৩০ মার্চ পাওয়া কুণালের চিঠি প্রসঙ্গে শুক্রবার এক সাংবাদিক বৈঠকে কথা বলেন সেলিম। ফাইল চিত্র।
কুণাল ঘোষ মানহানি মামলা করার নোটিস দিলেও ক্ষমা চাইবে না সিপিএম। শুক্রবার বিষয়টি এক রকম স্পষ্ট করে দিলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। বিষয়টিকে তাঁরা মোটেই গুরুত্ব দিচ্ছেন না বুঝিয়ে সেলিম বলেছেন, ‘‘ও সব মামলার হুমকি বহু বার শুনেছি। ওতে কিচ্ছু হয় না। তাই এ নিয়ে কথা বলারই প্রয়োজন মনে করছি না।’’
তৃণমূল মুখপাত্র কুণালকে ‘টেস্ট টিউব বেবি’ বলে অপমান করার অভিযোগে কুণালের আইনজীবীর চিঠি এসেছিল বাম নেতা শতরূপ ঘোষের কাছে। কারণ তিনিই ওই মন্তব্য করেছিলেন। তবে একই সঙ্গে আইনি চিঠি পাঠানো হয়েছিল বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু এবং মহম্মদ সেলিমকেও। চিঠিতে বলা হয়েছিল, তৃণমূল মুখপাত্র এবং তাঁর পরিবারকে অপমান করার ঘটনায় প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে বামনেতাদের। তা না হলে মানহানির মামলা করা হবে তাঁদের বিরুদ্ধে। গত ৩০ মার্চ পাওয়া সেই চিঠি প্রসঙ্গেই শুক্রবার এক সাংবাদিক বৈঠকে সেলিম বলেছেন, ‘‘এগুলো সব মিথ্যে কথা, কোনও মামলা হয়নি। হবেও না। এমন বহু মামলার হুমকি শুনেছি। কখনওই মামলা হতে দেখেনি।’’ এমনকি, পুরনো আইনি নোটিসের উদাহরণ টেনেও সেলিম দেখিয়েছেন, তৃণমূলের তরফে সিপিএমকে অনেক বার মামলার চিঠি পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু সে সব মামলা কোনও দিনই হয়নি। কুণালকে ইঙ্গিত করে সেলিম বলেছেন, ‘‘সেই সব মামলা ওঁর গুরুদেব, ওঁর নিয়োগকর্তারা করবেন বলেছিলেন। সে সব মামলাকে পাত্তা দিইনি আর এখন ওঁর মামলা নিয়ে কথা বলব!’’
কারা মামলার হুমকি দিয়েছিলেন, তার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে তৃণমূলের জন্মলগ্নের কথা টেনে এনেছেন সেলিম। বলেছেন, ‘‘১৯৯৯ সালে বিজেপি আর তৃণমূল একসঙ্গে লড়েছিল। তখন অজিত পাঁজার বিরুদ্ধে ভোটে দাঁড়িয়েছিলাম। বলেছিলাম, বিজেপি আর তৃণমূল একসঙ্গে আরএসএসের যে নীতি সেই নীতি বাংলায় ছড়ানোর চেষ্টা করছে। শুনে উনি আমাকে ২ কোটি টাকার মানহানি মামলার নোটিস পাঠিয়েছিলেন। অজিত আইনজীবী ছিলেন। আমি ওঁর পাঠানো চিঠিটা দেখে বলেছিলাম, কাগজটা টয়লেট পেপার হওয়ারও যোগ্য নয়। সেই মামলা কখনও হয়নি।’’ ব্রিগেডে তৃণমূল নেতাদের নাম করে চোর বলেছিলেন বলেও জানিয়েছেন সেলিম। বলেছেন, ‘‘সেই ঘটনায় এক সাংবাদিক আমাকে বলেছিল, মুকুল রায় আপনার বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করবেন বলছেন। আমি তখন বলেছিলাম, মানই নেই তার মানহানি। সেই মামলাও আজ পর্যন্ত হয়নি।’’ এমনকি, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছ থেকেও মামলার হুমকি পেয়েছেন জানিয়ে সেলিম বলেছেন, ‘‘ওঁর আইনজীবী ২৭২ পাতার একটা দস্তাবেজ পাঠিয়ে বলেছিলেন, অভিষেককে চোর বলা যাবে না। কয়লা পাচারের বন্ধু বলা যাবে না। সেই মামলাও হয়নি।’’ এর পরেই কুণালের মামলা প্রসঙ্গে সেলিম বলেন, ‘‘এ সব তো ওঁর গুরুদেবদের কথা বললাম, ওঁর নিয়োগকর্তাদের কথা বললাম। ওঁর মামলা নিয়েও কথা বলতে হবে!’’