(বাঁ দিকে) সিপিএমের বিক্ষোভ। খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষ (ডান দিকে)। —নিজস্ব চিত্র।
সোমবার মির্জা গালিব স্ট্রিটে খাদ্য ভবনের সামনে খাদ্য দুর্নীতি নিয়ে বিক্ষোভ কর্মসূচির ডাক দিয়েছিল কলকাতা জেলা সিপিএম। প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে রেশন দুর্নীতিতে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা গ্রেফতার করার পরেই সোমবারের এই কর্মসূচির ডাক দিয়েছিল তারা। দুপুর ২টোয় শুরু হওয়ার কথা ছিল সেই বিক্ষোভ। জমায়েত তখন সবে শুরু হয়েছে, তার মধ্যেই দুপুর ২টো ২১ মিনিট নাগাদ খাদ্য ভবন থেকে বেরিয়ে সিপিএমের জমতে থাকা ভিড়ের পাশ দিয়ে নির্বিঘ্নে বেরিয়ে গেল বর্তমান খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষের গাড়ি। সেই গাড়িতে বসে ছিলেন স্বয়ং মন্ত্রী। কিন্তু কোনও সিপিএম নেতা-কর্মী তাঁকে চিনতেই পারলেন না। যখন সম্বিত ফিরল, তখন আর আফসোস ছাড়া কিছুই করার ছিল না সিপিএমের।
রাজনৈতিক মহলের অনেকের মতে, বিরোধী রাজনীতিতে যে ঝাঁজ নিয়ে মাঠে-ময়দানে থাকতে হয় তা যে সিপিএম দেখাতে পারছে না, সোমবারের লিন্ডসে স্ট্রিট তা আরও এক বার দেখিয়ে দিল। সিপিএমের নেতা-কর্মীরাই বলাবলি করলেন, এমন ইস্যু যদি বিরোধীনেত্রী হিসেবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পেতেন, তা হলে কী হত!
সোমবার সিপিএমের জমায়েতের স্বাস্থ্যও খুব একটা ভাল ছিল না। মেরেকেটে শ’তিনেক লোক হয়েছিল খাদ্য ভবনের সামনে। ম্যাটাডোরে অস্থায়ী মঞ্চ করে নেতারা আক্রমণাত্মক ভাষণ দিলেও তাতে কর্মীদের খুব একটা গা-গরম হয়নি। তাৎপর্যপূর্ণ বিযয় হল, আড়াই ঘণ্টার বেশি সেই বিক্ষোভ চললেও খাদ্য ভবনের মূল ফটক অবারিত করে রেখেছিল পুলিশ। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম বক্তৃতা শুরু করার পর সেই দরজা বন্ধ করে দেয় পুলিশ। সেলিমের বক্তৃতা শেষের পর তাঁর নেতৃত্বেই সিপিএম কর্মীরা খাদ্য ভবনের গেটের সামনে চলে গিয়ে বিক্ষোভ দেখান। পুলিশ সেই সময়ে মূল ফটক বন্ধ করে দেয়। সাময়িক উত্তেজনা ছ়ড়ালেও তা শান্ত হয়ে যায়Kখ
খাদ্য ভবনের বাইরে সিপিএমের বিক্ষোভ। — নিজস্ব চিত্র।
বিক্ষোভ সভায় সেলিম বলেন, ‘‘এক জন খাদককে খাদ্যমন্ত্রী করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যিনি ৭৫-২৫ শতাংশের ফর্মুলা মেনে গরিব মানুষের খাবার লুট করেছেন।’’ পাল্টা তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, ‘‘সিপিএমের উচিত ফরওয়ার্ড ব্লকের অফিস ঘেরাও করা। কারণ, ফরওয়ার্ড ব্লকের হাত ধরেই বাকিবুরের উত্থান।’’
কংগ্রেসের বিক্ষোভ। — নিজস্ব চিত্র।
সোমবার সিপিএমের আগে খাদ্য ভবনের সামনে বিক্ষোভ দেখায় দক্ষিণ কলকাতা কংগ্রেসও। প্রদীপ প্রসাদের নেতৃত্বে সেই বিক্ষোভে কার্যত ধুন্ধুমার বাধে মির্জা গালিব স্ট্রিটে। জ্যোতিপ্রিয়ের কুশপুতুলও পোড়ান কংগ্রেস কর্মীরা।