানা বৃদ্ধির বিষয়ে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। পাকিস্তান এবং বাংলাদেশের সঙ্গে আন্তর্জাতিক সীমান্ত রয়েছে, এমন তিন রাজ্যে ক্ষমতা বাড়ায় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বা বিএসএফ-এর। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের নয়া নির্দেশিকা অনুযায়ী, পঞ্জাব, অসম এবং পশ্চিমবঙ্গে আন্তর্জাতিক সীমান্ত থেকে ভারতীয় ভূখণ্ডে ৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত এলাকায় বিএসএফ গ্রেফতার, তল্লাশি এবং বাজেয়াপ্ত করার কাজ করতে পারবে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের দাবি, জাতীয় সুরক্ষার দিকে লক্ষ্য রেখে সীমান্ত সংলগ্ন স্পর্শকাতর রাজ্যগুলোতে বেআইনি কার্যকলাপ রোধে এই সিদ্ধান্ত বলে জানানো হয়।
ইতিমধ্যে স্বরাষ্ট্র বিষয়ক সংসদীয় কমিটিতে সরব হয়েছেন তৃণমূল রাজ্যসভার দলনেতা ডেরেক ও ব্রায়েন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রকাশ্যে এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছেন। প্রশ্ন তুলেছেন,পশ্চিমবঙ্গে যেখানে ১৫ থেকে বাড়িয়ে ৫০ কিলোমিটার করা হল, সেখানে নরেন্দ্র মোদীর রাজ্য গুজরাতে কেন তা ৮০ থেকে কমিয়ে ৫০ কিলোমিটার করা হল? এই আলোচনায় প্রধান বিরোধী দল বিজেপি অংশ নেবে বলে জানা গিয়েছে। কারণ, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী জানিয়েছিলেন, উৎসবের মরসুমের কারণে বিধানসভা অধিবেশনের শেষ তিন দিন অংশ নেবেন তাঁরা। তাই ১৬-১৮ নভেম্বরের অধিবেশনে পুরোদমে থাকবেন তাঁরা। তাই বিএসএফ নিয়ে আলোচনার ইস্যুতে বিধানসভার শীতকালীন অধিবেশন উত্তপ্ত হতে পারে। পাশাপাশি, চলতি অধিবেশনেই ক্রমবর্ধমান পেট্রোল, ডিজেল ও রান্নার গ্যাসের দাম বৃদ্ধির বিরুদ্ধেও প্রস্তাব এনে আলোচনা করবে তৃণমূল পরিষদীয় দল।