মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিল্লি সফরের সময়ে তাঁকে অস্বস্তিতে ফেলতে তৎপর সিপিএম ও কংগ্রেস।
‘আক্রান্ত আমরা’-কে সামনে রেখে পশ্চিমবঙ্গের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে আজ সরব হল সিপিএম ও কংগ্রেস। রাষ্ট্রপতির কাছে ‘আক্রান্ত আমরা’-র প্রতিনিধিরা দাবি জানান, সবংয়ে ছাত্র খুনে পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষ যে ভাবে মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যকে সমর্থন জানিয়ে খুনিদের আড়াল করার চেষ্টা করছেন, তার প্রেক্ষিতে ভারতীর আইপিএস পদমর্যাদা কেড়ে নেওয়া হোক। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন সিপিএম ও কংগ্রেসের নেতারা।
এখানেই না থেমে মঙ্গলবার সংসদে পশ্চিমবঙ্গের আইন-শৃঙ্খলার অবনতি নিয়ে ধর্নায় বসছেন সিপিএমের সাংসদরা। আজ সন্ধ্যাতেই দিল্লি পৌঁছেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী। এই সফরেই প্রধানমন্ত্রী, অরুণ জেটলির সঙ্গে বৈঠক করার কথা রয়েছে তাঁর। সাধারণত দিল্লি এলে সংসদেও এক বার যান মমতা। তার আগেই সংসদে অধিবেশন শুরুর আগে সকালবেলায় ধর্না দিয়ে পশ্চিমবঙ্গের যাবতীয় ঘটনা তুলে ধরবে সিপিএম। সবংয়ের ছাত্র খুন, কেতুগ্রামে সাহিনা খাতুনকে গুলি করে খুন, দক্ষিণ ২৪ পরগনায় বন্যা দুর্গতদের ত্রাণ শিবিরেই গৃহবধূর ধর্ষণের উদাহরণ তুলে ধরা হবে। অন্য দিকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহের কাছে দরবার করবেন ‘আক্রান্ত আমরা’-র প্রতিনিধিরা।
আজ প্রথমে নির্বাচন কমিশনে, তার পরে সংসদে যান অম্বিকেশ মহাপাত্র-সহ ‘আক্রান্ত আমরা’-র প্রতিনিধিরা। সেখানে কংগ্রেসের প্রদীপ ভট্টাচার্য, সিপিএমের সীতারাম ইয়েচুরির সঙ্গে আলাদা ভাবে বৈঠক করেন তাঁরা। প্রদীপবাবু স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান। তাঁর কাছেও ভারতীর বিষয়টি তোলেন অম্বিকেশরা। প্রদীপবাবু জানান, তিনি এই বিষয়টি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকে জানাবেন।
এর পরেই সন্ধ্যায় প্রদীপ-সীতারাম-ঋতব্রতেরা ‘আক্রান্ত আমরা’-র প্রতিনিধিদের নিয়ে রাষ্ট্রপতি ভবনে হাজির হন। রাষ্ট্রপতির কাছে অম্বিকেশরা জানান, এর আগেও তাঁরা রাষ্ট্রপতিকে চিঠি দিয়েছেন। রাষ্ট্রপতি সেই চিঠি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক ছ’বার রাজ্য সরকারের কাছে রাজ্যের পরিস্থিতি নিয়ে রিপোর্ট চেয়েছে। ছ’বারই নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সেই রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। কিন্তু রাজ্যের মুখ্যসচিব এক বারও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিবের চিঠির জবাব দেননি। অম্বিকেশদের সমর্থন জানিয়ে সীতারাম-প্রদীপ ভট্টাচার্যেরা জানান, রাজ্যে মানুষের মৌলিক অধিকার, ব্যক্তি স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ হচ্ছে। পুরো প্রশাসনের রাজনীতিকরণ করে ফেলা হয়েছে। খুনিরা যাতে বেকসুর খালাস পেয়ে যান, পুলিশ সেই ব্যবস্থা করছে।
সিপিএম-কংগ্রেসের এই ‘যৌথ উদ্যোগ’কে কটাক্ষ করে তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েনের বক্তব্য, ‘‘সবাই জানে পশ্চিমবঙ্গে যৌথ উদ্যোগ চালাত সিপিএম-কংগ্রেস। ওরা রাজনৈতিক ভাবে দেউলিয়া হয়ে গিয়েছে। তাই মানুষও মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন।’’