নিজস্ব চিত্র
রাজ্যে ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’ মোকাবিলায় জেলায় জেলায় তুঙ্গে প্রস্তুতি। দুই মেদিনীপুর, পূর্ব বর্ধমান ও উত্তর ২৪ পরগনা জেলায় প্রশাসনিক স্তরে ঝড় মোকাবিলায় সব রকম প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে।
পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, শুক্রবার বিকেলে দিঘায় পৌঁছে গিয়েছে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। শনিবার থেকেই তাঁরা দিঘা-সহ পার্শ্ববর্তী এলাকায় আগাম সতর্কবার্তা নিয়ে হাজির হবেন। সেই সঙ্গে বিপর্যয় হলে কী ভাবে তার মোকাবিলা করা হবে সে, বিষয়েও চূড়ান্ত প্রস্তুতি সেরে রাখবেন তাঁরা। পাশাপাশি জেলা এবং ব্লক স্তরেও দফায় দফায় প্রশাসনিক বৈঠক হয়েছে বলে খবর। পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক পূর্ণেন্দু কুমার মাজি জানিয়েছেন, শুক্রবার জেলার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দফতরের সমন্বয়ে ভার্চুয়ালি বৈঠক হয়েছে, যেখানে বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের অধিকারিকরা ছাড়াও পুলিশ, প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরের আধিকারিকরা ছিলেন। এই বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে প্রতিটি এলাকায় ‘ক্যুইক রেসপন্স টিম’ গঠন করে তাঁদের যোগাযোগ ফোন নম্বর সর্বত্র দিয়ে দেওয়া হবে। সমুদ্র তীরবর্তী এলাকাগুলিতে ঢালাও মাইকিং করে সতর্ক করা হবে। পাশাপাশি, গভীর সমুদ্রে যাওয়ার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। কেউ গিয়ে থাকলে তাঁকে দ্রুত ফিরে আসতে বলা হয়েছে। এ ছাড়াও, রামনগর-১ ব্লক অফিসে জরুরি বৈঠক সারেন এলাকার বিধায়ক তথা মৎস্যমন্ত্রী অখিল গিরি। মৎস্যমন্ত্রী জানান, “আমফান থেকে শিক্ষা নিয়েই এবার ‘ইয়াস’-এর মোকাবিলা করতে তৈরি হচ্ছি।’’
সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড় পরিস্থিতিতে প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতে শুক্রবার বৈঠক করে পূর্ব বর্ধমান জেলা প্রশাসনও। শুক্রবার বিকেলে মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ, জেলা সভাধিপতি শম্পা ধাড়া; জেলাশাসক প্রিয়াঙ্কা সিংলা ও বিভিন্ন এলাকার বিধায়করা উপস্থিত ছিলেন। ছিলেন বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর-সহ সব দফতরের আধিকারিকরা। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলাতেও শুক্রবার ব্লক, মহকুমা ও জেলা স্তরে ঘূর্ণিঝড় বৈঠক হয়। বিগত বছরে হয়ে যাওয়া আমপান থেকে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসন শিক্ষা নিয়ে এবারে অনেক আগে থেকেই প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে। ঝড়ের আগেই সমস্ত সরকারি কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে । পঞ্চায়েত স্তর পর্যন্ত প্রত্যেককে তাঁদের কর্মস্থলে উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। একাধিক সরকারি দফতরের কর্মীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলাতেও। সেখানে তৈরি রাখা হয়েছে প্রায় ৪০০টি স্কুল, ৪৩টি সাইক্লোন সেন্টার এবং ১৭টি ফ্লাড সেন্টার। সমুদ্রতীরবর্তী বা অন্য কোনও এলাকার বাসিন্দাদের সরিয়ে নিতে হয় তা হলে খুব কম সময়ে তা সম্ভব হবে বলে জানিয়েছে প্রশাসন। এ ছাড়াও রাজ্যের কাছ থেকে ৩০ হাজার ত্রিপল পাঠাতে বলা হয়েছে।