বাংলা নববর্ষে নিয়ে বিতর্ক উস্কে দিতে চায় বঙ্গীয় সনাতনী সংস্কৃতি পরিষদ। গ্রাফিক: সনৎ সিংহ
বঙ্গাব্দ চালু করেন কে? মুঘল সম্রাট আকবর নাকি গৌড়ের রাজা শশাঙ্ক? এ নিয়ে বিতর্ক অনেক দিনের। এ বার সেই প্রশ্নকে সামনে রেখেই রাজ্য জুড়ে প্রচারের প্রস্তুতি নিচ্ছে সঙ্ঘ পরিবার। এ জন্য তৈরি হয়েছে বঙ্গীয় সনাতনী সংস্কৃতি পরিষদ নামে একটি সংগঠন। আসন্ন পয়লা বৈশাখ থেকেই পরিষদ এ নিয়ে প্রচারে নামছে। সংগঠনের পক্ষে জানানো হয়েছে, প্রথমে কলকাতায় একটি প্রদর্শনী করা হবে। সঙ্গে আলোচনাসভা। এর পরে জেলায় জেলায় নিজেদের মতের পক্ষে জনমত তৈরির চেষ্টা শুরু হবে।
পরিষদের সম্পাদক প্রবীর ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, ‘‘ভারতে ইতিহাস বিকৃতির অনেক চেষ্টা হয়েছে। তেমনই এক অন্যায় দাবি রয়েছে বঙ্গাব্দের প্রবর্তন নিয়ে। যেটা বাঙালির নিজস্ব তার কৃতিত্বও মুঘলদের বলে অনেকে দাবি করেন। কিন্তু এটা ঐতিহাসিক ভাবেও অসত্য।’’ তাঁরা যেটা বলছেন সেটাই ঐতিহাসিক ভাবে সত্যি দাবি করে প্রবীর আরও বলেন, ‘‘ষষ্ঠ শতকের শেষ দশকে গুপ্ত সাম্রাজ্যের সামন্ত রাজা এবং পরে স্বাধীন সার্বভৌম গৌড়ের শাসক শশাঙ্ক নিজের শাসনকালের সূচনাকে স্মরণীয় করে রাখতে সূর্যসিদ্ধান্ত ভিত্তিক বর্ষপঞ্জি বঙ্গাব্দের সূচনা করেন।’’
অতীতে সে ভাবে বাংলা ও বাঙালি নিয়ে সরব হতে দেখা যায়নি সঙ্ঘ পরিবারকে। অখণ্ড ভারতের কথা বলা গেরুয়া শিবির কি তবে বাঙালি মন জয় করতেই এই দাবি নিয়ে প্রচারের পরিকল্পনা নিয়েছে? জবাবে প্রবীর বলেন, ‘‘আলাদা করে বাঙালি মন জয়ের প্রশ্ন নেই। বাংলায় আমাদের কাজে অনেক গভীরে প্রোথিত। তবে বলতে পারেন বাংলার নিজস্ব ঐতিহ্য সম্পর্কে নতুন প্রজন্মকে সচেতন করাই এই প্রচারের লক্ষ্য।’’ তিনি আরও জানিয়েছেন, পয়লা বৈশাখের দিন কলকাতায় ইন্ডিয়ান কাউন্সিল ফর কালচারাল রিলেশনস (আইসিসিআর)-এর সত্যজিৎ রায় প্রেক্ষাগৃহে বাংলার ‘শশাঙ্ক থেকে বর্তমান’ নামে একটি প্রদর্শনী হবে। একই সঙ্গে বাংলার সংস্কৃতির অঙ্গ গৌড়ীয় নৃত্য, পটের গান, পদাবলি কীর্তন পরিবেশন হবে।