নতুন জিএসটি-র প্রতিবাদে উত্তর কলকাতায় সিপিএমের মিছিল। নিজস্ব চিত্র।
খাদ্যদ্রব্যের উপরে নতুন জিএসটি বসানোর সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে পথে নামল সিপিএম। শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের ‘শহিদ সমাবেশে’র আবহ যখন গোটা শহরকে মুড়ে ফেলেছে, তার মধ্যেই কলকাতার উত্তর ও দক্ষিণে জোড়া প্রতিবাদ মিছিল করল বিরোধী দল সিপিএম। তাদের অভিযোগ, এমনিতেই জিনিসপত্রের দাম এবং মুদ্রাস্ফীতির জেরে অর্থনীতি নাজেহাল। এর পরে প্যাকেটবন্দি চাল, ডাল, গম, দুধ, পনীর বা ফলের উপরে জিএসটি চাপানোর কারণে সাধারণ মানুষের উপরে আরও কোপ পড়বে।
নতুন জিএসটি প্রত্যাহারের দাবিতে বুধবার একই সঙ্গে দু’টি মিছিলের ডাক দিয়েছিল কলকাতা জেলা বামফ্রন্ট। দক্ষিণে গড়িয়াহাট থেকে পার্ক সার্কাস পর্যন্ত মিছিলে ছিলেন বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু, সিপিএমের পলিটবুরো সদস্য সূর্যকান্ত মিশ্র, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী, আরএসপি-র সাধারণ সম্পাদক মনোজ ভট্টাচার্যেরা। উত্তরে শ্যামবাজার থেকে রাজাবাজার পর্যন্ত প্রতিবাদ মিছিলে শামিল হয়েছিলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম, রবীন দেব, সিপিআইয়ের প্রবীর দেব, আরএসপি-র অশোক ঘোষ প্রমুখ। সিপিএমের পলিটবুরোর তরফেও এ দিন বিবৃতি দিয়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের উপরে জিএসটি বসানোর সিদ্ধান্ত অবিলম্বে প্রত্যাহারের দাবি তোলা হয়েছে। তারই পাশাপাশি, কেরলের অর্থমন্ত্রী কে এন বালগোপাল জানিয়েছেন, তাঁদের রাজ্যে বাম সরকার এই নতুন জিএসটি কার্যকর করবে না। তার জন্য সমস্যা বা সংঘাত বাধলে কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে ওই রাজ্যের সরকার ফের আলোচনা চাইবে।
রাস্তায় প্রতিবাদে নেমে সেলিম এ দিন বলেন, ‘‘কে কী বলবে, কী ধর্মাচরণ করবে, সে সব নিয়ে সরকার ব্যস্ত। কিন্তু মানুষ কী ভাবে বাঁচবে, কী ভাবে খাবারের ব্যবস্থা করবে? জিনিসপত্রের দাম, বেকারি বাড়ছে, তা নিয়ে কারও কোনও চিন্তা নেই!’’ তথ্য দিয়ে সুজনবাবুর বক্তব্য, ‘‘ওষুধে, খাবারে জিএসটি তো বাড়ছেই। নাবার্ডের চাকরির পরীক্ষা, তার ফি ৮০০ টাকা। সেই সঙ্গে দিতে হবে ১৪০ টাকা জিএসটি। কেন্দ্রের জিএসটি ৯%, রাজ্যের ৯%। চাকরিপ্রার্থীদেরও দিতে হবে জিএসটি! কোন জায়গায় গিয়েছে সরকার!’’
কংগ্রেস এই জিএসটি-র নাম দিয়েছে ‘গব্বর সিংহ ট্যাক্স’! রান্নার গ্যাস, পেট্রল, ডিজ়েলের চড়া দামের পাশাপাশি চাল, আটা, মুড়ির প্যাকেটেও জিএসটি বসানোর সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে এ দিন পথে নেমেছিল কংগ্রেসও। বালিগঞ্জের সামসুল হুদা রোড থেকে শুরু হয়ে তাদের মিছিল শেষ হয় পার্ক সার্কাস ৪ নম্বর ব্রিজে। সেখানে প্রতিবাদ-সভায় সাধারণ মানুষের হয়রানি নিয়ে সরব হন দক্ষিণ কলকাতা জেলা কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ প্রসাদ, জাহিদ হোসেনেরা।