(বাঁ দিকে) মহম্মদ সেলিম। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
সপ্তমীর দুপুর থেকে বিকেল ধর্মতলা চত্বরে চাকরিপ্রার্থীদের সাতটি পৃথক অবস্থানমঞ্চে গিয়েছিলেন সিপিএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। গান্ধী মূর্তির পাদদেশে তেমনই একটি মঞ্চ থেকে সেলিমের কাছে চাকরিপ্রার্থীরা দাবি জানালেন, সিপিএম যেন তাঁদের দাবি নিয়ে নবান্ন বা কালীঘাটে (অর্থাৎ মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির এলাকায়) বিক্ষোভ দেখায়। সেলিম সঙ্গে সঙ্গেই জানিয়ে দিলেন, নবান্ন তাঁরা যেতেই পারেন। কিন্তু কালীঘাটে নয়। কোনও ভাবেই নয়।
সেলিমের কাছে নবান্ন এবং কালীঘাট অভিযানের আর্জি জানান চাকরিপ্রার্থীদের একটি মঞ্চের মভাপতি মইদুল ইসলাম। তিনি সেলিমকে বলেন, ‘‘স্যার, আপানারা আমাদের জন্য বিক্ষোভ করুন। নবান্ন বা কালীঘাটে গিয়ে বিক্ষোভ দেখান।’’ সঙ্গে সঙ্গেই সেলিমের জবাব, ‘‘নবান্ন যেতে পারি। কিন্তু কালীঘাটে নয়।’’ কেন কালীঘাটে নয়, তার ব্যাখ্যা অবশ্য সেলিম চাকরিপ্রার্থীদের দেননি। তবে তাঁর সঙ্গে থাকা তরুণ সিপিএম নেতা কলতান দাশগুপ্ত বলেন, ‘‘কালীঘাট মুখ্যমন্ত্রীর ব্যক্তিগত বাসস্থান। তাই সেখানে নয়। নবান্ন সরকারের সচিবালয়। সেখানে যাওয়া যেতেই পারে। এর আগেও বামপন্থীরা একাধিকবার নবান্ন অভিযান করেছে। কিন্তু ব্যক্তিগত বাসস্থানে গিয়ে বিক্ষোভ দেখানোর পক্ষপাতি আমরা নই। সেলিমদা দলের এই ভাবনার কথা আগেও জানিয়েছেন।’’
প্রসঙ্গত, চাকরিপ্রার্থীদের অনেক সংগঠনই ইদানীং কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির দিকে অভিযান করে। হাজরা মোড় বা যতীন দাস পার্ক স্টেশনের সামনে থেকে তাঁদের আটক করে পুলিশ। শুধু তা-ই নয়, ডিএ-এর দাবিতে সরকারি কর্মচারীদের সংগ্রামী যৌথমঞ্চও মুখ্যমন্ত্রীর পাড়া দিয়ে মিছিল করে গিয়েছিল। পুলিশ প্রথমে অনুমতি না-দিলেও, সেই মিছিল হয়েছিল আদালতের অনুমোদন করার পর।
মাতঙ্গিনী হাজরার মূর্তি থেকে গান্ধী মূর্তির পাদদেশ— শনিবার মোট সাতটি মঞ্চে যান সেলিম। চাকরিপ্রার্থীরা অনেকেই সেলিমকে শনিবার বলেন, তাঁদের অনেকের সরকারি চাকরি পাওয়ার বয়স পেরিয়ে গিয়েছে। দিনের পর দিন তাঁরা রাস্তায় রয়েছেন, অথচ হকের চাকরি পাচ্ছেন না। তাঁরা এ-ও বলেন, তাঁদের যদি নিয়োগ না দেওয়া হয় তা হলে তাঁদের জীবন কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে তাঁরা জানেন না।