ফাইল চিত্র।
বিহারের বিধানসভা ভোটে লড়াই হয়েছিল মহাজোট গড়ে। অসমে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনেও একই ভাবে জোট গড়ে উঠছে। কিন্তু বাংলায় বাম ও কংগ্রেস জোটের বাইরে ‘স্বাধীন’ ভাবে ভোটে লড়ার কথা ঘোষণা করে দিল সিপিআই (এম-এল) লিবারেশন। প্রাথমিক ভাবে রাজ্যে ১২টি আসনের তালিকা দিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার কথা জানাল তারা। বাছাই করা কিছু আসনে তারা সিপিএম-সহ বামপন্থীদের সমর্থন করবে। বাকি আসনগুলিতে মানুষের কাছে তাদের আহ্বান থাকবে বিজেপিকে পরাস্ত করার। তার জন্য তৃণমূলকে সমর্থন করতে হলেও আপত্তি নেই।
লিবারেশনের সাধারণ সম্পাদক দীপঙ্কর ভট্টাচার্য বৃহস্পতিবার কলকাতায় বলেছেন, ‘‘বাম ও কংগ্রেস নেতারা যদি দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলতেন বিজেপিকেই তাঁরা প্রধান শত্রু বলে মনে করছেন, তা হলে আমরা এই জোটে থাকতাম। কিন্তু সেটা তাঁরা বলছেন না। আমরা তাই স্বাধীন ভাবে লড়ছি। আমরা চাই, বামপন্থীরা শক্তিশালী হোক। সেই সঙ্গেই চাই বিজেপিকে ঠেকাতে।’’ বিহারের ভোটের পরে দীপঙ্করবাবু যা বলেছিলেন, সেই ব্যাখ্যাই এ দিন ফের দিয়েছেন তিনি। তাঁদের মতে, বাকি দেশ এবং এ রাজ্যের পরিস্থিতিকে আলাদা করে দেখতে তাঁরা রাজি নন। মৌলালি যুব কেন্দ্রে ৮ ফেব্রুয়ারি নাগরিক কনভেনশনের ডাক দিয়েছে লিবারেশন, যার ভিত্তিতে দাবি-সনদ তৈরি করবে তারা।
বামফ্রন্ট ও সহযোগী মিলে ১৬ দলের মধ্যে আছে লিবারেশন। তাদের জন্য আসন ছাড়তে হবে ধরেই কংগ্রেসের সঙ্গে আলোচনা চালাচ্ছিলেন বিমান বসুরা। কিন্তু লিবারেশনের ঘোষণার পরে সেই অবকাশ আর থাকল না। বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমানবাবু অবশ্য এ দিনও বলেছেন, ‘‘আমরা বিজেপি-কে যে কোনও দিকের বিচারে প্রধান শত্রু হিসেবেই বিবেচনা করি। এই প্রধান শত্রুকে পরাজিত করার পাশাপাশি এ রাজ্যে তৃণমূলকেও হারাতে হবে। তাই তৃণমূল ও বিজেপি বিরোধী যারাই এই সংগ্রামে যুক্ত হতে চায়, তাদের সঙ্গে বোঝাপড়ার ভিত্তিতে বিধানসভা নির্বাচনে অগ্রসর হব।’’ আলিমুদ্দিনে এ দিন বামফ্রন্ট ও সহযোগী দলগুলির বৈঠকে লিবারেশন ছিল না। পিডিএস-ও জানিয়েছে, শীঘ্রই তাদের চূড়ান্ত অবস্থান বিমানবাবুদের জানিয়ে দেবে।
বাম শরিক ও সহযোগী ১৬ দলের তালিকা থেকে এ দিনই একটি কমে গিয়েছে লোকতান্ত্রিক জনতা দলের (এলজেডি) রাজ্য শাখা শরদ পওয়ারের এনসিপি-র সঙ্গে মিশে যাওয়ায়। কলকাতা প্রেস ক্লাবে এনসিপি-র রাজ্য সভাপতি প্রবোধ সিংহ এবং এলজেডি-র অমিতাভ দত্ত সংযুক্তির ঘোষণা করেছেন। রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী প্রবোধবাবু বলেন, ‘‘পুরনো সমাজবাদীরা মিলে যাওয়ার চেষ্টা করছি। গণতান্ত্রিক ও ধর্মনিরপেক্ষ ঐক্য গড়ার ডাক দিয়ে বামেদের সঙ্গী হয়েই ভোটে লড়ব।’’