Cyclone Amphan

১০০ ঘণ্টা ধরে আঁধার মোছার যুদ্ধ চলছে, চলছে বিক্ষোভও

যাদবপুরের রিজেন্ট এস্টেটে শাসক দলের কর্মীদের সঙ্গে বিরোধী সমর্থকদের হাতাহাতি থানা পর্যন্ত গড়িয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ মে ২০২০ ০৪:১৭
Share:

হুগলি, মেদিনীপুর, দুই ২৪ পরগনার কয়েকটি এলাকা অন্ধকারে ডুবে।—ছবি পিটিআই।

বিদ্যুৎহীনতা নিয়ে ভোগান্তি এবং বিক্ষোভ চলছে চার দিন বাদেও। রাজ্য প্রশাসনের সর্বোচ্চ স্তরে দৌড়ঝাঁপ শুরু হলেও মহাঘূর্ণিঝড়ের ১০০ ঘণ্টা পার করেও বেশ কিছু এলাকা অন্ধকার। জেলা-মফস্‌সলে তাও বিক্ষিপ্ত ভাবে বিদ্যুৎহীনতার অভ্যাস রয়েছে। কিন্তু শহর কলকাতা শেষ কবে নাগাড়ে এমন নিষ্প্রদীপ অবস্থায় চরম দুর্ভোগের শিকার, তা হিসেব করা কঠিন। সেনাবাহিনী পথ আটকে থাকা গাছ কেটে ও সরিয়ে বিদ্যুৎকর্মীদের কাজের পথ সুগম করায় কিছু এলাকার কপাল ফিরেছে। কিন্তু যান্ত্রিক ত্রুটির গেরোয় কয়েকটি বিক্ষিপ্ত এলাকা অন্ধকারে ডুবে।

Advertisement

কলকাতার বিভিন্ন এলাকা ও দক্ষিণ শহরতলিতে রবিবার সকাল থেকে চলে তুমুল বিক্ষোভ। হুগলির শেওড়াফুলি বা পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুকেও বিক্ষোভ দেখান মানুষ। তবে রাজ্য সরকারি সূত্রের দাবি, পশ্চিমবঙ্গ বিদ্যুৎ বণ্টন নিগমের তরফে ২৭৩টির মধ্যে ২৪০টি সাবস্টেশনই সারিয়ে ফেলা গিয়েছে। সোনারপুর, বারুইপুর, রাজপুর, নরেন্দ্রপুর থেকে কাকদ্বীপ, নামখানাতেও বিদ্যুৎ ফিরেছে। বনগাঁ, নৈহাটি, হালিশহর, ব্যারাকপুরেও আলো জ্বলেছে। সিইএসসি-র দাবি, বিভিন্ন মহলের সহযোগিতায় রবিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত উত্তর থেকে দক্ষিণ কলকাতার ৯২ শতাংশ জায়গায় তারা বিদ্যুৎ পরিষেবা চালু করে দিতে পেরেছে। তার মধ্যে যাদবপুর থেকে নাগেরবাজার— বিভিন্ন অঞ্চল রয়েছে। ছড়িয়ে-ছিটিয়ে বিদ্যুৎহীন বাকি এলাকায় জোরদার কাজ চলছে বলে সংস্থাটির দাবি।

সংস্থার এক কর্তা জানান, লাইন সারানোর জন্য লোকসংখ্যা বাড়ানোর পাশাপাশি ৬০টি জেনারেটর ভাড়া করা হয়েছে। বহু জায়গায় বড় আবাসন ও পাম্পিং স্টেশনে ওই জেনারেটর দিয়ে জরুরি পরিষেবাগুলি সামলানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। তাঁর দাবি, মঙ্গলবারের মধ্যে কলকাতা ও হাওড়া এলাকায় বিদ্যুৎ পরিস্থিতি সম্পূর্ণ স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলছে।

Advertisement

আরও পড়ুন: শুকনো চিড়ে কিসে ভিজিয়ে খাব? কোথায় জল?

তা বলে, এ দিন রাত পর্যন্ত রাজ্যবাসীর একাংশের দুর্ভোগে ছেদ পড়েনি। সরস্বতী পুজোর পুরোহিত ধরার ঢঙে বিদ্যুৎকর্মী থেকে গাছকাটার লোক ধরা নিয়ে টানাপড়েন চলছে। হুগলি, মেদিনীপুর, দুই ২৪ পরগনার কয়েকটি এলাকা অন্ধকারে ডুবে। প্রত্যন্ত এলাকায় বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে মুশকিল আসানের রাস্তাও বন্ধ। পাশাপাশি, কলকাতার পঞ্চসায়র থেকে বেহালার পর্ণশ্রী, মাদুরদহ থেকে যাদবপুরের রিজেন্ট এস্টেট— নানা এলাকাই কার্যত মান্ধাতার আমলে ফিরে গিয়েছে। কোথাও ট্রান্সফর্মার থেকে সংযোগ টেনে বা বিদ্যুতের কোনও একটি ফেজ়ে লোডের হেরফের ঘটিয়ে জোড়াতালির ব্যবস্থায় জলের পাম্পটুকু চালানো হচ্ছে। নেটসংযোগ বা ফোনের লাইন এখনও ঢিলেঢালা। তার উপরে ঘরে আলোটুকু না-জ্বলায় অনেকেই ক্ষুব্ধ।

আরও পড়ুন: পেয়ারা গাছের ডাল আঁকড়ে সাত ঘণ্টা

যাদবপুরের রিজেন্ট এস্টেটে শাসক দলের কর্মীদের সঙ্গে বিরোধী সমর্থকদের হাতাহাতি থানা পর্যন্ত গড়িয়েছে। কোথাও কোথাও সিইএসসিকে বার বার অভিযোগ জানালেও এলাকার প্রকৃত অবস্থা নিয়ে বিভ্রান্তিও দানা বাঁধে।

নাকতলার অরবিন্দ কলোনির বাসিন্দা সব্যসাচী কর বলেন, ‘‘প্রায় চার দিন বিদ্যুৎহীন। পাড়ায় আমাদের কয়েকটি বাড়ি এখনও অন্ধকারে।’’ ফলে, শহরের ভিতরেও অনেককে জলের এটিএমে লাইন দিতে হচ্ছে। বাধ্য হচ্ছেন বোতলের জল কিনে খেতে।

আরও পড়ুন: খুঁটি ধরে দু’ঘণ্টা ঠায় দাঁড়িয়ে ছিলেন পুণ্যলক্ষ্মী

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement