এর মধ্যেই শুভেন্দুকে দলের কোন দায়িত্ব দেওয়া যেতে পারে, তা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়ে গিয়েছে।
এক মাসও হয়নি তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি-তে যোগ দিয়েছেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। কিন্তু এর মধ্যেই তাঁকে দলের কোন দায়িত্ব দেওয়া যেতে পারে, তা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়ে গিয়েছে। তবে এখনও কোনও কিছু চূড়ান্ত হয়নি। শনিবার এই সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তরে রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেছেন, ‘‘আলোচনা চলছে। যথাসময়ে ঘোষণা করা হবে।’’
অতীতে যাঁরা অন্য দল থেকে বিজেপি-তে যোগ দিয়েছেন, তাঁদের অনেকের ক্ষেত্রেই সাংগঠনিক পদ পেতে অনেকটা সময় লেগেছে। এর মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য নাম মুকুল রায়। তৃণমূলের প্রাক্তন সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক এখন বিজেপি-র সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি। কিন্তু সেই পদ পেতে প্রায় তিন বছর সময় লেগেছে তাঁর। ২০১৭ সালের ৩ নভেম্বর বিজেপি-তে যোগ দিয়েছিলেন মুকুল। এর পর বিজেপির হয়ে ২০১৮-র পঞ্চায়েত এবং ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বও সামলান। কিন্তু তখনও কেন্দ্র বা রাজ্য সংগঠনের কোনও গুরুত্বপূর্ণ পদ পাননি মুকুল। ছিলেন বিজেপি-র জাতীয় কর্মসমিতির সদস্য। ২০২০ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর বিজেপি সভাপতি জেপি নড্ডা মুকুলের পদ ঘোষণা করেন।
তবে যোগদানের পরমুহূর্ত থেকেই দলে গুরুত্ব পাওয়া শুভেন্দুর ক্ষেত্রে তেমনটা হবে না বলেই মনে করছেন রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব। খুব তাড়াতাড়ি শুভেন্দুকে কোনও পদে বসানো হবে বলেই মনে করা হচ্ছে। সেটা বিধানসভা নির্বাচনের আগেও হতে পারে বলে অনেকে মনে করছেন। দলের একাংশ মনে করছে, শনিবার দিলীপের বক্তব্যেও তেমনই ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছে। শুক্রবারই দিল্লিতে অমিত শাহর সঙ্গে বৈঠক করেছেন দিলীপ-মুকুলরা। সেখানে এ নিয়ে কোনও আলোচনা হয়েছে কিনা তা খোলসা না করলেও শুভেন্দুর পদ নিয়ে যে নেতৃত্ব আলোচনা শুরু করেছেন, তা বুঝিয়ে দিয়েছেন দিলীপ।
আরও পড়ুন: ভোটের আগে রদবদল তৃণমূল ছাত্র পরিষদে
অন্য দিকে, তৃণমূল-সহ অন্য রাজনৈতিক দল থেকে যাঁরা বিজেপি-তে যোগ দিতে পারেন বলে জল্পনা, তাঁদের উদ্দেশেও শনিবার বার্তা দিয়েছেন দিলীপ। দলের সদর দফতরে সাংবাদিক বৈঠকে তিনি বলেন, ‘‘এমন লোকদেরই দলে নেওয়া হবে, যাঁরা আমাদের কাজে লাগবেন এবং সমাজের কাজের উপযোগী।’’ চলতি সপ্তাহেই আগে দল বড় করে পরে ছাঁকনি ব্যবহারের কথা বলেছিলেন দিলীপ। প্রতিদিনই বলছেন ‘সকলকে স্বাগত’। কিন্তু শনিবার এমন অন্য সুরের কারণ কী? অমিতের সঙ্গে বৈঠকেই কি এই সিদ্ধান্ত? দিলীপ জানান, কোনও ব্যক্তি নিয়ে বৈঠকে আলোচনা না হলেও, যে চাইবে তাকেই নেওয়া হবে এমনটা নয়। একই সঙ্গে দিলীপ বলেন, ‘‘রাজনীতিতে সব সময় ক্যারেক্টার সার্টিফিকেট দিয়ে কাউকে নেওয়া যায় না। আমাদেরও লোক দরকার। বিশেষ বিশেষদের জন্য আলাদা ব্যাপার। কিন্তু একটু দেখে নেওয়াই নীতি এখন।’’ বরাবর ‘বিজেপির জন্য সবার দরজা খোলা’ বলা দিলীপের শনিবারের মন্তব্য, ‘‘দরজা বড় করে খোলা ছিল। তার পর ছোট হবে। এক সময় বন্ধও হবে।’’
আরও পড়ুন: করোনা টিকার আবাহনের দিন বিয়োগ বিসর্জন মনে পড়ছে ওঁদের
তৃণমূল সাংসদ শতাব্দী রায় ও রাজ্যের মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে জল্পনা প্রসঙ্গে দিলীপের মন্তব্য, ‘‘অনেক মক ফাইটও হচ্ছে। কেউ কেউ দাম বাড়ানোর জন্য নানা কিছু করছেন। তৃণমূলে রোজ ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট মিটিং হচ্ছে। যাঁরা হতাশ, তাঁরা চলে আসুন। বিজেপি-তে স্বাগত।’’ তবে সকলকেই যে স্বাগত জানানো হবে না, তা বোঝাতে দিলীপ এ-ও বলেন, ‘‘অনেকেরই টিকিটা কাটা হয়ে গিয়েছে। কিন্তু এখনও কনফার্মেশন হয়নি।’’