দুর্নীতির গোটা চক্র উদঘাটন এবং অভিযুক্ত সকলের শাস্তির দাবি বজায় রেখে বিভিন্ন কর্মসূচি চালাবে সিপিএম। নিজস্ব চিত্র।
শিক্ষায় নিয়োগ-সহ রাজ্যের নানা ক্ষেত্রে দুর্নীতি এবং বেনিয়মের বিরুদ্ধে লাগাতার আন্দোলনের পথেই থাকছে সিপিএম। রাজধানী শহর কলকাতায় প্রতিবাদের পাশাপাশি জেলায় জেলায় ওই আন্দোলন ছড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনাও রাখছে তারা। আগামী বছরের পঞ্চায়েত নির্বাচনকে মাথায় রেখে প্রতিবাদ ও আন্দোলনকে ছড়িয়ে দিতে চাইছে আলিমুদ্দিন স্ট্রিট।
পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের গ্রেফতার ও তাঁর ‘ঘনিষ্ঠ’ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের হেফাজত থেকে বিপুল টাকা উদ্ধারের সূত্রে যে কেলেঙ্কারি সামনে এসেছে, তার ভুক্তভোগী মূলত তরুণ প্রজন্ম। দুর্নীতির গোটা চক্র উদঘাটন এবং অভিযুক্ত সকলের শাস্তির দাবি বজায় রেখে বিভিন্ন কর্মসূচি চালাবে সিপিএম। কলকাতায় ছাত্র সমাবেশ হওয়ার কথা আগামী ২ সেপ্টেম্বর। কাছাকাছি সময়ে আলাদ করে যুব সমাবেশও হবে। একই সঙ্গে জেলায় জেলায় নানা কর্মসূচি। সিপিএম সূত্রের খবর, আলিমুদ্দিনে বুধবার দলের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর বৈঠকে আলোচনা হয়েছে, শিক্ষা ক্ষেত্রে দুর্নীতির ঘটনায় রাজ্য জুড়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে প্রবল প্রতিক্রিয়া রয়েছে। এই প্রশ্নে রাজ্য সরকার তথা শাসক দলের বিরুদ্ধে আন্দোলনের পাশাপাশি কেন্দ্রীয় সরকারের উপরেও চাপ বাড়াতে হবে। কারণ, সিপিএমের মতে, একে বিজেপি কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলিকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করছে। তার উপরে এ রাজ্যেই সারদা, নারদ-কাণ্ডের মতো ঘটনায় কেন্দ্রীয় তদন্ত ঝিমিয়ে পড়ার দৃষ্টান্ত হাতের সামে রয়েছে।
সিপিএম নেতা এবং প্রাক্তন মন্ত্রী সুভাষ চক্রবর্তীর প্রয়াণ দিবস ছিল এ দিন। পানিহাটির লোক সংস্কৃতি ভবনে সুভাষ চক্রবর্তী ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে একটি অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের অবসরে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম বলেছেন, গণ-আন্দোলনের ‘চাপ’ না থাকলে দুর্নীতির পুরো চক্র ধরতে ইডি-সিবিআই শেষ পর্যন্ত তৎপরতা দেখাবে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ আছে। দার্জিলিঙের রাজভবনে তৎকালীন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের সঙ্গে বাংলা ও অসমের মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠক এবং তার পরে উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে তৃণমূলের ভোটদানে বিরত থাকার সিদ্ধান্তের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে সেলিমের বক্তব্য, ‘‘এখন আবার দিল্লি গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সমঝোতা করতে চাইবেন। এ ভাবে দুর্নীতিকে চাপা দেওয়া চলবে না। পূর্ণাঙ্গ তদন্ত চাই। মানুষ দিদিকেও বিশ্বাস করে না, ইডি-কেও আর বিশ্বাস করে না! কেন্দ্র আর রাজ্যের চোর-পুলিশের খেলা দেখতে চাই না, দুর্নীতির অবসান দেখতে চাই।’’
এরই পাশাপাশি অন্য বিষয়েও আন্দোলন অব্যাহত। ডেউচা-পাঁচামির কয়লা খনি প্রকল্প বাতিলের দাবিতে এ দিন সুবর্ণ বণিক সমাজ হলে গণ-কনভেনশনে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা, বিজ্ঞান, পরিবেশ-সহ নানা ক্ষেত্রের বিশিষ্ট জনেরা। ছিলেন সিপিএমের আইনজীবী-সাংসদ বিকাশ ভট্টাচার্য, মনোজ ভট্টাচার্য, আব্দুল মান্নান, ‘বীরভূম জমি-জীবন-জীবিকা ও প্রকৃতি বাঁচাও মহাসভা’র আন্দোলনের অন্যতম নেতা প্রসেনজিৎ বসু প্রমুখ।