সুপ্রিম কোর্ট। —ফাইল চিত্র।
নির্ধারিত থাকলেও সোমবার সুপ্রিম কোর্টে শুনানি হল না ডিএ (মহার্ঘ ভাতা) মামলার। রাজ্য সরকারি কর্মীদের অপেক্ষা আরও বৃদ্ধি পেল। শীর্ষ আদালত সূত্রে খবর ছিল, ৬ নম্বর কোর্টের মামলার তালিকার ৬০ নম্বরে ছিল ডিএ মামলা। কিন্তু ওই মামলা শোনার আগেই কোর্ট বন্ধের সময় এসে গিয়েছে।
সোমবার শীর্ষ আদালতের বিচারপতি হৃষিকেশ রায় এবং বিচারপতি প্রশান্তকুমার মিশ্রের বেঞ্চে মামলাটি তালিকাভুক্ত হয়েছিল। তার আগে মামলাটি ১১ বার শুনানির জন্য উঠেছে। তার মধ্যে এক বারই দীর্ঘ সময়ের জন্য মামলাটি শোনা হয়। সোমবার দ্বাদশ শুনানি হওয়ার কথা ছিল। ২০২২ সালে ১৮ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্টে প্রথম বার ওঠে ডিএ মামলা। গত ১ ডিসেম্বর মামলাটির শেষ বার শুনানি হয়েছিল। গত বছর ৩ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্টের দুই বিচারপতির বেঞ্চ জানায়, পশ্চিমবঙ্গের ডিএ মামলার আরও বিস্তারিত শুনানি প্রয়োজন। জানানো হয়, ফেব্রুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহে মামলাটি শুনানির জন্য আসবে। সেই অনুযায়ী সোমবার শীর্ষ আদালতের শুনানির তালিকায় ওঠে মামলাটি।
কেন্দ্রীয় হারে এবং বকেয়া মহার্ঘ ভাতা বা ডিএর দাবিতে কলকাতা হাই কোর্টে মামলা করেছিলেন রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের একাংশ। ২০২২ সালের ২০ মে উচ্চ আদালত রাজ্যকে কর্মচারীদের কেন্দ্রের সমতুল ৩১ শতাংশ হারে ডিএ দেওয়ার নির্দেশ দেয়। হাই কোর্টে জয়ী হয় রাজ্য সরকারি কর্মীদের কনফেডারেশন, ইউনিটি ফোরাম এবং সরকারি কর্মচারী পরিষদ। ওই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যায় রাজ্য। ২০২২ সালের ৩ নভেম্বর মামলা দায়ের হয় শীর্ষ আদালতে। প্রথম শুনানি হয় ২৮ নভেম্বর। রাজ্যের হয়ে সওয়াল করেন আইনজীবী অভিষেক মনু সিঙঘভি। তাঁর সওয়াল ছিল, হাই কোর্টের রায় মেনে ডিএ দিতে হলে প্রায় ৪১ হাজার ৭৭০ কোটি টাকা ব্যয় হবে। এই মুহূর্তে ওই আর্থিক বোঝা রাজ্য সরকারের পক্ষে বহন করা কঠিন। এর পর থেকে একের পর এক তারিখ দেওয়া হলেও নানা কারণে শুনানি সম্পূর্ণ হয়নি। অন্য দিকে, হাই কোর্টের নির্দেশ মেনে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বকেয়া ডিএ না-দেওয়ার জন্য নবান্নের বিরুদ্ধে একটি আদালত অবমাননার মামলাও হয়। তবে সুপ্রিম কোর্টের অনুরোধে সেটির শুনানি আপাতত হাই কোর্টে স্থগিত রয়েছে।
গত বছর ২১ ডিসেম্বর রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের জন্য ৪ শতাংশ ডিএ বৃদ্ধি করার কথা জানান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর ওই ঘোষণা অনুযায়ী, ১০ শতাংশ হারে ডিএ পাবেন সরকারি কর্মচারীরা। চলতি বছর জানুয়ারি থেকে তা কার্যকর হওয়ার কথা। নবান্ন সূত্রে খবর, বর্ধিত হারে রাজ্যের ১৪ লাখ সরকারি কর্মীকে ডিএ দিতে প্রায় ২,৪০০ কোটি টাকা খরচ হবে।