ফাইল চিত্র।
পশ্চিমবঙ্গের মতো রাজ্যে একশো দিনের কাজের চাহিদা ২০২১-এর অধিকাংশ সময়ই ২০২০-র তুলনায় কম ছিল। উল্টো দিকে মহারাষ্ট্র, পঞ্জাব, কর্নাটক, তামিলনাড়ুর মতো যে সব রাজ্যে পশ্চিমবঙ্গ-বিহার থেকে পরিযায়ী শ্রমিকরা কাজ করতে যান, সেখানে একশো দিনের কাজের চাহিদা বেশি ছিল।
এত দিন মনে করা হত, যে সব রাজ্য থেকে পরিযায়ী শ্রমিকরা বেশি সংখ্যায় অন্যত্র কাজ করতে যান, লকডাউনের পরে তাঁরা গ্রামে ফেরায় ওই সব রাজ্যগুলিতেই একশো দিনের কাজের প্রকল্পে চাহিদা বেড়েছে। কিন্তু আজ আর্থিক সমীক্ষা জানিয়েছে, পরিযায়ী শ্রমিকদের ঘরে ফেরা আর একশো দিনের কাজ বা এমজিএনআরইজিএ প্রকল্পে কাজের চাহিদার মধ্যে কোনও সরাসরি সম্পর্ক দেখা যাচ্ছে না। আর্থিক সমীক্ষার রচয়িতা প্রিন্সিপাল আর্থিক উপদেষ্টা সঞ্জীব স্যান্যালের বক্তব্য, আপাত ভাবে মনে হয়, যে সব রাজ্যে পরিযায়ী শ্রমিকেরা বেশি সংখ্যায় ফিরেছেন, সেখানে একশো দিনের কাজের চাহিদা বেশি হবে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, যে সব রাজ্যে পরিযায়ী শ্রমিকরা কাজ করতে যান, বা যেখান থেকে ফিরে গিয়েছেন, সেখানে একশো দিনের কাজের চাহিদা ২০২০-র তুলনায় বেশি। গত দু’বছরে পরিযায়ী শ্রমিকদের যাতায়াত ও একশো দিনের কাজের চাহিদার মধ্যে তাই সরাসরি সম্পর্ক নির্দিষ্ট ভাবে প্রতিষ্ঠা করা যাচ্ছে না। এ বিষয়ে আরও গবেষণা দরকার।
কোভিডের প্রথম ঢেউয়ের সময়ে, ২০২০ সালে লকডাউনে শহর থেকে পরিযায়ী শ্রমিকরা কাজ হারিয়ে গ্রামে ফিরেছিলেন। পশ্চিমবঙ্গ, বিহার, ওড়িশা, মধ্যপ্রদেশের মতো যে সব রাজ্যের পরিযায়ী শ্রমিকরা বাইরে কাজ করতে যান, তাঁরা ফিরে যাওয়ায় সেখানে একশো দিনের কাজের প্রকল্পে চাহিদা বিপুল ভাবে বেড়ে যায়। কারণ, কাজ হারানো মানুষের কাছে একশো দিনের কাজের প্রকল্পের মজুরিই একমাত্র পেট চালানোর উপায় হয়ে উঠেছিল। যার ফলে ২০২০-২১-এ মোদী সরকারকে একশো দিনের কাজের প্রকল্পে রেকর্ড পরিমাণ ১.১ লক্ষ কোটি টাকা বরাদ্দ করতে হয়।
গত বাজেটে চলতি অর্থ বছরের জন্য একশো দিনের কাজে অর্থমন্ত্রী প্রথমে ৭৩ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করেছিলেন। কিন্তু পরে কাজের চাহিদা না কমায় ডিসেম্বরে আরও ২৫ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করতে হয়েছে। কারণ, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড পুরোপুরি শুরু না হওয়ায় গ্রামের অনেক মানুষই এখনও শহরে ফেরেননি। এখনও পর্যন্ত ৮.৭০ কোটি ব্যক্তি ও ৬.১০ কোটি পরিবারকে এখনও পর্যন্ত কাজ দেওয়া হয়েছে।
অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন, আগামী অর্থ বছরেও একশো দিনের কাজের প্রকল্পে মোদী সরকারকে বিপুল পরিমাণে অর্থ খরচ করতে হবে। ব্যয় বরাদ্দ বাড়াতে হবে।