এক দলের সামনে বিরোধী পরিসর হাতছাড়া হওয়ার আশঙ্কা। অন্য দলকে চ্যালেঞ্জ করতে আবার দ্রুত উঠে আসছে প্রতিপক্ষ। দু’দলের সামনেই বিপদ একই— বিজেপি! সেই বিপদের মোকাবিলায় তাই রাজনৈতিক কর্মসূচি কয়েক গুণ বাড়িয়ে নিতে চলেছে সিপিএম এবং তৃণমূল।
তৃণমূল নেতৃত্ব জানিয়ে দিয়েছেন, বিজেপি-কে এক ইঞ্চি জমিও ছেড়ে দেওয়ার প্রশ্ন নেই। তাই রাজ্যের শাসক দল হয়েও বিরোধী দল বিজেপি-কে কার্যত তা়ড়া করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা! রাজ্যে যেখানেই গেরুয়া শিবির বড় কোনও কর্মসূচি নেবে, সেখানেই পাল্টা মিছিল বা সমাবেশ করবে তৃণমূল। যে কারণে বিজেপি-র সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ ঘুরে যাওয়ার পরে ভবানীপুরে পাল্টা মিছিল হয়েছে তৃণমূলের। রাজারহাট এবং উত্তরবঙ্গের নকশালবাড়িতেও পাল্টা কর্মসূচি করেছে তারা। বাম জমানার শেষ দিকে এ ভাবেই সিপিএমের পাল্টা সভা করত তৃণমূল। পরিস্থিতির ফেরে এখন নজর ঘুরে গিয়েছে বিজেপি-র দিকে।
তৃণমূলের এই কৌশলকে বিজেপি নেতৃত্ব অবশ্য তাঁদের ‘নৈতিক জয়’ হিসাবেই দেখছেন। বর্ধমানের টাউন হলে সোমবার থেকে শুরু হয়েছে বিজেপি-র রাজ্য কমিটির বৈঠক। প্রথম দিনেই দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেছেন, ‘‘আমরা যেখানেই সভা করছি, সেখানেই পাল্টা সভা করছে তৃণমূল। এতে তো আমাদেরই সুবিধা হচ্ছে! তৃণমূল ঠেলা মেরে আমাদের এগিয়ে দিচ্ছে!” প্রসঙ্গত, বুথওয়া়ড়ি সংগঠন জোরদার করার দিকেই এখন নজর দিয়েছেন দিলীপবাবুরা। অমিতের পরামর্শ মাথায় রেখে ঠিক হয়েছে, আগামী ৭ জুন থেকে টানা ১৫ দিন ‘বুথ চলো’ কর্মসূচি চলবে। প্রায় ১০ হাজার নেতা বুথে বুথে রাত কাটাবেন। তার জন্য আগাম ১০ থেকে ২০ জনের বুথ কমিটি করা এবং ‘বুথ চলো’ অভিযানের প্রতি দিন বুথ পিছু অন্তত ৫০ জনকে নতুন সদস্য জোগাড় করার কথা বলেছেন দিলীপবাবু। তাঁর দাবি, ‘‘এর ফলে পঞ্চায়েতে ভিত তৈরি হবে। তার উপরে দাঁড়িয়ে লোকসভা ভোট করতে আমাদের সুবিধা হবে।”
পথে নেমে কর্মসূচির সংখ্যা বাড়িয়ে দিয়েছে সিপিএমও। তাদের এখন পাখির চোখ ২২ মে-র ‘নবান্ন চলো’র দিকে। বামেদের সব সংগঠনকে সেই কর্মসূচিতে সক্রিয় অংশগ্রহণ করতে বলা হয়েছে। তার আগে ৮ মে ভাঙড়ের আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে কলকাতায় ‘রাজভবন অভিযানে’ সামিল হবে বামফ্রন্ট। এই ধরনের বড় কর্মসূচির বাইরেও স্থানীয় এলাকা ধরে ধরে প্রয়াত কোনও নেতার স্মরণ বা কোনও স্থানীয় আন্দোলনের বার্ষিকী উদযাপনকে উপলক্ষ করে এখন জমায়েত করবে সিপিএম। দলের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্যের কথায়, ‘‘রাস্তাতেই ছিলাম। কিন্তু এখন একটুও ঢিলে দেওয়ার জায়গা নেই!’’
পঞ্চায়েত ভোটের আগে রাজনীতির ময়দানে উত্তাপ বাড়ছে এখন থেকেই!