তামিলনাড়ু পারল বাংলা-ত্রিপুরা নয়, প্রশ্ন উঠছে সিপিএমে

লোকসভা ভোটের পরে আজ, মঙ্গলবার প্রথম বৈঠক বসছে সিপিএমের রাজ্য কমিটির। বেনজির বিপর্যয়ের পরে এখন কী করণীয়, তা নির্ধারণ করার জন্য কেন্দ্রীয় কমিটির অপেক্ষায় আছেন সব রাজ্যের দলীয় নেতৃত্ব।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৪ জুন ২০১৯ ০৪:৩২
Share:

প্রতীকী ছবি।

মিটিং-মিছিলে লোক হচ্ছে কিন্তু ভোট আসছে না! এই সত্যের মুখোমুখি হয়েই রাজ্যে ফের পথ সন্ধানে বসছে সিপিএম। তামিলনাড়ু পারলে বাংলা কেন কংগ্রেসের সঙ্গে জোটের রাস্তায় গিয়ে বিজেপিকে ঠেকাতে পারল না, উঠতে চলেছে সেই প্রশ্নও।

Advertisement

লোকসভা ভোটের পরে আজ, মঙ্গলবার প্রথম বৈঠক বসছে সিপিএমের রাজ্য কমিটির। বেনজির বিপর্যয়ের পরে এখন কী করণীয়, তা নির্ধারণ করার জন্য কেন্দ্রীয় কমিটির অপেক্ষায় আছেন সব রাজ্যের দলীয় নেতৃত্ব। রাজ্য কমিটির প্রাথমিক পর্যালোচনা রিপোর্ট পাঠানো হচ্ছে আগামী ৭ থেকে ৯ জুন কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকের জন্য। কেরলের পরে সোমবার ত্রিপুরায় দলের রাজ্য কমিটির বৈঠকে ছিলেন সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি ও পলিটব্যুরো সদস্য প্রকাশ কারাট। ইয়েচুরির উপস্থিতিতেই আজ আলিমুদ্দিনে রাজ্য কমিটির বৈঠকে বাংলার বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে কাটাছেঁড়া হবে।

রাজ্যে শাসক তৃণমূলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ থেকেই বড় অংশের মানুষ বিজেপিকে ভোট দিয়েছেন এবং বাম ও কংগ্রেস হালে কোনও পানি পায়নি— মোটামুটি এই বিশ্লেষণই উঠে আসছে সিপিএমের জেলা কমিটিগুলির আলোচনায়। ভোট চাইতে গেলে অনেকে বাম প্রার্থীদের সরাসরি বলেই দিয়েছিলেন যে, এই নির্বাচনে অন্তত তাঁদের কাছ থেকে কিছু যেন প্রত্যাশা করা না হয়— এমন অভিজ্ঞতার রিপোর্টও এসেছে! কিন্তু বাম বাক্সের ভোট বিজেপির দিকে যাওয়ার পরে এ বার কর্মী-সমর্থকেরাও যাতে গেরুয়া পথে না বাড়ান, সেটাই এখন বড় উদ্বেগ সিপিএম নেতৃত্বের কাছে। আম জনতার জীবনের সঙ্গে সম্পর্কিত কোনও বিষয়ের খোঁজ করে সংগঠনকে দ্রুত রাস্তায় নামাতে চান তাঁরা। বিজেপি-তৃণমূল সংঘর্ষে তপ্ত ভাটপাড়ায় বিমান বসুর নেতৃত্বে এ দিন মিছিল করে বামফ্রন্ট পথে নামতে শুরু করেছে।

Advertisement

তিন বছর আগে রাজ্যে বিধানসভা ভোটের সময় থেকে কংগ্রেসের সঙ্গে আসন সমঝোতার পক্ষে সওয়াল করে আসছিল আলিমুদ্দিন। তখন দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের অনুমোদন ছিল না। কিন্তু এখন পার্টি কংগ্রেসের সিলমোহর পাওয়ার পরেও বাংলায় কেন কংগ্রেসের সঙ্গে সমঝোতা করা গেল না, সেই প্রশ্ন উঠেছিল লোকসভা ভোটের পরে পলিটব্যুরোর বৈঠকে। এ রাজ্যের অনেক নেতার ক্ষোভও একই বিষয়ে। দলের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্যের কথায়, ‘‘ভোট তো শুধু অঙ্ক নয়, তার রসায়নও আছে। কংগ্রেসের সঙ্গে সমঝোতা হলে বিজেপি-তৃণমূলের বাইরে একটা গ্রহণযোগ্য বিকল্প দেওয়া যেত, কর্মী-সমর্থকেরাও উজ্জীবিত হতেন।’’

এ বার লোকসভা নির্বাচনে ত্রিপুরায় সিপিএম (১৭.৩১%) কংগ্রেস-আইএনপিটি জোটের (২৫.৩৪%) চেয়ে পিছিয়ে পড়েছে। রাজ্যের দু’টি আসনই জিতেছে বিজেপি (৪৯%)। বাম-কংগ্রেস এক হলে বিজেপি এই জয় সহজে পেত না। গত বছর বিধানসভায় কংগ্রেসের বড় অংশের ভোট বিজেপিতে চলে গিয়ে তারা ২%-এ নেমে যাওয়ায় ত্রিপুরার সিপিএম তাদের হাত ধরতে আগ্রহ দেখায়নি। বিজেপির হাতে এক বছরেরও বেশি সমানে রক্তাক্ত হয়ে চলল বামেরা অথচ লোকসভায় তাদের চেয়ে বেশি ভোট পেল কংগ্রেস— এই প্রশ্ন উঠেছিল এ দিন ত্রিপুরা সিপিএমের রাজ্য কমিটিতে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement