সাংগঠনিক কাজ এগিয়ে রাখার বার্তা দেওয়া হয়েছে রাজ্য কমিটির বৈঠকে। প্রতীকী চিত্র।
নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী হলে রাজ্যে বছরখানেক পরে পঞ্চায়েত ভোট। সেই নির্বাচনকে মাথায় রেখে এখন থেকে প্রস্তুতি শুরু করতে চাইছে সিপিএম। এক দিকে তৃণমূল স্তর থেকে আন্দোলনকে জোরালো করা এবং তার পাশাপাশি সাংগঠনিক কাজ এগিয়ে রাখার জন্য বার্তা দেওয়া হল দলের রাজ্য কমিটির বৈঠকে।
সিপিএমের নতুন রাজ্য কমিটির প্রথম পূর্ণাঙ্গ বৈঠক শেষ হয়েছে শুক্রবার। বৈঠকের দ্বিতীয় তথা শেষ দিনে দলের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম তাঁর জবাবি ভাষণে বলেছেন, পঞ্চায়েত ভোটের জন্য তৈরি হতে হবে এখন থেকেই। রাজ্য স্তরের বিষয়গুলির পাশাপাশি স্থানীয় এলাকাভিত্তিক দাবি নিয়ে আন্দোলন জোরালো করার ডাক দিয়েছেন তিনি। বুথ কমিটি গড়ার কাজ, কে কোথায় সম্ভাব্য প্রার্থী হতে পারেন, তার ঝাড়াই-বাছাইয়ের প্রক্রিয়া শুরু করার কথাও বলা হয়েছে। পুরভোটের সাম্প্রতিক অভিজ্ঞতা মাথায় রেখে পঞ্চায়েত নির্বাচন সুষ্ঠু ও অবাধ হবে বলে মনে করছেন না সিপিএম নেতৃত্ব। কিন্তু সেই নির্বাচনের জন্য নিজেদের ঘর গোছানোর কাজ তাঁরা শুরু করে দিতে চাইছেন।
বৈঠকের পরেও এ দিন সেলিম বলেছেন, ‘‘এক বছর পরে পঞ্চায়েত নির্বাচন। লুটেরাদের পঞ্চায়েতকে আবার মানুষের পঞ্চায়েত করে তুলতে হবে। গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে শুরু করে গ্রামসভা, যে পঞ্চায়েত ব্যবস্থা বামপন্থীরা গড়ে তুলেছিল, তা এখন লুটেরাদের হাতে চলে গিয়েছে। একেবারে গ্রাম স্তর থেকে আমাদের আন্দোলন, লড়াই চলবে। বিশেষ করে, যুব প্রজন্মের কাছে আমরা আহ্বান জানাচ্ছি, মানুষের পঞ্চায়েত ফিরিয়ে আনতে মানুষের জোট গড়ে তুলুন।’’ সারদার মতো ভুঁইফোড় অর্থলগ্নি সংস্থার প্রতারণা, সরকারি প্রকল্পের সুবিধা ঠিকমতো মানুষের কাছে না পৌঁছনো, পঞ্চায়েতের বিভিন্ন স্তরে দুর্নীতি এবং গ্রামে গ্রামে শাসক দলের নেতৃত্বের ফুলে-ফেঁপে ওঠা— এ সবই আন্দোলনের বিষয় হবে। তারই সঙ্গে বিভিন্ন ঘটনাকেন্দ্রিক প্রতিবাদ ও আন্দোলনও আরও জোরালো ভাবে চালানো হবে বলে বুঝিয়েছেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক।
রাজ্য কমিটির বৈঠকের শেয দিনে বক্তা ছিলেন দলের বিভিন্ন গণ-ফ্রন্টের প্রতিনিধি এবং জেলার বাইরে ‘স্বাধীন’ সদস্যেরা। ছাত্র, যুবদের মতো কিছু ফ্রন্টের নেতারা বৈঠকে জানিয়েছেন, বিভিন্ন ঘটনায় প্রতিবাদের ডাক দিয়ে কলকাতায় পথে নেমে পড়তে বিশেষ অসুবিধা হচ্ছে না। সাড়াও মিলছে ভালই। কিন্তু সব জেলায় পরিস্থিতি এখনও তেমন নয়। জেলা এবং আরও নিচু তলায় সংগঠনকে গুছিয়ে আন্দোলনের কর্মসূচিকে সংহত করার কথা বলা হয়েছে বৈঠকে। পরিবেশ সংক্রান্ত বিষয়গুলি নিয়ে রাজ্য স্তরে একটি কনভেনশন করার পরিকল্পনাও উঠে এসেছে রাজ্য কমিটিতে।