India-Russia Relationship

সমুদ্রে উপস্থিতি নিয়ে রাশিয়ার সঙ্গে চুক্তি করছে ভারত, আমেরিকার চোখরাঙানি এড়াতে পারবে নয়াদিল্লি?

ভারত এবং রাশিয়ার বন্ধুত্ব সব সময়ই বিশ্ব কূটনৈতিক মহলের আলোচনায় থাকে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে একে অপরের উপর নির্ভরশীল নয়াদিল্লি এবং মস্কো। অস্ত্র থেকে তেল— বিভিন্ন কিছু গুরুত্বপূর্ণ পণ্য রাশিয়া থেকে আমদানি করে ভারত।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ জুন ২০২৪ ১৫:৩০
Share:
০১ ২০

রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের বন্ধুত্ব আরও গভীর হতে চলেছে। কিন্তু এই বন্ধুত্বের খেসারত কি ভবিষ্যতে ভারতকে দিতে হবে? এখন এটাই বড় প্রশ্ন। তবে সেই আশঙ্কার কালো মেঘের মধ্যেই মস্কোর দিকে নয়াদিল্লি বন্ধুত্বের হাত আরও বাড়িয়ে দিতে চলেছে।

০২ ২০

সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, ভারত এবং রাশিয়া খুব শীঘ্রই একটি দ্বিপাক্ষিক চুক্তি স্বাক্ষর করতে চলেছে। এই চুক্তির ফলে দুই দেশ পারস্পরিক সামরিক সহযোগিতা উপভোগ করবে।

Advertisement
০৩ ২০

ভারত এবং রাশিয়ার বন্ধুত্ব সব সময়ই বিশ্ব কূটনৈতিক মহলের আলোচনার বিষয়। বিভিন্ন ক্ষেত্রে একে অপরের উপর নির্ভরশীল নয়াদিল্লি এবং মস্কো। অস্ত্র থেকে তেল— বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পণ্য রাশিয়া থেকে আমদানি করে ভারত। তেমন ভারতও বিশ্ব মঞ্চে রাশিয়ার পাশে থেকেছে বার বার।

০৪ ২০

শোনা যাচ্ছে, সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে ভারত এবং রাশিয়া নিজেদের মধ্যে সামরিক সহযোগিতা চুক্তি স্বাক্ষর করবে শীঘ্রই। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, এই চুক্তির ফলে ভারত এবং রাশিয়ার কী উপকার হবে?

০৫ ২০

বিশ্বের বিভিন্ন দেশ একে অপরের সঙ্গে সামরিক সহযোগিতা চুক্তি স্বাক্ষর করে থাকে। এই চুক্তির ফলে দেশগুলি একে অপরের সামুদ্রিক সীমান্ত ব্যবহার করতে পারে। শুধু তা-ই নয়, যুদ্ধজাহাজে তেল ভরানো, মেরামতি থেকে বন্দর ব্যবহার— একাধিক বিষয়ের অনুমতি থাকছে এই চুক্তিতে।

০৬ ২০

এই চুক্তি স্বাক্ষর হলে, ভারতীয় জলসীমা ব্যবহারে আর কোনও বাধা থাকবে না রাশিয়ার। আরব সাগর হোক বা ভারত মহাসাগর, কিংবা বঙ্গোপসাগর— রাশিয়া সব জায়গাতেই নিজেদের আধিপত্য বিস্তার করতে পারবে।

০৭ ২০

এতে রাশিয়ার কী সুবিধা হবে? এত দিন ভারত মহাসাগরে রাশিয়ার তেমন উপস্থিতি ছিল না। ওই পথে কোনও জাহাজ চালাতে পারত না তারা। তবে এ ব্যাপারে রাশিয়ারও তেমন উৎসাহ ছিল না।

০৮ ২০

কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতির দিকে নজর রেখে রাশিয়া ভারত মহাসাগরে নিজেদের আধিপত্য বিস্তার করতে চায়। এত দিন, সুদানের সঙ্গে রাশিয়ার সামরিক সহযোগিতা চুক্তি ছিল। এতে লোহিত সাগরে নিজেদের আধিপত্য বজায় রেখেছিল মস্কো।

০৯ ২০

তবে এখন রাশিয়া বুঝতে পেরেছে, শুধু ওইটুকু অংশে সুবিধা নিয়ে থাকলে বিশেষ লাভ হবে না। ভারত মহাসাগরেও উপস্থিতি বৃদ্ধি করতে হবে। সেই ভাবনা থেকেই ভারতের সঙ্গে নতুন চুক্তি স্বাক্ষর করতে চলেছে মস্কো।

