বকেয়া ডিএ বা মহার্ঘ ভাতার দাবিতে ধর্নার সঙ্গে সঙ্গে অনশনও চলছে। ফাইল চিত্র।
শহিদ মিনার ময়দানে তাঁরা ধর্না-আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন কলকাতা হাই কোর্টের অনুমতি নিয়ে। তাই তৃণমূল কংগ্রেসের ২৯ মার্চের সমাবেশের জন্য তাঁরা ওই অবস্থানস্থল থেকে সরতে রাজি নন বলে রাজ্য সরকারি কর্মীদের যৌথ সংগ্রামী মঞ্চের আন্দোলনকারীরা ইতিমধ্যে পুলিশকে জানিয়ে দিয়েছেন। বকেয়া ডিএ বা মহার্ঘ ভাতার দাবিতে ওই ধর্নার সঙ্গে সঙ্গে অনশনও চলছে। কিন্তু তৃণমূলের প্রস্তাবিত সমাবেশের জন্য ২৯ তারিখে আন্দোলনকারীদের সরে যেতে বলেছিল পুলিশ। সমাবেশ মিটে গেলে তাঁরা আবার ধর্নায় বসতে পারবেন বলেও জানানো হয়েছিল। তবে মঞ্চের তরফে ধর্নায় অনড় থাকার বার্তা পেয়ে বুধবার রাত পর্যন্ত শাসক দলের ওই সমাবেশ নিয়ে লালবাজারে পরবর্তী কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর।
ময়দানে ধর্না-অনশনের পাশাপাশি সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ এ বার ভৌগোলিক পরিধির দিক থেকে এবং মাত্রাগত ভাবে ডিএ আন্দোলনের তীব্রতা ও ব্যাপকতা বাড়াতে চাইছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেমন বাংলার প্রতি কেন্দ্রের বঞ্চনার প্রতিবাদে ধর্নায় বসতে চাইছেন, একই ভাবে দিল্লি গিয়ে মহার্ঘ ভাতা নিয়ে তাঁরাও নিজেদের যন্ত্রণার কথা তুলে ধরতে চান বলে জানিয়েছেন সংগ্রামী মঞ্চের আহ্বায়ক ভাস্কর ঘোষ। তিনি জানান, ২০০-৩০০ জন প্রতিনিধি ১০ এবং ১১ এপ্রিল দিল্লির যন্তরমন্তরে ধর্নায় বসবেন। ‘‘মুখ্যমন্ত্রী দিল্লিতে গিয়ে আমাদের বঞ্চনার কথা বলতে বলছিলেন। আমরা দিল্লিতে গিয়েই ধর্নায় বসে রাজ্য সরকারি কর্মীদের দুরবস্থার কথা জানাব,’’ বলেন ভাস্কর।
সংগ্রামী মঞ্চের সদস্য নির্ঝর কুণ্ডু এ দিন বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী যদি তাঁর ধর্নার কারণ হিসেবে লিখিত ভাবে জানান যে, কেন্দ্রের বঞ্চনার জন্য ডিএ দিতে পারছেন না, তা হলে আমরাও সেই ধর্নায় গিয়ে বসতে রাজি আছি।’’ বুধবার ছিল ভাস্করদের অনশনের ৪১তম দিন। এক অনশনকারী বলেন, ‘‘আমরা শুধু জল খেয়ে অনশন করছি। স্যান্ডুইচ খেয়ে নয়।’’ মঙ্গলবার অনশনমঞ্চেই অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন ভাস্কর। সে-দিন মঞ্চেই তাঁর চিকিৎসা হয়েছিল। কিন্তু এ দিন ফের তাঁর শারীরিক পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় তাঁকে দক্ষিণ কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে বলে জানায় মঞ্চ।
দিল্লিতে ধর্নার সঙ্গে সঙ্গে আরও কিছু কর্মসূচির কথা জানিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। যৌথ মঞ্চ জানায়, ২৬ মার্চ বকেয়া ডিএ-র কথা জানিয়ে রাষ্ট্রপতিকে গণ-ইমেল করা হবে। রাজ্যে প্রশাসন স্তব্ধ করে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়ে আন্দোলনকারীরা মুখ্যমন্ত্রীকে গণ-ইমেল করবেন ২৭ মার্চ। ২৯-৩০ মার্চ গণ-টুইট করা হবে প্রশাসনিক আধিকারিকদের। ৩০ মার্চ গণছুটির আহ্বান জানিয়ে মহামিছিল হবে শিয়ালদহ ও হাওড়া থেকে।