ছবি পিটিআই।
কৃষকদের আন্দোলন নিয়ে ক্রমাগত ‘মিথ্যাচার’ না করে ফসলের ন্যূনতম সহায়ক মূল্য নিশ্চিত করার দিকে প্রধানমন্ত্রীর নজর দেওয়ার দাবি তুলল সিপিএম। তাদের মতে, প্রতিবাদের নেপথ্যে বামেদের হাত যে প্রধানমন্ত্রী দেখতে পাচ্ছেন, এটা বামেদেরই ‘সাফল্য’!
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী শুক্রবার অভিযোগ করেছেন, বামেরাই পঞ্জাবে বা দিল্লিতে কৃষি আইনের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছে। যদিও সাধারণ কৃষক কেন্দ্রীয় প্রকল্প ও আইনের দ্বারা উপকৃত। বাংলায় যে দল ৩৪ বছর রাজত্ব করেছে, তারা কৃষকদের জন্য এক দিনও আওয়াজ তোলেনি— এই অভিযোগও করেছেন মোদী। তার জবাবে প্রধানমন্ত্রীকে সরাসরি ‘মিথ্যাচারে’র দায়ে পাল্টা অভিযুক্ত করেছে সিপিএম। দলের পলিটব্যুরো সদস্য মহম্মদ সেলিমের কথায়, ‘‘শুধু বাংলা নয়, দেশের কৃষক আন্দোলনের ইতিহাসটা এক বার পড়ে নিন। তা হলেই জেনে যাবেন, কৃষি ও কৃষকদের নিয়ে আন্দোলনে বামেদের ভূমিকা ঠিক কেমন। অবশ্য ‘সমগ্র রাষ্ট্রবিজ্ঞানে’ ভুয়ো ডিগ্রি থাকলে ঠিক ইতিহাস জানাও কঠিন!’’
মোদীর বক্তব্য খণ্ডন করে আলিমুদ্দিনে সেলিম এ দিন বলেন, ‘‘এক মুখে বলছেন, বামেরা কোনও দিন আওয়াজ তোলেনি, আন্দোলন করেনি। তাদের খুঁজে পাওয়া যায় না। আবার অন্য মুখে বলছেন, বামেদের উস্কানি আছে বলে কৃষক প্রতিবাদ হচ্ছে! তা হলে অন্তত এইটুকু বোঝা যাচ্ছে যে, যেখানেই প্রতিবাদ, সেখানেই বামেদের দেখা যাচ্ছে!’’ সিপিএমের বক্তব্য, কেন্দ্রীয় কৃষি আইনের বিরুদ্ধে গোটা দেশের কৃষকেরা স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে প্রতিবাদ করছেন। সিপিএমের কৃষক সভা-সহ বামপন্থী সংগঠনগুলি সেখানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছে। অহেতুক বিভ্রান্তিকর কথা না বলে ফসলের দাম নিশ্চিত করার দিকে মন দিতে প্রধানমন্ত্রীকে ‘পরামর্শ’ দিয়েছে তারা।
বাংলায় ‘প্রধানমন্ত্রী কিসান সম্মান নিধি’ প্রকল্প চালু করার জন্য বামেরা কেন আন্দোলন করছে না, সেই প্রশ্নও এ দিন তুলেছেন মোদী। সিপিএমের পাল্টা বক্তব্য, বিভিন্ন প্রকল্পে রাজ্যগুলোকে প্রাপ্য টাকা যারা দেয়নি, তাদের মুখে এই সব কথা মানায় না। সেলিমের বক্তব্য, ‘‘তা ছাড়া, কিসান সম্মান নিধি তো বিমা। রাজ্যেরও বিমা আছে। কিন্তু বিমা করে দেওয়াই কৃষকের সমস্যার সমাধান নয়। বিমায় সমস্যা মিটে গেলে তো অন্য রাজ্যের কৃষকেরা এখন আন্দোলনে নামতেন না। আদানি-অম্বানীদের মত নয়, কৃষকেরা নিজেদের ইচ্ছায় যাতে ফসল উৎপাদন করতে পারেন এবং দাম পান, সেই মূল দাবিটার আগে নিষ্পত্তি করুন।’’