বাড়ির সেই ফাটল। নিজস্ব চিত্র
পাঁচিল ঘেরা পেল্লায় বাড়ি তাঁর। পাড় বাঁধানো পুকুরে শান বাঁধানো চাতাল। উঠোনে গাছ-গাছালি। তবে আমপান সে বাড়িতে আঁচড় কাটতে পারেনি, তা বলা যাবে না। বাড়ির দেওয়ালে একটা ফাটল রয়েছে।
সেই ফাটল দেখিয়েই বাড়ির বড় ছেলে অর্চিষ্মান মণ্ডল জানালেন, আমপানে গাছ পড়ে ওই ফাটল হয়েছে। অর্চিষ্মানের বাবা তাপসকুমার মণ্ডল হিঙ্গলগঞ্জ থানার দুলদুলি পঞ্চায়েতের ১৬৯ নম্বর বুথের পঞ্চায়েত সদস্য। এ হেন তাপস সেই ফাটলের জন্য সরকারের কাছে ক্ষতিপূরণ দাবি করেছেন।
তিনি একা নন, পরিবারের চার সদস্যের নামে ক্ষতিপূরণ দাবি করে বসেছেন তিনি। ইতিমধ্যে তিনজনের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকেও গিয়েছে। অর্চিষ্মান বলছেন, “আমাদের তিন জনের নামে টাকা আসতেই গ্রামের সকলে সমালোচনা করছেন। তবে মায়ের নামে ক্ষতিপূরণ আসেনি এখনও।” অর্চিস্মানের দাবি, তাঁরা নাকি সেই টাকা ফেরতের প্রক্রিয়া শুরু করেছেন। এ বিষয়ে তাপসের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন ধরেননি। এসএমএসের উত্তরও দেননি। তাপসের বুথেই দুলদুলির পূর্ব পাড়ায় বাস বেশ কিছু গরিব মানুষের। কৃষ্ণপদ হালদার তাঁদেরই একজন। বললেন, “আমার এবং আমার দাদা শৌভিকের মাটির বাড়ির খুবই ক্ষতি হয়েছে ঝড়ে। দাদা পরিযায়ী শ্রমিক। ক্ষতিপূরণের আবেদন করতে কাগজ জমা দিতে গিয়েছিলাম তাপসবাবুর কাছে। উনি দাদার কাগজ জমাই নেননি। আমার কাগজ জমা পড়লেও টাকা পাইনি।” একই অভিযোগ গ্রামের বাসিন্দা বিধান মণ্ডল, মধুসূদন মণ্ডল, গিরিবালা মণ্ডলদের। অভিযোগ, তাপস একা নন, তাঁর আত্মীয় এবং ঘনিষ্ঠেরাও পরিবারের একাধিক সদস্যের নামে ক্ষতিপূরণ পেয়েছেন। স্থানীয় সিপিএম নেতা বিশ্বজিৎ মণ্ডল বলেন, “তাপসবাবুর বুথের মাটির বাড়ির মালিকেরা ক্ষতিপূরণ পাননি এখনও। বিরোধী দল যাঁরা করেন, তাঁদের বঞ্চিত করা হচ্ছে।” স্থানীয় বিধায়ক দেবেশ মণ্ডলের কথায়, “তাপস একটা ভুল করে ফেলেছে। ওকে বলা হয়েছে টাকা ফেরত দিতে।” তিনি জানান, যাঁরা ক্ষতিপূরণ পাওয়ার যোগ্য, তাঁরা অবশ্যই তা পাবেন।