ফাইল চিত্র।
কৃষ্ণনগর উত্তর কেন্দ্রের বিধায়ক মুকুল রায়ের দলত্যাগ-মামলার শুনানি আনুষ্ঠানিক ভাবে শেষ হল বিধানসভায়। ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহের মধ্যেই মুকুলের বিধায়ক-পদ সংক্রান্ত আবেদনের নিষ্পত্তি হয়ে যাবে বলে পরিষদীয় সূত্রের খবর। তবে রায় দেওয়ার আগে আবেদনকারী বিজেপির আইনজীবীদের চূড়ান্ত বক্তব্য জানানোর জন্য এক দিন সময় দিয়েছেন স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। সুপ্রিম কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ দু’দিন আগেই মন্তব্য করেছে, ফেব্রুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহের মধ্যে বিধানসভায় মুকুল সংক্রান্ত আবেদনের নিষ্পত্তি হয়ে যাবে বলে তারা ‘আশাবাদী’।
স্পিকারের ঘরে বুধবার দলত্যাগ সংক্রান্ত শুনানিতে ছিলেন মুকুলের তরফে দুই আইনজীবী সায়ন্তক দাস ও আরিফ আলি। বিজেপির তরফে ছিলেন দলের আইনজীবী-বিধায়ক অম্বিকা রায় ও আইনজীবী বিল্বদল ভট্টাচার্য। সূত্রের খবর, বিধায়ক-পদ খারিজের দাবি কেন গ্রহণযোগ্য হওয়া উচিত নয়, তার পক্ষে এ দিন ফের যুক্তি পেশ করেছেন মুকুলের আইনজীবীরা। পরে সায়ন্তক বলেন, ‘‘আমরা আমাদের যাবতীয় যুক্তি স্পিকারের কাছে জানিয়েছি। তার পরে বিজেপির পরিষদীয় দল কিছু বক্তব্য জানাতে চেয়েছে।’’ সেই বক্তব্য জানানোর দিন ধার্য হয়েছে ২৮ জানুয়ারি।
স্পিকার বিমানবাবুর বক্তব্য, ‘‘বিষয়টি দীর্ঘ দিন ধরে চলছে। শুনানি শেষ হল আজ। আগামী ২৮ তারিখ অভিযোগের পক্ষে একটি জবাব শোনার কথা। তার পরে সুপ্রিম কোর্টের কথা মতো দ্রুত নিষ্পত্তি করে দেব।’’ বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী অবশ্য বুঝিয়ে দিয়েছেন, বিধানসভার শুনানিতে অংশগ্রহণ করলেও তাঁরা সুপ্রিম কোর্টের দিকেই তাকিয়ে আছেন। শুভেন্দুর মন্তব্য, ‘‘কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতির হস্তক্ষেপ না হলে স্পিকার বা সরকার পক্ষ সুপ্রিম কোর্টে যেত না। সুপ্রিম কোর্ট সময় ধরে চলছে। আমরা এখন সুপ্রিম কোর্টের শুনানির জন্যই অপেক্ষা করছি। আমরা আশাবাদী, সংবিধানের দশম তফসিলের সম্মান ও মর্যাদা রক্ষিত হবে।’’ তাঁর আরও সংযোজন, ‘‘আইন মেনে চলি বলে বিধানসভার এই শুনানিতে আমরা অংশগ্রহণ করছি। তবে এই প্রক্রিয়া নিয়ে আমাদের খুব বেশি উৎসাহ নেই।’’
প্রসঙ্গত, ‘দলত্যাগী’ বিধায়ক মুকুলকে কেন বিজেপির প্রতিনিধি হিসেবে দেখিয়ে বিধানসভার পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির (পিএসি) মাথায় বসানো হয়েছে, সেই প্রশ্ন তুলে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন বিজেপি বিধায়ক অম্বিকা। হাই কোর্ট স্পিকারের সিদ্ধান্ত জানতে চাওয়ায় বিধানসভার বিষয়ে আদালতের এমন এক্তিয়ার আছে কি না, সেই পাল্টা প্রশ্ন তুলে আবেদন হয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। সর্বোচ্চ আদালত ফেব্রুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহে পরবর্তী শুনানি করবে। তার মধ্যে বিধানসভায় মুকুল-বিষয়ে ফয়সালা হবে বলে আগের শুনানিতে ‘আশাপ্রকাশ’ করেছেন সুপ্রিম কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের দুই বিচারপতি।