রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছবির দু'পাশে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও রাজ চক্রবর্তীর ছবি নিজস্ব চিত্র।
রবিবার কবিগুরুর ১৬০ তম জন্মদিন পালন হচ্ছে। আমাদের রাজ্য তো বটেই, দেশ-বিদেশেও ঘটা করে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মদিন পালন করা হচ্ছে। তবে কবিগুরুর জন্মদিনের যে ছবি বর্ধমান শহরে ধরা পড়েল তাতে চোখ কপালে উঠতে বাধ্য। মাঝে রবিঠাকুর, আর তাঁর পাশে তৃণমূল বিধায়ক রাজ চক্রবর্তী। জন্মদিন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের। কিন্তু একই দিনে, একই সঙ্গে পুজো পেলেন রাজ্যের রাজ। উদ্যোক্তা খোদ রাজের শ্বশুরমশাই দেবপ্রসাদ গঙ্গোপাধ্যায় ও শাশুড়ি বীণা গঙ্গোপাধ্যায়।
বর্ধমান শহরের বাজেপ্রতাপপুর এলাকায় অভিনেত্রী তথা রাজ চক্রবর্তীর স্ত্রী শুভশ্রীর বাপেরবাড়ি। শুভশ্রীর পাড়াতেই রবিবাসরীয় সকালে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬০ জন্মদিন পালনের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানের মূল উদ্যোক্তা ছিলেন শুভশ্রীর বাবা ও মা। সেই অনুষ্ঠানেই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছবির পাশে দেখা যায় পরিচালক তথা ব্যারাকপুরের নব নির্বাচিত বিধায়ক রাজ চক্রবর্তীর ছবি।
কবিগুরুর সঙ্গে রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব কেন পুজো পেলেন তা নিয়ে স্পষ্ট করে কিছু বলতে পারেননি উদ্যোক্তা দেবপ্রসাদ। রবীন্দ্রনাথের আরেক পাশে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবিও রাখা হয়েছিল। দেবপ্রসাদ জানান, রাজ চক্রবর্তীর বিধায়ক হওয়া ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃতীয়বারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার আনন্দ উদযাপন করা হচ্ছে। তবে রবিবাসরীয় সকালের এই অনুষ্ঠানের আয়োজন নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে শহরে। জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের এক নেতা বলেন, ‘‘দেবপ্রসাদ গাঙ্গুলিদের গোটা পরিবার আগে সিপিএম করত। এখন তৃণমূল কংগ্রেসে নাম লিখিয়েছে। তা নতুন তৃণমূল হলে তো একটু বেশি দেখাতেই হবে।’’ জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র প্রসেনজিৎ দাস অবশ্য বলেন, ‘‘রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর আমাদের সবার উপরে। সবার উপরে তাঁর স্থান। তবে বাজেপ্রতাপপুরে কী হয়েছে তা খোঁজ নিয়ে দেখতে হবে।’’ বর্ধমান দক্ষিণ বিধানসভা কেন্দ্রের বিজেপির হয়ে ভোটে দাঁড়ানো কবি সন্দীপ নন্দী বলেন, ‘‘কিছু বলার নেই। যাঁরা এমন আয়োজন করেছেন, তাঁরা শিক্ষিত। কেউ অশিক্ষিত নন। রবীন্দ্রনাথ, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আর রাজ চক্রবর্তী একই আসনে ভাবা যায়।’’ উপহাস করে তিনি আরও বলেন, ‘‘এটা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুররে অপমান নয়, বরং দলনেত্রীকেই অপমান করা হচ্ছে।’’