মমিনুল সরকারের খুনের পর কান্নায় ভেঙে পড়েন তাঁর পরিবারের সদস্যরা। —নিজস্ব চিত্র।
জমি নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরেই বিবাদ চলছিল কাকা-ভাইপোর পরিবারে। এমনকি, জমিতে পা রাখলে কাকাকে প্রাণে মেরে ফেলারও হুমকি দিয়েছিল বলে ভাইপোর বিরুদ্ধে অভিযোগ। মঙ্গলবার ওই যুবকের বিরুদ্ধে কাকাকে গুলি করে খুনের অভিযোগ উঠল। ঘটনার পর থেকেই এলাকা থেকে চম্পট দেন ওই যুবক। কোচবিহারের দিনহাটায় এই অভিযোগের তদন্তে নেমেছে সাহেবগঞ্জ থানার পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে খবর, দিনহাটার নাজিরহাট গ্রাম পঞ্চায়েতের পূর্ব শিকারপুর এলাকায় মমিনুল সরকার (৪৫)-কে খুনের অভিযোগ উঠেছে তাঁর ভাইপো বাপ্পা হোসেনের বিরুদ্ধে।
স্থানীয়েরা জানিয়েছেন, মমিনুল এবং বাপ্পার পরিবারের মধ্যে একটি জমি নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে বিবাদ চলছিল। অভিযোগ, মঙ্গলবার সেই জমিতে মমিনুল কাজ করতে গেলে বাধা দেন বাপ্পা। এমনকি, বন্দুক দেখিয়ে সে জমি থেকে সরে যেতে বলেন। ঘটনাকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের মধ্যে বচসা শুরু হয়। আচমকাই মমিনুলের মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে গুলি করে বাপ্পা। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় মমিনুলের। গুলির আওয়াজ শুনে এলাকার লোকজন ছুটে আসেন। তাঁরা দেখেন, মমিনুল মারা গিয়েছেন। সেখান থেকে বন্দুক হাতে পালাচ্ছেন বাপ্পা। স্থানীয়েরা আটকে রাখার চেষ্টা করলে তাঁদেরও বন্দুক দেখিয়ে সেখান থেকে চম্পট দেন তিনি। মমিনুলের ছেলে শাহিন রহমানের দাবি, ‘‘প্রায়ই আমাদের হুমকি দিত বাপ্পা। বলত, ‘জমিতে নামলেই প্রাণে মেরে ফেলবে। আজ (মঙ্গলবার) বাবা যখন জমিতে যায়, আমিও তাঁর সঙ্গে ছিলাম। বাবা জমিতে আসার সঙ্গে সঙ্গে সেখানে পৌঁছয় বাপ্পা। দু’জনের ঝগড়া শুরু হলে হঠাৎ বন্দুক বার করে বাবার মাথায় ঠেকিয়ে গুলি চালিয়ে দেয়। আমাকেও প্রাণে মারার চেষ্টা করে। সেখান থেকে পালিয়ে প্রাণে বাঁচি। সকালে আমার কাকার মাথাতেও বন্দুক ঠেকিয়েছিল বাপ্পা। ও পালিয়ে যাওয়ার পর ফিরে গিয়ে দেখি, বাবা মারা গিয়েছে।’’
এই ঘটনার পর সাহেবগঞ্জ থানায় খবর দেওয়া হলে ঘটনাস্থলে পৌঁছে দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায় পুলিশ। মমিনুলের ভ্রাতৃবধূ ফিরদৌসী বিবির দাবি, ‘‘আজ আমার স্বামীর মাথাতেও বন্দুক ঠেকিয়েছিল বাপ্পা। আমার স্বামী আর তার সঙ্গে বচসায় জড়ায়নি। তাই সেখান থেকে চলে যায়। দুপুর ২টো নাগাদ এই ঘটনা ঘটায়। আমরা এর বিচার চাই।’’
অভিযুক্তকে ধরার জন্য তৎপর হয়েছে পুলিশ। কোচবিহারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কুমার সানি রাজ বলেন, ‘‘জমি বিবাদের জেরে এই ঘটনা ঘটেছে। মৃত ব্যক্তিকে উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। অভিযুক্ত বাপ্পা হোসেনের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ।’’