—ফাইল চিত্র।
শহুরে শো-রুম, শপিং মলে ভালই ভিড়। ঠেলাঠেলিতে উধাও স্বাস্থ্যবিধি। তবে গ্রামাঞ্চলের ছোটখাটো দোকানে ক্রেতার অপেক্ষায় হাপিত্যেশ। করোনা-কালে পুজোর আগে শেষ রবিবারের বাজারে এমন বিপরীত ছবিই দেখা গেল মহানগর থেকে জেলায় জেলায়।
শিলিগুড়ির বিধানমার্কেটে, শেঠ শ্রীলাল মার্কেটে ভিড়ে এ দিন ধাক্কাধাক্কি চলে। সন্ধের পরে মলগুলিতেও প্রচুর ভিড় হয়। জলপাইগুড়ি এবং আলিপুরদুয়ারের বাজারেও ভিড় ছিল। বীরভূমের সিউড়ি শহরে অধিকাংশেরই ছিল না মাস্ক। দূরত্ব-বিধি শিকেয় তুলে কেনাকাটা চলে বোলপুর, রামপুরহাট, ঝাড়গ্রামেও। ক্রেতাদের স্যানিটাইজ়ার দেওয়া বা তাপমাত্রা পরীক্ষার ব্যবস্থাও অল্প দোকানেই ছিল। কৃষ্ণনগর পোস্ট অফিস মোড়ে ডি এল রায় মার্কেটের এক দোকানি বলেন, ‘‘ছোট্ট দোকান, দূরত্ব রেখে কাস্টমারকে বসাব কোথায়? মাস্ক পরতে বললে চলে যাচ্ছে।’’
শপিং মলে ভিড় ছিল দুই ২৪ পরগনা ও বর্ধমান শহরে। বিসি রোড, পারবীরহাটার মলে ক্রেতাদের মাস্ক থাকলেও দূরত্ব-বিধির বালাই ছিল না। দুপুরের পরে দুর্গাপুর বাজার, বেনাচিতি বাজারেও ভিড় জমে। মেদিনীপুর ও খড়্গপুর শহরের বাজারগুলিতে ভিড় হলেও বিক্রিবাটা জমেনি। খড়্গপুর গোলবাজারের এক কাপড়ের দোকানের কর্মী প্রেমানন্দ চক্রবর্তী বলেন, “আগের মতো সাত-আট হাজার টাকার শাড়ি কেউ কিনছে না।” রেলশহরে একটি শপিং মলে সেল্সের টিম লিডার স্বপন গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “কেউই প্রয়োজনের অতিরিক্ত কিনছেন না।”
জেলায় জেলায় ছোট ও মাঝারি দোকানগুলি অবশ্য শেষ রবিবারও হাত গুটিয়েই থাকল। বাঁকুড়া শহরের সুভাষ রোডের রেডিমেড ব্যবসায়ী মিলন পাল, দুলাল দত্তেরা বলেন, “করোনার জন্য চৈত্রসেলে মার খেয়েছি। পুজোয় শেষ রবিবার বাজারেও ভিড় নেই।’’ বাগনানের বস্ত্র ব্যবসায়ী শেখ সইদুলের আক্ষেপ, ‘‘ধারে মাল তুলেছি। কী করে মহাজনদের টাকা মেটাব জানি না।’’ উত্তর ২৪ পরগনার হাসনাবাদ বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক সুব্রত মুখোপাধ্যায় বলছিলেন, ‘‘৫০ বছর বাজার কমিটির পদে আছি। এমনটা দেখিনি।’’
রাত পোহালেই চতুর্থী। তবে গ্রাম-মফস্সলের বেশির ভাগ পুজো মণ্ডপই পুরোপুরি তৈরি হয়নি। ফলে, ভিড়ও জমেনি। ভার্চুয়ালি মুখ্যমন্ত্রীর হাতে উদ্বোধন হওয়া মেদিনীপুর শহরের রবীন্দ্রনগর ও ছোটবাজার সর্বজনীনের মণ্ডপেও ঢের কাজ বাকি। গড়বেতার একটি পুজো কমিটির কর্মকর্তা নিমাই চন্দ্র বলেন, ‘‘কম বাজেট, ছোট মণ্ডপ। তাই দেরি করেই কাজ শুরু হয়েছে।’’