—প্রতীকী ছবি।
আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে হাই কোর্টের অনুমতিতে বুধবার থেকে শুরু হল প্রদেশ কংগ্রেসের দু’দিনের ধর্না-অবস্থান কর্মসূচি। সেই কর্মসূচি একেবারেই কংগ্রেসের নিজস্ব। কিন্তু সেখানেও জুড়ে যাচ্ছে সিপিএম। তবে অন্য ভাবে।
ধর্না-অবস্থানে সাধারণত সারা ক্ষণ বক্তৃতা হয় না। মাঝেমাঝে সাংস্কৃতিক কর্মসূচিও চলে। সব দলের ক্ষেত্রেই মোটামুটি এটিই রেওয়াজ। ধর্মতলায় কংগ্রেসের কর্মসূচিতেও থাকছে সাংস্কৃতিক প্রতিবাদ। সেটিই ‘ঠিক’ করে দিয়েছে সিপিএম। এই প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে প্রদেশ কংগ্রেসের অন্যতম সম্পাদক তথা মুখপাত্র সুমন রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘আমরা সিপিএমের জেলা সম্পাদক কল্লোল মজুমদারকে বলেছিলাম একটি সাংস্কৃতিক দলকে আনানোর বন্দোবস্ত করতে। তিনি সেটা করেছেন।’’ জানা গিয়েছে, বারুইপুরের একটি বাম মনোভাবাপন্ন সাংস্কৃতিক গোষ্ঠী কংগ্রেসের কর্মসূচিতে অনুষ্ঠান করবে বুধবার বিকালে।
সিপিএমের কলকাতা জেলা সম্পাদক কল্লোলও বিষয়টির কথা স্বীকার করেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘গত নির্বাচনে আমরা যাঁদের সঙ্গে কাজ করেছিলাম, তাঁদেরই অনেকে আমায় বিষয়টা দেখতে বলেছিলেন। তার পরে আমি বারুইপুরের জননাট্য মঞ্চের কথা বলি। তারাই কংগ্রেসের কর্মসূচিতে যাচ্ছে।’’ কল্লোল জানিয়েছেন, সরাসরি ওই গোষ্ঠী দলের সাংস্কৃতিক সংগঠন গণনাট্য সঙ্ঘের শাখা নয়। তবে গণনাট্যের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক ভাল।
মধ্য কলকাতা জেলা কংগ্রেসের উদ্যোগে এই কর্মসূচি শুরু হয়েছে বুধবার দুপুর ১টা থেকে। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি পদে শুভঙ্কর সরকার দায়িত্ব পাওয়ার পরে এটিই তাঁর প্রথম প্রকাশ্য কর্মসূচি। যদিও অধীর চৌধুরী প্রদেশ সভাপতি থাকাকালীনই এই কর্মসূচি নির্ধারিত হয়েছিল। পুলিশের অনুমতি না পেয়ে শেষে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হতে হয় কংগ্রেসকে। মঙ্গলবার কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজ কংগ্রেসকে ধর্না-অবস্থানের অনুমতি দেন।
উল্লেখ্য, তৃণমূল-বিরোধিতায় অধীর যতটা তীব্র ছিলেন, বঙ্গ রাজনীতি এবং কংগ্রেসের মধ্যে চালু ধারণা, শুভঙ্কর ততটা হবেন না। বরং শুভঙ্কর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তথা তৃণমূলের প্রতি কিছুটা ‘নমনীয়’ বলেই অভিমত অনেকের। ঘটনাচক্রে, সেই প্রদেশ সভাপতি হিসেবে শুভঙ্করের অভিষেক কর্মসূচিতেও অন্য ভাবে ‘জুড়ে’ থাকছে সিপিএম। আবার সিপিএমের দিক থেকেও কল্লোলের ভূমিকা ‘তাৎপর্যপূর্ণ’। তার কারণ, ২০১৬ সালে কংগ্রেসের সঙ্গে আসন সমঝোতার বিরোধিতা করেছিলেন রাজ্য সিপিএমের যে গুটি কয়েক নেতা, তার মধ্যে কল্লোল ছিলেন অন্যতম। যদিও তার পরে অনেক জল গড়িয়েছে। কল্লোল জেলা সম্পাদক হয়েছেন। এখন তিনি সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীরও সদস্য। রাজ্য সিপিএম কংগ্রেসের সঙ্গে ‘সমন্বয়’ রেখে চলারই পক্ষপাতী। অনেকের মতে, কংগ্রেসের ধর্নামঞ্চে ‘সাংস্কৃতিক’ উপস্থিতিতে সাহায্য করে কল্লোল আলিমুদ্দিনের সেই লাইনেই হেঁটেছেন।