সিপিএমের ছাত্র ও যুব সমাবেশে মহম্মদ সেলিম। —নিজস্ব চিত্র।
শিক্ষা ও কাজের দাবিকে সামনে রেখে আরও জোরালো ও ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের ডাক উঠে এল সিপিএমের যুব ও ছাত্র সমাবেশ থেকে। মূলত এই দাবি নিয়েই আগামী ৭ জানুয়ারি ব্রিগেড সমাবেশের ডাক দিয়েছে সিপিএমের যুব সংগঠন ডিওয়াইএফআই। তার আয়োজনে যুক্ত করা হয়েছে ছাত্র সংগঠন এসএফআইকেও। কর্মসংস্থানের দাবি এবং শিক্ষায় ডামাডোলের প্রতিবাদে দলের যুব ও ছাত্র সংগঠনকে রাস্তায় রাখতে চাইছে সিপিএম।
প্রতি বছরই ১৫ সেপ্টেম্বর ‘দাবি দিবস’ হিসেবে পালন করে সিপিএমের যুব ও ছাত্র সংগঠন। এ বার সেই উপলক্ষে শুক্রবার সমাবেশ ছিল রানি রাসমণি অ্যাভিনিউয়ে। পুলিশের অনুমতি না থাকলেও মিছিল নিয়ে ধর্মতলায় আসেন ডিওয়াইএফআই, এসএফআইয়ের নেতৃত্ব। সমাবেশে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম বলেন, ধর্মের নামে, জাতপাতের নামে, কখনও উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গের নামে ভাগাভাগির রাজনীতি হচ্ছে। বিভাজনের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে মানুষকে একজোট করে প্রকৃত সমস্যা নিয়ে আন্দোলন করতে হবে বামপন্থীদের। সেলিমের বক্তব্য, ‘‘জি-২০ হোক বা ৪২০, কোনও আপত্তি নেই! কিন্তু মানুষের ভাল হবে, এমন কাজ কোথায় হচ্ছে? মিড-ডে মিলের থালা থেকে ডিম উবে যাচ্ছে। আইসিডিএস কর্মীদের জন্য কেন্দ্রের কাছে টাকা নেই। রাজ্যে ছেলেমেয়েরা চাকরির দাবিতে ধর্না দিচ্ছেন। আর তখন মুখ্যমন্ত্রী বিদেশ সফর করছেন!’’ সেলিমের ফের অভিযোগ, বিনিয়োগ আনার নাম করে মুখ্যমন্ত্রী আসলে বিদেশে টাকা রাখতে গিয়েছেন। তৃণমূল কংগ্রেস অবশ্য এ দিনই বিবৃতি দিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর স্পেন সফরে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ সংক্রান্ত তথ্য তুলে ধরেছে।
সিপিএমের ছাত্র ও যুব সমাবেশে মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়। —নিজস্ব সংবাদদাতা।
রাজ্যের পুলিশ এবং কেন্দ্রীয় সংস্থা, দু’পক্ষই ‘অনৈতিক কাজ’ করছে বলে অভিযোগ করেছেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক। তাঁর কথায়, ‘‘পুলিশ দুর্নীতিগ্রস্তদের ধরতে পারে না। কিন্তু আন্দোলনকারীদের উপরে তারা লাঠি চালায়।’’ আগামী নভেম্বরে রাজ্য জুড়ে পদযাত্রায় বেরোবে ডিওয়াইএফআই। সেই তথ্য ফের উল্লেখ করে যুব সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায় বলেছেন, ‘‘কাজ ও শিক্ষার দাবিতে এই লড়াই চলবে। আরও তীব্র হবে। এই সভা শপথের সভা। ছাত্র-যুবদের জন্য শিক্ষা এবং কাজের অধিকার ছিনিয়ে আনতে হবে। মানুষ কাজ পাচ্ছেন না। বেতন পাচ্ছেন না। কিন্তু জেলে থাকা পার্থ চট্টোপাধ্যায় বা মানিক ভট্টাচার্যদের বেতন বেড়ে গেল!’’ সমাবেশে এসএফআইয়ের রাজ্য সম্পাদক সৃজন ভটাচার্যের বক্তব্য, ‘‘শিক্ষার সঙ্গে যোগাযোগ নেই, এমন লোককে উপাচার্য করা হচ্ছে। রাজ্যপাল এবং রাজ্য সরকার, দু’পক্ষ মিলে শিক্ষা ব্যবস্থাকে শেষ করে দিচ্ছে। কলকাতা-সহ একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপক নিয়োগ হচ্ছে না। গবেষকেরা টাকা পাচ্ছেন না।’’