নজরে পঞ্চায়েত নির্বাচন। ফাইল চিত্র।
তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বিজেপির হাত ধরলে দলীয় সদস্যদের শাস্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল সিপিএম। আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটে দলের হারানো জমি ফিরে পেতে বুথভিত্তিক সংগঠন আর আন্দোলনেই সিলমোহর দিয়েছে দলের রাজ্য কমিটি। তবে ধর্মনিরপেক্ষ ও গণতান্ত্রিক শক্তিকে কাছে টানতে দরজা খোলা থাকছে আলিমুদ্দিনের।
বুধ ও বৃহস্পতিবার দলের রাজ্য কমিটির বৈঠকে রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক অবস্থা বিশ্লেষণ করেছে সিপিএম। সেই সূত্রেই জেলা কমিটিগুলির তরফে যে রিপোর্ট দেওয়া হয়েছে তাতে দলীয় কর্মসূচিতে ভাল সাড়া মিলেছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। সেই সঙ্গেই দলীয় কর্মসূচিতে পুরনো কর্মীদের সক্রিয়তা বেড়েছে বলেও জেলা কমিটিগুলি জানিয়েছে। পাশাপাশি তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে দলের নিচু তলায় বিজেপির সঙ্গে হাত মেলানোর বিষয়টিও সামনে এসেছে। এই প্রেক্ষাপটেই রাজ্য কমিটিতে তিনটি বিষয়েই অভিমুখ স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে।
সিপিএম সূত্রে খবর, এ দিন রাজ্য কমিটির বৈঠকে জবাবি বক্তৃতায় দলের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম বলেছেন, ‘‘সংগঠন গুছিয়ে নিয়ে সর্বাত্মক লড়াই করতে হবে। যে বামপন্থীরা দূরে সরে গেছেন, ফিরিয়ে আনতে তাঁদের কাছে পৌঁছতে হবে।’’ তৃণমূলকে হারাতে দলের একাংশে বিজেপির সঙ্গে সমঝোতার যে প্রবণতা দলের নজরে এসেছে তা খারিজ করে বৈঠকে সেলিম জানিয়ে দিয়েছেন, ‘কোনও ভাবেই বিজেপির সঙ্গে হাত মেলানো যাবে না। তা করলে শাস্তির মুখে পড়তে হবে। পরে সাংবাদিক বৈঠকে সেলিম বলেন, ‘‘গ্রামে গ্রামে পদযাত্রায় ভাল সাড়া মিলেছে। কৃষিতে সারের অভাব ও অন্যান্য বিষয় নিয়ে গোটা ডিসেম্বর মাস এই কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়া হবে।’’ পঞ্চায়েত ভোটের আগে তৃণমূল ও বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বুথভিত্তিক সংগঠনকে শক্তিশালী করার উপরেই জোর দিয়েছেন তিনি। রাজ্য নেতৃত্ব কড়া হলেও পঞ্চায়েত ভোটে বিজেপি- ঝোঁক পুরোপুরি ঠেকানো যাবে কি না, তা নিয়ে অবশ্য দলের অন্দরেও সংশয় রয়েছে।
রাজ্য কমিটির এই বৈঠকেই টালিগঞ্জ ও যাদবপুরের দুই এরিয়া কমিটির সদস্যকে সাসপেন্ড করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিপিএম। ব্যক্তিগত জীবনচর্চায় বিচ্যুতির অভিযোগে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে। সেই সঙ্গেই পার্টি কংগ্রেসের সিদ্ধান্ত মেনে রাজ্য দলে মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধের অভিযোগের তদন্তে একটি কমিটি গড়েছে সিপিএম। তার মাথায় রয়েছেন গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতির সদ্যপ্রাক্তন সভানেত্রী অঞ্জু কর।
এ বারের বৈঠকেই রাজ্য কমিটির আমন্ত্রিত সদস্য মনোনীত হয়েছেন গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতির নতুন সভানেত্রী জাহানারা খান। একই ভাবে আমন্ত্রিত সদস্য হয়েছেন চাকরিপ্রার্থীদের আন্দোলনের ভারপ্রাপ্ত কলকাতার নেতা ইন্দ্রজিৎ ঘোষ এবং মুর্শিদাবাদের নেতা সোমনাথ সিংহরায়।