প্রতীকী চিত্র।
কোয়ার্টার লিজ় ও লাইসেন্স দেওয়ার দাবিতে দুর্গাপুর স্টিল প্ল্যান্টের (ডিএসপি) প্রাক্তন কর্মীরা আড়াই সপ্তাহেরও বেশি নগর প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান করছেন। শনিবার এ বিষয়ে শ্রমিক সংগঠনগুলিকে বৈঠকে ডেকেছিলেন ডিএসপি কর্তৃপক্ষ। কিন্তু কর্তৃপক্ষের প্রস্তাব মানা সম্ভব হয়নি বলে সংগঠনগুলি জানায়।
ডিএসপি সূত্রে জানা যায়, সংস্থার প্রাক্তন শ্রমিকদের নির্দিষ্ট অর্থের বিনিময়ে কোয়ার্টার লিজ় বা লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে অতীতে। তবে এখনও হাজারের উপরে প্রাক্তন শ্রমিক ও তাঁদের পরিবার লিজ় বা লাইসেন্স ছাড়া, বাস করছেন ডিএসপি-র কোয়ার্টারে। তাই তাঁদের গ্র্যাচুইটির টাকা আটকে রেখেছেন কর্তৃপক্ষ। দ্রুত ওই কোয়ার্টার লিজ় ও লাইসেন্সের দাবিতে দীর্ঘদিন আন্দোলন চালাচ্ছে প্রাক্তন কর্মীদের সংগঠন ও বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনগুলি।
শনিবার সিটু, আইএনটিইউসি, বিএমএস, এআইটিইউসি, আইএনটিটিইউসি, এআইইউটিইউসি, এই ছ’টি সংগঠনের পাশাপাশি, এইচএমএসকে-ও বৈঠকে ডাকা হয়। গত ইউনিয়ন স্বীকৃতির নির্বাচনে যোগ দেয়নি এইচএমএস। গতবার কোয়ার্টার সংক্রান্ত বৈঠকেও তাদের ডাকা হয়নি। তাই এই বৈঠকে এইচএমএস-কে কেন ডাকা হয়েছে, সে প্রশ্ন তোলে অন্য সংগঠনগুলি। আপত্তি জানিয়ে আইএনটিটিইউসি-র প্রতিনিধিরা বৈঠক ছেড়ে বেরিয়ে যান।
শেষমেশ অন্য শ্রমিক সংগঠনগুলির কাছে কর্তৃপক্ষ কিছু প্রস্তাব রাখেন। কর্তৃপক্ষ জানান, টাউনশিপে অব্যবহৃত ও ফাঁকা ৬৯৬টি কোয়ার্টার চিহ্নিত করা হয়েছে। ১৯৯৯-এর পরে অবসর নেওয়া এবং আগামী ছ’মাসের মধ্যে অবসর নেবেন এমন কর্মীদের মধ্যে তা বিলি করা হবে। ২০১৬-র ৩০ জুলাই ‘সেল’ যে নির্দেশিকা জারি করেছিল, তার সঙ্গে সঙ্গতি রেখেই এই প্রস্তাব বলে দাবি করা হয়। প্রাথমিক ভাবে ৩৩ মাসের জন্য লাইসেন্স দেওয়া হবে।
কিন্তু কর্তৃপক্ষের এই প্রস্তাবে আপত্তি জানায় শ্রমিক সংগঠনগুলি। সিটু নেতা সৌরভ দত্ত বলেন, ‘‘বৈঠকে উপস্থিত সিটুর প্রতিনিধি বিশ্বরূপ বন্দ্যোপাধ্যায় ও প্রফুল্ল মণ্ডল জানিয়ে দেন, যিনি যে কোয়ার্টারে আছেন, তাঁকে সেই কোয়ার্টারই দিতে হবে। প্রাক্তনদের পাশাপাশি, বর্তমান কর্মীদেরও এই সুবিধা দিতে হবে। বহু সংস্থা কোয়ার্টার দখল করে বসে আছে। সেগুলি পুনরুদ্ধার করতে হবে। তা ছাড়া, যদি কেউ কোয়ার্টার নিতে ইচ্ছুক না হন, সে ক্ষেত্রে ডিএসপি-র অব্যবহৃত জমিতে কর্মীদের সমবায়কে আবাসন তৈরির সুযোগ করে দিতে হবে।’’ বিএমএস নেতা অরূপ রায়ও এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করেন। দুর্গাপুর পূর্ব বিধানসভায় বিজেপি-র জেলা কমিটির আমন্ত্রিত সদস্য অমিতাভ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘কিছু শ্রমিক সংগঠন দু’ধরনের কোয়ার্টারের দাবিতে আন্দোলন করছে। ফলে, বাকি কর্মীরা বঞ্চিত হবেন। আমরা চাই, সব ধরনের কোয়ার্টারই লিজ় বা লাইসেন্স দেওয়ার নীতি নিক ডিএসপি।’’
কোয়ার্টার নিয়ে ফের বৈঠক হবে বলে ডিএসপি জানিয়েছে। এর আগে এ বিষয়ে ডিএসপি কর্তৃপক্ষ বৈঠকে বসেছিলেন ২০১৮-র ২৩ জুন। কিন্তু সে বৈঠকেও কোনও সমাধানসূত্র বেরোয়নি।