ডেরেক। ফাইল চিত্র
পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনের ঢাকে কাঠি দিতে চলেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। আগামীকাল তাঁর অনলাইন প্রচার পশ্চিমবঙ্গে। সূত্রের খবর, সেখানে তিনি বলবেন, কী ভাবে জীবনের ঝুঁকি নিয়েও নরেন্দ্র মোদী আমপানের ক্ষয়ক্ষতি দেখতে গিয়েছিলেন। তার আগে আজ মহাত্মা গাঁধী জাতীয় গ্রামীণ কর্মসংস্থান নিশ্চয়তা যোজনা বা মনরেগা-কে দুর্বল করে দেওয়ার অভিযোগ তুলে পাল্টা তোপ দেগে রাখল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল।
২০১৫ সালে মোদীর সংসদীয় বক্তৃতার একটি ক্লিপ তুলে ধরে তৃণমূলের পক্ষ থেকে সাংবাদিক সম্মেলন করে বলা হল, মনরেগা নিয়ে ব্যঙ্গ করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। বলেছিলেন, গত ষাট বছরে কংগ্রেস সরকার এতটাই ব্যর্থ যে গর্ত খোঁড়ার প্রকল্প নিতে হচ্ছে। তৃণমূল নেতৃত্বের বক্তব্য, এই লকডাউন পর্বে হালে পানি না পেয়ে এবং গ্রামীণ অর্থনীতির চাকা ঘোরাতে সেই মনরেগা-র কথাই মনে পড়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের। কিন্তু মোদী-শাহর গুজরাতে এই প্রকল্প মুথ থুবড়ে পড়েছে। গত পাঁচ বছরে মনরেগা দুর্বল হয়ে পড়ার পিছনে মোদী সরকারকেই দায়ী করেছে তৃণমূল। তৃণমূলের রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ও ব্রায়েন-এর কথায়, “সরকার দাবি করছে, তারা মনরেগাকে শক্তিশালী করছে। কিন্তু কোভিডের আগে পর্যন্ত যা পরিসংখ্যান, তাতে দেখা যাচ্ছে সরকার এই প্রকল্পকে দুর্বল করেছে।’’
তৃণমূল নেতৃত্বের বক্তব্য, গত তিন বছরে মনরেগায় মোট ব্যয় বরাদ্দ এবং খরচ গুজরাতের থেকে অনেক বেশি করেছে পশ্চিমবঙ্গ। ডেরেক জানিয়েছেন, মনরেগা প্রকল্পে কর্মসংস্থানের প্রশ্নে মমতা এগিয়ে রয়েছেন। তাঁর কথায়, জাতীয় স্তরে মনরেগায় কর্মদিবসের গড় যেখানে ১.৭১ কোটি, সেখানে বাংলায় এই সংখ্যাটা ৪.৭১ কোটি। অর্থাৎ ১৭৪ শতাংশ বেশি। সাম্প্রতিক প্রতিকূলতার মধ্যেও পশ্চিমবঙ্গে মনরেগার কর্মদিবস এপ্রিলে থেকেছে ১.২৫ কোটি (জাতীয় স্তরে তৃতীয়), মে মাসে থেকেছে ৩.৪৬ কোটি (জাতীয় স্তরে ষষ্ঠ)। ডেরেকের বক্তব্য, “কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী মনরেগা প্রকল্পের জন্য অতিরিক্ত ৪০ হাজার কোটি টাকা ঘোষণা করেছেন। আমাদের বক্তব্য, এই অর্থের ১১৫০০ কোটি টাকা হল গত বছরের বকেয়া।’’
‘রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে’ কেন্দ্রকে কিছু ‘পরামর্শ’ও দিতে চেয়েছেন তৃণমূল মুখপাত্র। তাঁর কথায়, “এই প্রকল্পে নথিভুক্ত প্রত্যেকটি কর্মীকে ১০০ দিনের কাজ দিতে হবে, ৪০ বা ৫০ দিন নয়। দুই, কাজের ভাতা ফের সংশোধন করে বাড়ানো প্রয়োজন। এখন যে ২২০ টাকা রয়েছে, তা জাতীয় প্রশিক্ষণহীন শ্রমিকভাতার তুলনায় ৫০ শতাংশ কম। এই ভাতাকে গ্রামের বাজারদরের সঙ্গে সংযুক্ত করতে হবে। তিন, কাজ শেষ হওয়ার পনেরো দিনের মধ্যে টাকা মিটিয়ে দিতে হবে।’’