বকখালিতে ঝড়ে ভেঙে পড়েছে অস্থায়ী দোকান। ছবি: পিটিআই।
২০০৯-এর ২৫ মে আয়লা এসেছিল। আমপান এল ২০ মে, ২০২০ সালে। মাঝের এগারো বছরে আয়লায় বিধ্বস্ত বাঁধ সারাইয়ের প্রথম দফার কাজ এখনও অসমাপ্ত। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, জমি জটিলতার কারণে প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ কেন্দ্রীয় টাকারও সম্পূর্ণ সদ্ব্যবহার হয়নি।
আয়লার তাণ্ডবে ১৭৭ কিলোমিটার সমুদ্র ও নদী বাঁধ সম্পূর্ণ ভেঙে গিয়েছিল। ৬০১ কিলোমিটার বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। তৎকালীন বাম সরকার টাস্ক ফোর্স তৈরি করে বাঁধ পুনর্নির্মাণ করার সিদ্ধান্ত নেয়। এই খাতে কেন্দ্রীয় জল সম্পদ মন্ত্রক রাজ্যকে টাকা দিতে সম্মত হয়। ২০১০ সালে কেন্দ্র ৫০০০ কোটি টাকার মতো বরাদ্দ করে। সব মিলিয়ে ৭৭৮ কিমি বাঁধ মেরামতের জন্য ৫০৩২ কোটি টাকার অনুমোদন আসে।
২০১০ সালের শেষে প্রথম পর্যায়ে ১৮৪ কিমি সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ মেরামত প্রকল্পের প্রক্রিয়া শুরু হয়। এই পর্বে বরাদ্দের পরিমাণ ছিল ১৩৩৯ কোটি টাকা। এই ১৮৪ কিমি বাঁধ সারাইয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ২৫০০ একর জমি। বাম সরকার এই জমি অধিগ্রহণের নোটিস দিয়েছিল।
এর পরেই রাজ্যে ক্ষমতার পালাবদল ঘটে। ২০১১ সালে ক্ষমতায় এসে তৃণমূল সরকার স্পষ্ট জানিয়ে দেয় সরকার কোনও জমি অধিগ্রহণ করবে না। পর্যবেক্ষকদের দাবি, এই ঘোষণার জেরে আটকে যায় বাঁধের জন্য জমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া। তবে সরকার প্রতিশ্রুতি দেয়, জমি পাওয়ার ক্ষেত্রে কোনও অসুবিধা হবে না। কেন্দ্রের টাকা পাওয়ার অন্যতম শর্ত মেনে বাঁধের কাজের জন্য পেশাদার সংস্থা নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু করে রাজ্য সরকার। ২০১২ সালে ১৮৪ কিমি বাঁধ ন’টি ভাগে ভাগ করা হয়। টেন্ডারের মাধ্যমে ঠিকাদার সংস্থা নিয়োগ করা হয়। সংশ্লিষ্ট
সূত্রের খবর, সেই সংস্থাগুলি জমির অভাবে ২০১৪ পর্যন্ত কাজ শুরু করতে না পেরে ফিরে যায়। তার
পরে ২০১৫য় কোথাও অধিগ্রহণ, কোথাও সরাসরি জমি কিনে কাজ শুরু হয়। তবে এ বার কাজে হাত লাগায় স্থানীয় , তুলনায় ছোট সংস্থাগুলি। সমুদ্র বাঁধের উচ্চতা হওয়ার কথা
৭.২ মিটার। এবং নদী বাঁধের উচ্চতা হওয়ার কথা ৫.৮ মিটার। রাজ্য সরকারের অবশ্য দাবি, আয়লার তহবিল থেকে বাকি ৪০০০ কোটি টাকা না পেলেও হাত গুটিয়ে বসে নেই তারা।