রাজীব কুমার। বৃহস্পতিবার ধামাখালিতে। —নিজস্ব চিত্র।
সন্দেশখালি থেকে সকাল ১০টায় সাংবাদিক বৈঠক করার কথা ছিল রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমারের। জল্পনা ছিল যে, সেখান থেকেই ‘বড় ঘোষণা’ করতে পারেন তিনি। তবে নির্ধারিত সেই বৈঠক বাতিল করে কলকাতায় ফিরে গেলেন তিনি।
বৃহস্পতিবার সকালে অবশ্য জলপথে বেশ কয়েকটি দ্বীপ ঘুরে দেখেন রাজীব। কথা বলেন পুলিশ, সিভিক পুলিশদের একাংশের সঙ্গেও। বৃহস্পতিবার সকালে লঞ্চে করে পরিদর্শনে বেরোনোর আগে রাজীব সংবাদমাধ্যমকে বলেন, “যাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে, তাঁরা সবাই গ্রেফতার হবেন। যাঁরা আইন ভেঙেছেন, তাঁরা গ্রেফতার হবেন।” সন্দেশখালি ছাড়ার আগেও তিনি বলেন যে, “পুরো এলাকায় ঘুরে ঘুরে মানুষের সঙ্গে কথা বলেছি। জমি দখল-সহ যে সমস্ত অভিযোগ উঠেছে, সেগুলি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” সাধারণ মানুষের উদ্দেশে তাঁর বার্তা, “আপনারা পুলিশ-প্রশাসনকে সাহায্য করুন। পুলিশ সমস্ত অভিযোগ খতিয়ে দেখছে। আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ করা হবে।” তবে সন্দেশখালির ‘নিখোঁজ’ তৃণমূল নেতা শাহজাহান শেখের গ্রেফতারির বিষয়ে কিছু বলেননি রাজীব।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই সন্দেশখালির বিস্তীর্ণ এলাকায় টহল দিতে দেখা যায় ডিজিকে। পূর্ত দফতরের বাংলো থেকে বেরিয়ে ধামাখালির লঞ্চঘাটের উদ্দেশে রওনা দেন তিনি। তার পর আবার লঞ্চ নিয়েই যান ছোট শেয়ারা এলাকার দিকে। লঞ্চে উঠে টহল দিতে বেরোনোর আগে ডিজি বলেন, “আমরা এখানে এসেছি সকলের সঙ্গে কথা বলতে। আমাদের দিক থেকে যা যা করণীয়, অবশ্যই আমরা তা করব। যে সমস্যা আছে, আমরা তা শোনার এবং সমাধান করার চেষ্টা করছি।” কাউকে আইন হাতে তুলে না নেওয়ার আর্জি জানিয়ে তাঁর সংযোজন, “কারও যদি কোনও সমস্যা থাকে, অভিযোগ থাকে, তবে আমরা সব সময় রয়েছি সেগুলির সমাধান করার জন্য।’’
বুধবারই সন্দেশখালির পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে যান রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব। তাঁর সঙ্গে ছিলেন এডিজি (দক্ষিণবঙ্গ) সুপ্রতিম সরকার এবং বসিরহাটের পুলিশ সুপার হোসেন মেহেদি রহমান। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি-সহ একাধিক বিষয়ে পুলিশ আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন তাঁরা। পাশাপাশি সন্দেশখালির পাঁচটি জায়গায় মোট দশটি সিসি ক্যামেরা লাগানো হয়। নতুন করে যাতে কোনও রকম অশান্তি না ছড়ায়, সেই নজরদারির জন্যই এই বন্দোবস্ত হয়েছে। প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবারই জাতীয় তফসিলি উপজাতি কমিশনের তিন সদস্যের প্রতিনিধিদল সন্দেশখালিতে এসেছেন। গ্রামবাসীদের সঙ্গে কথা বলছেন তাঁরা। এর আগে সন্দেশখালির পরিস্থিতি সরেজমিনে খতিয়ে দেখতে এসেছিল জাতীয় তফসিলি জাতি কমিশন এবং জাতীয় মহিলা কমিশন।