১০ ২০

২০২২ সাল থেকে ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে রাশিয়া। এখনও পর্যন্ত যুদ্ধ থামার কোনও লক্ষণ নেই। এই যুদ্ধের ফলে আমেরিকা, ব্রিটেন, জাপান-সহ প্রথম বিশ্বের দেশগুলির সঙ্গে রাশিয়ার সম্পর্ক তিক্ততার পর্যায়ে পৌঁছেছে। বহু দেশই রাশিয়াকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে।

১১ ২০

বাণিজ্যিক দিক থেকে রাশিয়া বিশ্ব বাজারে বড় ধাক্কা খেয়েছে। চাপে পড়েছে অর্থনীতির দিক দিয়েও। অন্যান্য দেশের কাছে রাশিয়ার যা সম্পদ মজুত আছে তা ফ্রিজ় করে দেওয়া হয়েছে। সেগুলি ব্যবহার করতে না পারায় সমস্যায় পড়েছে মস্কো।

১২ ২০

এই অবস্থায় ভারত মহাসাগরে উপস্থিতির জানান দেওয়া রাশিয়ার কাছে বড় প্রাপ্তি। এ বার থেকে এই পথে যেমন ব্যবসা চালাতে পারবে রাশিয়া, তেমনই সেখানে নিজেদের যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করে রাখতে পারবে। বিভিন্ন দিকে নজরদারিও চালাতে পারবে।

১৩ ২০

ভারতীয় জলসীমায় যদি রাশিয়ার কোনও যুদ্ধজাহাজ থাকে, তবে তার রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব ভারতেরই। এই চুক্তি এক বার স্বাক্ষর হলে তার মেয়াদ ফুরোলে স্বয়ংক্রিয় ভাবে তা নবীকরণ হতে থাকবে। তবে যদি দু’দেশের মধ্যে কেউ আপত্তি তোলে তবে চুক্তি বানচালও হতে পারে।

১৪ ২০

রাশিয়ার মতো ভারতও এই চুক্তি থেকে ফায়দা তুলতে পারে। তবে কূটনৈতিক মহলের মতে, এই চুক্তিতে সবচেয়ে বেশি লাভবান হবে রাশিয়াই। কারণ রাশিয়ার জলসীমা ব্যবহার করে ভারতের খুব একটা উপকার হবে না।

১৫ ২০

শুধু রাশিয়া নয়, ভারত অতীতে অন্যান্য দেশের সঙ্গেও এই ধরনের চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। সেই তালিকায় রয়েছে আমেরিকা, ফ্রান্স, অস্ট্রেলিয়া, জাপান, সিঙ্গাপুর, দক্ষিণ কোরিয়া, ওমানের সঙ্গে দেশ।

১৬ ২০

কূটনৈতিক মহলের মতে, রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের সামরিক সহযোগিতা চুক্তি হলে ‘রেগে’ যেতে পারে আমেরিকা। রাশিয়া-আমেরিকার সম্পর্ক যে ভাল নয় তা সর্বজনবিদিত। বিশ্বযুদ্ধের সময় থেকেই একে অপরের বিপক্ষে থেকেছে তারা।

১৭ ২০

ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে সেই সম্পর্ক আরও তলানিতে ঠেকেছে। আমেরিকা ইউক্রেনের পাশে থাকার কথা ঘোষণা করেছে। এমনকি, সব রকম ভাবে সাহায্য করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। রাষ্ট্রপুঞ্জেও রাশিয়ার বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছে আমেরিকা।

১৮ ২০

কিন্তু এত কিছুর মধ্যেও যুদ্ধ নিয়ে ভারত কখনই রাশিয়ার বিপক্ষে যায়নি। ২০২২ সাল থেকেই ইউক্রেনের উপরে রাশিয়ার একতরফা আক্রমণের বিরোধিতায় মুখর হয়নি ভারত। বরং আমেরিকা, ব্রিটেন-সহ একাধিক দেশ নিষেধাজ্ঞা জারি করলেও ভারতকে সে ভাবে রাশিয়ার বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলতে শোনা যায়নি।

১৯ ২০

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের নিন্দা করলেও কারও পক্ষে দাঁড়ায়নি নয়াদিল্লি। রাষ্ট্রপুঞ্জে দাঁড়িয়েও তেমন ভাবে সোচ্চার হয়নি তারা। এমনকি, ইউক্রেন যুদ্ধ থামানোর উদ্দেশ্যে সম্প্রতি সুইৎজ়ারল্যান্ডে অনুষ্ঠিত শান্তি বৈঠকে প্রতিনিধি পাঠালে যৌথ বিবৃতিতেও সই করেনি ভারত।

২০ ২০

অনেকের মতে, বিবৃতিতে সই না করে রাশিয়াকে বার্তা দিয়েছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। তারা বোঝাতে চেয়েছে, ভারত আগের মতোই রাশিয়ার পাশে থাকবে। সেই আবহেই নতুন চুক্তি স্বাক্ষরিত হতে পারে দুই বন্ধুর মধ্যে।

সব ছবি: সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement