নবান্ন মজুরি বৃদ্ধি করলেও মিলছে না বলে অভিযোগ। — ফাইল চিত্র।
রাজ্যে সরকারি কর্মচারীরা কেন্দ্রীয় হারে মহার্ঘ ভাতার (ডিএ) দাবিতে দীর্ঘ দিন আন্দোলন করে চলেছেন। বকেয়া মহার্ঘ ভাতার দাবিতেও সরব তাঁরা। কিন্তু বাংলাতেই দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে সরকারি দফতরে কর্মরতদের প্রাপ্তি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। নিয়ম অনুযায়ী প্রতি বার ডিএ বৃদ্ধির সঙ্গে মজুরিও বাড়ানো হয়। অভিযোগ উঠেছে, রাজ্য সরকার সেই সিদ্ধান্ত নিলেও দিনমজুর কর্মীরা বর্ধিত মজুরি পাচ্ছেন না সরকারি কর্মীদের একাংশের কারণে।
প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের মার্চ মাস থেকে এখনও পর্যন্ত তিন দফায় ১১ শতাংশ ডিএ বৃদ্ধি করেছে রাজ্য সরকার। সেই সুবিধা পেয়েছেন অবসরপ্রাপ্তরাও। প্রথমে ২০২৩ সালের মার্চ মাসে তিন শতাংশ ডিএ বৃদ্ধি পায়। সেই সময়ে দিনমজুরদের দৈনিক আয় ১৭ টাকা করে বৃদ্ধি পায়। এর পরে চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে রাজ্য সরকার ৪ শতাংশ ডিএ বৃদ্ধি করা হলে ফের ২২ শতাংশ মজুর বৃদ্ধি পায়। সরকারি নির্দেশ অনুসারে দৈনিক মজুরি ৪২১ টাকা থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ৪৪৩ টাকা হয়।
রাজ্যের জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতরে বড় সংখ্যায় এই ধরনের কর্মী রয়েছেন। তাঁরা ভাল্ব ও পাম্প চালানোর কাজ করেন। সেই সঙ্গে পঞ্চায়েত ও পুরসভা এলাকায় দফতরের বিভিন্ন জলপ্রকল্পে রক্ষীর কাজ যাঁরা করেন তাঁরাও দৈনিক হারে মজুরি পান। তাঁদের সকলেরই মজুরি বৃদ্ধির নির্দেশ দফতরের তরফে জারি করা হলেও কর্মীরা হাতে বর্ধিত টাকা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ ভাল্ব এবং পাম্প অপারেটর সংগঠনের। এক শ্রেণির ঠিকাদার এবং আমলার জন্যই এই বঞ্চনা দাবি করে সংগঠনের উপদেষ্টা মনোজ চক্রবতী বলেন, ‘‘দফতর এই দুই ক্ষেত্রে মজুরি বৃদ্ধির আদেশনামা বার করলেও দুর্ভাগ্যবশত কিছু ঠিকাদার এবং এক শ্রেণির আমলার নিষ্ক্রিয়তার জন্য তা এখনও পর্যন্ত কার্যকর হয়নি।’’ এ নিয়ে তিনি দফতরের মুখ্য ইঞ্জিনিয়ারের কাছে অভিযোগ করেছেন বলেও জানান মনোজ। তবে সরকারের সদিচ্ছার কোনও অভাব রয়েছে এমন অভিযোগ নেই সংগঠনের। বিষয়টি জানার পরে দফতরের মন্ত্রী পুলক রায় আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেন, ‘‘বিষয়টা আমার দেখছি। কত দ্রুত সমাধান করা যায় সেটাও দেখছি।’’
গত ৬ জুন নির্দেশিকা জারি হয়েছে, ১ জানুয়ারি থেকে বৃদ্ধি পাওয়া ২২ টাকা হারে সকলের মজুরি বৃদ্ধি করতে হবে। তবে তার আগের বৃদ্ধি পাওয়া ১৭ টাকাই এখনও অনেকের ক্ষেত্রে বাড়েনি বলে অভিযোগ। একই সঙ্গে অভিযোগ, জানুয়ারি মাসে যে বৃদ্ধি তা এখনও চালুই হয়নি। আর গত এপ্রিল মাস থেকে নতুন চার শতাংশ ডিএ বৃদ্ধির ফলে মজুরি ২২ টাকা বৃদ্ধির নির্দেশিকা এখনও জারি হয়নি। এর ফলে মাসিক বেতনের সরকারি কর্মীরা অতিরিক্ত ডিএ পেতে শুরু করলেও দিনমজুরেরা প্রাপ্য ৪৪ টাকা করে পাচ্ছেন না প্রতি দিন। অনেকের ক্ষেত্রে দৈনিক বকেয়ার পরিমাণ ৬১ টাকা। তাঁরা ২০২৩ সালে বৃদ্ধি পাওয়া দৈনিক ১৭ টাকাও পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ।