প্রতীকী ছবি।
আমপানের জেরে গত বৃহস্পতিবার থেকে এলাকায় বিদ্যুৎ, জল বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। বাকি পাঁচ জন পড়শির সঙ্গে তিনিও বিদ্যুতের দাবিতে পথে নেমেছিলেন। কিন্তু বহুজাতিক সংস্থায় কর্মরত পঙ্কজ চক্রবর্তী (৫৯) ছিলেন ডায়াবিটিসের রোগী। পরিবারের আক্ষেপ, বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের জেরে গত কয়েক দিন ঠিক সময়ে ইনসুলিন নিতে পারেননি তিনি। তার উপরে গরম। মঙ্গলবার অসুস্থ হয়ে মারা গেলেন তিনি।
পর্ণশ্রী থানা এলাকার, ১৯/১১৭ পর্ণশ্রী সেন্ট্রাল গভর্নমেন্ট কোয়ার্টারের বাসিন্দা পঙ্কজবাবুর পরিবার জানিয়েছে, গত ৩০ বছর ধরে ডায়াবিটিসে আক্রান্ত ছিলেন তিনি। রোজ দু’বেলা খাওয়ার আগে ইনসুলিন নিতে হতো।
গত বুধবার আমপানের দাপটের পর দিন থেকেই এলাকার বিদ্যুৎ চলে যায়। ফলে এলাকায় জলের সঙ্কট দেখা দেয়। পরের দিনও বিদ্যুৎ না-আসায় পড়শিদের সঙ্গে পঙ্কজবাবুও রাস্তায় বেরিয়ে পড়েন। এ দিকে বাড়িতে বিদ্যুৎ না-থাকায় ইনসুলিন রাখার সমস্যা দেখা দেয়। পঙ্কজবাবুর বাড়ি থেকে প্রায় ১৫ মিনিট দূরত্বে রয়েছে চেনাজানা একটি মিষ্টির দোকান। শেষে সেই দোকানে রেখে এসেছিলেন ইনসুলিন। রোজ খাওয়ার আগে সেই দোকান থেকে গিয়ে ইনসুলিন আনতেন। তবে পরিবারের কথায়, ঠিক সময়ে ইনসুলিনও নেওয়া হচ্ছিল না। খাওয়ার অনিয়মও হচ্ছিল। সব মিলিয়ে মঙ্গলবার ভোরে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে আইটিইউতে ভর্তি করা হয়। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় হাসপাতালেই মারা যান তিনি।
বুধবার পঙ্কজবাবুর বড় ছেলে শ্যামল জানিয়েছেন, গরমে বরাবরই সমস্যা হত তাঁর বাবার। অসুস্থবোধ করলে এসি চালিয়ে বা হাওয়ায় বসে থাকলে, সুস্থ হয়ে যেতেন। কিন্তু ঝড়ের পর দিন থেকে বিদ্যুৎ না-থাকায় রাতেও ঘুমোতে পারছিলেন না। গত বৃহস্পতিবার থেকে সোমবার পর্যন্ত এ ভাবেই কেটেছে পঙ্কজবাবুর। কিন্তু মঙ্গলবার ভোরে আর ধকল নিতে পারেননি।
মঙ্গলবার দুপুরে তিনি যখন হাসপাতালের আইটিইউ-তে চিকিৎসাধীন, তখন পর্ণশ্রীতে বিদ্যুৎ আসে। কিন্তু পঙ্কজবাবুর আর বাড়ি ফেরা হয়নি।