সিপিএমের ডিজিটাল টিমের এক সদস্যের কথায়, আমাদের নতুন রাজ্য সম্পাদক আমাদের যেমন নির্দেশ দিয়েছেন, সেই নির্দেশ মেনেই আমরা এই কর্মসূচি শুরু করলাম। আমাদের লক্ষ্য রামপুরহাটের মতো ঘটনা যাতে আর না ঘটে, সে বিষয়ে সজাগ থাকা। সঙ্গে ওই সমস্ত দুর্নীতিপরায়ণ নেতাদের উপর নজরদারি করা।
আঙুল ফুলে কলাগাছ হওয়া তৃণমূল নেতাদের বাড়িতে নজর রাখবে সিপিএম। প্রতীকী ছবি
তৃণমূল জমানায় আঙুল ফুলে কলাগাছ হয়েছেন ভাদু শেখ, আনারুল হোসেনের মতো নেতারা। এ বার রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা শাসকদলের ওই ধরনের নেতাদের উপর দলীয় নজরদারি বাড়াতে নতুন এক কর্মসূচি ঘোষণা করল সিপিএম। বুধবার সিপিএমের ডিজিটাল টিমের তরফে নতুন কর্মসূচি ‘পাহারায় পাবলিক’ শুরু করা হয়েছে। কর্মসূচি ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই একটি বার্তাও দেওয়া হয়েছে পার্টি কর্মী তথা সহমর্মীদের উদ্দেশে। নেটমাধ্যমে দেওয়া সেই বার্তায় লেখা হয়েছে, ‘রাজ্য জুড়ে তৃণমূলী নৈরাজ্যের অবসান ঘটাতে প্রতিটি এলাকায় ভলান্টিয়াররা এগিয়ে আসুন। পশ্চিমবঙ্গের বুকে দ্বিতীয় রামপুরহাট হওয়ার আগে, আপনার অঞ্চলে ভাদু শেখের মতো আঙুল ফুলে কলাগাছ হওয়া তৃণমূল নেতাদের চিহ্নিত করতে এই ফর্মটি ফিলাপ করে জমা দিন। আপনার নাম ও অন্যান্য যাবতীয় তথ্য সম্পূর্ণ ভাবে গোপন ও সুরক্ষিত থাকবে। রাজ্য জুড়ে তৃণমূলের নেতাদের তোলাবাজি, বেলাগাম দুর্নীতি রুখে দিতে, বেআইনি অস্ত্র কারবারে লাগাম টানতে সাহায্য করুন সিপিএম- কে। ফর্ম ফিলাপ করে আপনার অভিযোগ নথিভুক্ত করুন। ছবি বা ভিডিও নিচের ইমেল আইডি-তে মেল করতে পারেন।’
নতুন এই কর্মসূচির প্রসঙ্গে সিপিএমের ডিজিটাল টিম সূত্রে জানা গিয়েছে, রামপুরহাটের বগটুইয়ের গণহত্যার ঘটনার পর সেই এলাকা পরিদর্শনে যান সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। তার পরেই সেখানে ফিরে নানা তথ্য সংগ্রহ করে একটি ফেসবুক পোস্ট করেন। নেটমাধ্যমের সেই পোস্টে লেখা হয়, ‘রামপুরহাটের তারাপীঠ রোডে তৃণমূল নেতা আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাইপো সমু বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাগানবাড়ি। এখানে ভাদু শেখের ঘনিষ্ঠরা রাত হলে আসর বসাত। এই প্রাসাদোপম অট্টালিকা কার টাকায় বানানো হল? সেই টাকার উৎস কী? এই বিষয়ে মুখে কুলুপ কেন পুলিশ, প্রশাসনের? এমনকি অভিযোগ এটাও যে, সমু বন্দ্যোপাধ্যায়ের ব্যবহার করা নতুন বিলাসবহুল চার চাকা গাড়িটি রামপুরহাট এইচডিএফসি ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নিয়ে কেনা। যার কিস্তি মেটাতো ভাদু শেখ। কেন? ভাদু শেখের সঙ্গে কী সম্পর্ক আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাইপো সমু বন্দ্যোপাধ্যায়ের? আনারুলকে গ্রেফতার করে কার টাকার বিনিময়ে কী আড়াল করা হচ্ছে?’’
ওই পোস্টটিতে তিনি আরও লেখেন, ‘আসলে রামপুরহাট গণহত্যার নেপথ্যে লুকিয়ে আছে তৃণমূলের আপাদমস্তক দুর্নীতি ও বখরার রাজনীতি। রামপুরহাট গণহত্যা ধামাচাপা দেওয়া যাবে না। সঠিক তদন্ত চাই। রাঘববোয়ালদের ধরতে হবে। বাঙলার প্রতিটি কোণে মজুত বেআইনি অস্ত্র ও বোমা উদ্ধার করতে হবে। বাঙলার গুন্ডাদের কন্ট্রোল করা মুখ্যমন্ত্রীকেই এই গণহত্যার দায় নিতে হবে।’ পোস্টটি প্রকাশ্যে আসার পরেই সিপিএমের অভ্যন্তরে আলোচনা শুরু হয়। ঠিক হয়, গত ১১ বছরে শাসক দলের যে সমস্ত নেতাদের আঙুল ফুলে কলাগাছ হয়েছে, তাঁদের নাম ঠিকানা তথ্য-সহ একটি পুস্তিকা প্রকাশ করা হবে। সেই সঙ্গে এই ধরনের নেতাদের কার্যকলাপ থেকে সাধারণ মানুষকে বাঁচাতে উদ্যোগী হবে সিপিএম। সেই পদক্ষেপেই ‘পাহারায় পাবলিক’ কর্মসূচি শুরু করা হল।
সিপিএমের ডিজিটাল টিমের এক সদস্যের কথায়, আমাদের নতুন রাজ্য সম্পাদক আমাদের যেমন নির্দেশ দিয়েছেন, সেই নির্দেশ মেনেই আমরা এই কর্মসূচি শুরু করলাম। আমাদের লক্ষ্য রামপুরহাটের মতো ঘটনা যাতে আর না ঘটে, সে বিষয়ে সজাগ থাকা। সঙ্গে ওই সমস্ত দুর্নীতিপরায়ণ নেতাদের উপর নজরদারি করা।