ফাইল চিত্র।
প্রাক্তন মন্ত্রী, দলের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা কমিটির সদস্য সুশান্ত ঘোষকে শো-কজ করতে চলেছে সিপিএম। দলের এক সূত্রে খবর, জেলা নেতৃত্বকে না জানিয়ে নেতা-কর্মীদের নিয়ে আলাদা ভাবে বৈঠক করার অভিযোগের প্রেক্ষিতেই জেলা কমিটির বৈঠকে সুশান্তকে শো-কজের সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত হয়েছে। মেদিনীপুরে দু’দিন ধরে চলা সিপিএমের জেলা কমিটির বৈঠক শেষ হয়েছে রবিবারই। বৈঠকে ছিলেন দলের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্রও।
জেলা সিপিএম অবশ্য এ নিয়ে ভাঙতে নারাজ। সুশান্ত ঘোষকে কি শোকজ করা হচ্ছে? সদুত্তর এড়িয়ে সিপিএমের জেলা সম্পাদক তরুণ রায় বলেন, ‘‘দলের বৈঠক ছিল। সাংগঠনিক আলোচনা হয়েছে। আর তেমন কিছু হয়নি!’’ শো-কজের সিদ্ধান্ত হয়নি? তরুণের জবাব, ‘‘একই প্রশ্ন পাঁচবার কেন? কিছু বলার থাকলে বলেই দিতাম।’’ তবে দলের এক সূত্রে জানা গিয়েছে, সুশান্তকে শো-কজের চিঠি ধরানো হবে। সিপিএমের এক নেতা বলেন, ‘‘শো-কজের উত্তর দেখে দল পরবর্তী পদক্ষেপ করবে।’’
জেলা কমিটির বৈঠকে সুশান্ত ছিলেন না। রবিবার চেষ্টা করেও তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। দলের এক সূত্রে খবর, জেলা সম্পাদকমণ্ডলী এবং জেলা কমিটি, দু’টি বৈঠকেই সুশান্ত ঘোষের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আগে সুশান্ত দলের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য ছিলেন। রাজ্যে পালাবদলের পর কঙ্কাল মামলায় তাঁর নাম জড়ায়। এখন আদালতের অনুমতি নিয়ে জেলায় আসতে হয় তাঁকে। এই ‘সমস্যা’ সামনে রেখেই গত সম্মেলনে সুশান্তকে জেলা সম্পাদকমণ্ডলী থেকে ‘অব্যাহতি’ দেওয়া হয়।
সিপিএম নেতাদের একাংশের অভিযোগ, সম্প্রতি বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরে যদুভট্ট মঞ্চে নিজের পুরনো এলাকার (গড়বেতা) দলীয় নেতা-কর্মীদের নিয়ে বৈঠক করেছেন সুশান্ত। জেলা নেতৃত্ব কিছু জানতেন না। পরে জেনেছেন। নেতৃত্বের একাংশের মতে, এমন বৈঠক ‘উপদলীয় কার্যকলাপ’-এর শামিল এবং তা অবশ্যই শৃঙ্খলাভঙ্গ। তা ছাড়া, একটি পোর্টালে সুশান্তের ধারাবাহিক লেখায় নেতৃত্বের প্রতি বিষোদগারের অভিযোগ রয়েছে। সেই ধারাবাহিক লেখার সঙ্কলন বই আকারে প্রকাশিত হওয়ার পরে সুশান্ত আবার একটি পোর্টালের জন্য কলম ধরে দলীয় নেতৃত্বকে কাঠগড়ায় তুলেছেন বলে দলের অন্দরে অভিযোগ ওঠে।
এরপরই প্রাক্তন দাপুটে মন্ত্রীর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ চেয়ে সরব হন সিপিএমের একাংশ। দলের রাজ্য নেতৃত্বের তরফে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ভার জেলা কমিটিকে দেওয়া হয়েছিল। সেই মতোই শো-কজের সিদ্ধান্ত।